সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য ‘বেটি বাঁচা, বেটি পড়াও’ প্রকল্পের কথা বলছেন, তখনই উলটো ছবি দেখা গেল বিজেপিশাসিত রাজস্থানে। কুড়িয়ে পাওয়া এক শিশুকন্যাকে মানুষ করার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে কোনও আর্থিক সাহায্য পেলেন না ডোলপুরের এক দম্পতি। উলটে শিশুকন্যাটিকে ফিরিয়ে না দিলে মামলা করার হুমকি দেওয়া হল তাঁদের।
[প্রতিবাদের রূপ বদলে হিংসাত্মক আন্দোলন, BHU-তে আহত বহু]
ঘরে সাত-সাতটি পুত্রসন্তান। কিন্তু, একেবারেই খুশি ছিলেন না রাজস্থানের ডোলপুরের জেলার সাইমার কা পুরা গ্রামের বাসিন্দা লীলাধর কুশওয়া ও তাঁর স্ত্রী সুখদেবী। মনেপ্রাণে একটি কন্যাসন্তান চাইছিলেন তাঁরা। গত ১৪ সেপ্টেম্বর সপ্তম পুত্রসন্তানের জন্ম দেন সুখদেবী। আর ঘটনাচক্রে তার ঠিক দু’দিন পর গ্রামে তাঁদের খামারের কাছ থেকে একটি শিশুকন্যাকে কুড়িয়ে পান ওই দম্পতি। অপ্রত্যাশিতভাবে একটি কন্যাসন্তান পেয়ে খুশি যেন আর বাঁধ মানছিল না। শিশুকন্যাটিকে মানুষ করার জন্য আর্থিক সাহায্য চেয়ে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন লীলাধর ও তাঁর স্ত্রী। কিন্তু, আর্থিক সাহায্য তো মেলেইনি, উলটে শিশুকন্যাটিকে ফিরিয়ে দিতে বলেছে রাজস্থানের চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। কমিটি সাফ জানিয়ে দিয়েছে, লীলাধর ও তাঁর স্ত্রী যদি শিশুকন্যাকে ফিরিয়ে না দেন, তাহলে তাঁদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হবে। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারম্যান নরেশ শর্মার সাফাই, কোনও শিশুকে দত্তক নেওয়ার আইনি পদ্ধতি আছে। চাইলেই কোনও দম্পত্তি পরিত্যক্ত শিশুকে নিজেদের কাছে রেখে দিতে পারেন না। তিনি জানিয়েছেন, আগামী দু’মাস ধরে ওই শিশুটির প্রকৃত বাবা-মায়ের সন্ধান করবে পুলিশ। শিশুটি যদি অসুস্থ হয়, তাহলে তার চিকিৎসাও হবে। দু’মাস পরেও যদি শিশুটির প্রকৃত বাবা-মায়ের সন্ধান পাওয়া না যায়, তাহলে সেন্ট্রাল অ্যাডপটেশন অথরিটি বা CARA-র মাধ্যমে শিশুটিকে দত্তক নেওয়া যাবে।
[‘প্রাচীন ভারতে দুর্গা ছিলেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী, লক্ষ্মী অর্থমন্ত্রী’]
রাজস্থানের ঢোলপুর জেলায় সাইমার কা পুরা গ্রামে এখনও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। গ্রামে একটি হাসপাতাল পর্যন্ত নেই। সুখদেবীর সাতটি সন্তানেরই জন্ম হয়েছে বাড়িতে। তাই সরকারি নিয়ম-কানুন নিয়ে মাথাব্যথা নেই লীলাধর ও তাঁর স্ত্রীর। ওই দম্পতি জানিয়েছেন, প্রথম থেকে কন্যাসন্তানই চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু, সাতবারই পুত্রসন্তান হয়। তাই তাঁরা ঠিক করেছিলেন, একটি কন্যাসন্তান দত্তক নেবেন। ভগবান তাঁদের ইচ্ছাপূরণ করেছেন। তাই কুড়িয়ে পাওয়া কন্যাসন্তানটি ফিরিয়ে দিতে নারাজ লীলাধর ও তাঁর স্ত্রী। বস্তুত, শিশুকন্যাটি কীভাবে নিজেদের কাছে রাখতে পারবেন, তা নিয়ে এখন আইনজীবীর পরামর্শ নিচ্ছেন ওই দম্পতি।
[আদাতেই শরীরে ঢুকছে অ্যাসিড, কেনা কতটা বিপজ্জনক?]
The post অনাথ শিশুকন্যার পাশে দম্পতি, বিমুখ প্রশাসন appeared first on Sangbad Pratidin.