সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অর্থনীতিবিদদের উদ্বেগ বাড়িয়ে টাকার দামে বেনজির পতন। ভারতীয় অর্থনীতির ইতিহাসে এই প্রথম এক ডলারের দাম পৌঁছেছে ৮০ টাকায়। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আমেরিকার মুদ্রাটি বেড়েছে ১৬ পয়সা, থেমেছে ৭৯.৯৮ টাকায়।
ভারতীয় অর্থনীতির উদ্বেগ বাড়িয়ে মঙ্গলবার ১ মার্কিন ডলারের দাম দাঁড়ায় ৮০.০৬ টাকা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য আমেরিকার মুদ্রাটি বেড়েছে ১৬ পয়সা, থেমেছে ৭৯.৯৮ টাকায়। কিন্তু কেন এভাবে পড়ছে টাকার দাম? সোমবার সংসদে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ জানিয়েছেন, অপরিশোধিত তেলের ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধি, বিশ্বব্যাপী আর্থির মন্দা, বিদেশি বিনিয়োগের অভাবের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক কারণেই টাকার মূল্যে পতন।
[আরও পড়ুন: বিমাতৃসুলভ আচরণ, বাংলা-সহ অবিজেপি রাজ্যগুলির বিপুল অঙ্কের GST ঘাটতি মেটায়নি কেন্দ্র!]
বেশ কয়েকদিন ধরেই টাকার দামে পতন অব্যাহত। গত ৮ বছরে ভারতীয় টাকার দাম পড়েছে ২৫ শতাংশ। ২০১৪ সালে ভারতীয় মুদ্রায় (Indian Rupee) এক ডলারের দাম যা ছিল, ২০২২ সালে সেই দাম বেড়েছে অন্তত ১৬ টাকা ৮ পয়সা। সোমবার বাদল অধিবেশনের শুরুতেই লোকসভায় লিখিত প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য দিল কেন্দ্র সরকার।
রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্ট বলছে, ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর এক ডলারের (Dollar) দাম ছিল ৬৩ টাকা ৩৩ পয়সা। ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর এই দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৬৯ টাকা ৭৯ পয়সা। ২০১৯ সালের শেষদিনে দেখা যায় ডলারের নিরিখে ভারতীয় মুদ্রার দাম ৭০-র গণ্ডি ছাড়ায়। করোনা কালের পর এই বিনিময় মূল্য সত্তর টাকার আশপাশে ছিল। কিন্তু কয়েক মাস ধরেই মন্দা ভারতীয় মুদ্রা বাজারে। ক্রমশ পড়ছে ভারতীয় মুদ্রার দাম। এই বিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, “অর্থনীতিকে কেন্দ্র সরকার সর্বনাশের জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। যে হারে দাম বারছে তাতে সাধারণ মানুষের মাথায় হাত পড়েছে।”
উল্লেখ্য, করোনা কালে বিশ্বের সব দেশের অর্থনীতিকেই সংকটের মুখে পড়তে হয়েছে। মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম লাফিয়ে বেড়েছে। সেই আঘাত সামলে উঠতে না উঠতেই গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইউরোপ ও আমেরিকায় অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে। আর এরই প্রভাবে আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধি হয়েছে আকাশছোঁয়া। তা রুখতে আগ্রাসী পদক্ষেপ করছে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ। আর এর অনেকটাই প্রভাব পড়ছে ভারতের বাজার ও টাকার দামের উপর।