সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আমজনতার নিরাপত্তা এবং প্রাণী কল্যাণের ভারসাম্য রেখে পথকুকুর (Stray Dogs) নিয়ে নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। যা নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই সুপ্রিম নির্দেশিকার বাস্তবায়নে দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে উদ্যোগী হল রাজস্থান। রাজ্য প্রশাসনের তরফে এক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এবার সব পৌরনিগম, কাউন্সিল এবং পৌরসভাগুলি মালিকানাহীন পথপ্রাণীদের (যার মধ্যে কুকুরও রয়েছে) ক্ষেত্রে জন্ম নিয়ন্ত্রণ আইন ২০২৩ কঠোরভাবে মেনে চলবে। এবার থেকে এই আইন রাজ্যজুড়ে বাধ্যতামূলক হবে।
প্রশাসনের নির্দেশকা অনুযায়ী, এখন থেকে প্রতিটি ওয়ার্ডে কুকুরদের খাওয়ানোর স্থান চিহ্নিত করা হবে। পাশাপাশি পৌরসভাগুলিকে আবাসিক কল্যাণ সমিতি এবং প্রাণী কল্যাণ সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে বলা হয়েছে। এমনকী জলাতঙ্কের ঝুঁকি রয়েছে এমন পথকুকুরদের ক্ষেত্রেও খাওয়ানোর জায়গাগুলিতে খাবার এবং জলের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। রাজস্থানের এক সরকারি আধিকারিক রবি জৈনের বক্তব্য, "সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকার পর আমজনতার নিরাপত্তা এবং প্রাণী কল্যাণের ভারসাম্য বজায় রেখে রাজস্থান দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে এই ধরনের ব্যাপক আদেশ জারি করেছে।"
জানা গিয়েছে, সমস্ত পৌর সংস্থাকে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে রাজ্য সরকারের কাছে তাদের সম্মতিপত্র পাঠাতে হবে। আদেশ অনুসারে, রাজস্থানের প্রতিটি শহরে জীবাণুমুক্তকরণ, জলাতঙ্ক টিকাকরণ এবং কৃমিনাশক কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। পথকুকুরদের চিকিৎসা করা হবে, জীবাণুমুক্ত করা হবে এবং তারপর একই এলাকায় ছেড়ে দেওয়া হবে। কাজে স্বচ্ছতার কথা মাথায় রেখে অপারেটিং থিয়েটার এবং এবিসি সেন্টারগুলিতে (আশ্রয়কেন্দ্র) সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। সরকারি নির্দেশিকায় আরও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রশিক্ষিত দলকেই জাল দিয়ে অথবা হাতে কুকুর ধরার অনুমতি দেওয়া হবে। ছয় মাসের কম বয়সি কোনও কুকুরকে জীবাণুমুক্ত করা হবে না।
প্রসঙ্গত, পথকুকুরদের বিষয়ে প্রাথমিক রায় সংশোধন করেছে সুপ্রিম কোর্ট। সব পথকুকুরকে রাস্তা থেকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হবে না। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, টিকা দেওয়ার পরে পথকুকুরদের পুরনো এলাকায় ফেরত পাঠানো যেতে পারে। বিচারপতি বিক্রম নাথ, সন্দীপ মেহতা এবং এনভি আঞ্জারিয়ার তিন বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, আক্রমণাত্মক আচরণ রয়েছে বা জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত কুকুরদের টিকা দেওয়া হবে। যত্রতত্র কুকুরদের খাওয়ানোর উপরেও বিধিনিষেধ আরোপ করেছে শীর্ষ আদালত। পথকুকুরদের খাওয়ানোর জন্য নির্দিষ্ট জায়গা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১ আগস্টের আদেশ পুনর্ব্যক্ত করে আদালত জানিয়েছে, কোনও ব্যক্তি বা সংস্থা পৌর কর্তৃপক্ষকে কুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিতে বাধা দিতে পারবে না।
