সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: কর্ণাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব কি নিষিদ্ধই থাকবে? বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টেও মিলল না উত্তর। এদিন অত্যন্ত স্পর্শকাতর মামলাটির শুনানি শেষে ‘স্প্লিট ভারডিক্ট’ দেয় বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা ও সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চ। অর্থাৎ, বিচারপতিদের একজন কর্ণাটক হাই কোর্টের রায় বহাল রাখলেও অন্যজন মামলাকারীদের পক্ষেই রায় দেন।
এদিন মামলাকারীদের দাবিকে মান্যতা দিয়ে কর্ণাটক হাই কোর্টের (Karnataka High Court) রায় খারিজ করে দেন বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া। তিনি অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলেন, “এটা একেবারেই ইচ্ছার বিষয়। এর চাইতে কম বা বেশি কিছুই নয়।” এদিকে, কর্ণাটক হাই কোর্টের রায় বহাল রেখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা। দুই বিচারপতির মতের মিল না হওয়ায় এবার মামলাটি প্রধান বিচারপতি ইউ ইউ ললিতের সামনে পেশ হবে। সেখান থেকে বৃহত্তর বেঞ্চে সেটিকে পাঠানো হবে বলে খবর। গত দশ দিন ধরে বিচারপতি হেমন্ত গুপ্তা এবং বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়ার বেঞ্চেই এই আবেদনের শুনানি হয়েছে। ২২ সেপ্টেম্বর এ বিষয়ে নিজেদের রায় সংরক্ষিত রাখে এই বেঞ্চ।
[আরও পড়ুন: নোটবন্দি কি আদৌ প্রাসঙ্গিক? কেন্দ্রের কাছে হলফনামা তলব সুপ্রিম কোর্টের]
উল্লেখ্য, গত ৫ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশিকা জারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল কর্ণাটক (Karnataka) সরকার। তার পর থেকেই সেরাজ্যে হিজাব ইস্যুতে বিক্ষোভ শুরু হয়। বিশেষ করে উদুপি জেলায় বিক্ষোভের জেরে স্কুল-কলেজগুলি রীতিমতো রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করেছিল। লাগাতার প্রতিবাদের জেরে বেশ কয়েকদিন স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখতে হয় কর্ণাটক সরকারকে। তারপরই মামলা গড়ায় আদালতে।
গত মার্চের ১৫ তারিখ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘হিজাব পরার অধিকার’ নিয়ে ঐতিহাসিক রায় দেয় কর্ণাটক হাই কোর্ট। আদালত স্পষ্ট জানায়, ইসলাম ধর্মাচরণে হিজাব (Hijab) অপরিহার্য নয়। শিক্ষাঙ্গনে হিজাব নিষিদ্ধ করার বিরুদ্ধে যে সমস্ত আবেদন জমা পড়েছিল, তা খারিজ করে দেয় আদালত। তারপরই এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক পিটিশন জমা পড়ে। এই বিষয়ে একটি পিটিশনের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, হিজাব পরিধানের সঙ্গে পরীক্ষার কোনও সম্পর্ক নেই। ফলে এদিনের শুনানির দিকে কার্যত গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল।