সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: এসএসসি-তে সুপারনিউমেরারি পোস্ট বা অতিরিক্ত শূন্যপদ তৈরি সংক্রান্ত মামলায় বড়সড় স্বস্তি রাজ্য মন্ত্রিসভার। সিবিআই তদন্ত নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দিল শীর্ষ আদালত। মঙ্গলবার দিনের শুরুতেই এই মামলাটি প্রধান বিচারপতির এজলাসে ওঠে শুনানির জন্য। দু'পক্ষের সওয়াল-জবাব শোনার পর প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে সিবিআই তদন্ত করা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত। এছাড়া এ ধরনের শূন্যপদ তৈরি মোটেও বেআইনি নয়। রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষে তা করতেই পারে এসএসসি। তাই এতে কোনও তদন্তের দরকার নেই। ফলত রাজ্য মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত নিয়ে হস্তক্ষেপ করছে না শীর্ষ আদালত।

স্কুল সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য অতিরিক্ত শূ্ন্যপদ তৈরির অভিযোগ ওঠে, যা বেআইনি বলে দাবি করে আইনজীবীদের একাংশ আদালতের দ্বারস্থ হয়। কলকাতা হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তাঁর অভিযোগ ছিল, 'অযোগ্য'দের চাকরি বাঁচাতে ওই শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল। শুনানিতে জানানো হয়, রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদন সাপেক্ষেই ৬৮৬১টি সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করে নিয়োগ হয়েছিল। তাতে হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় রাজ্য মন্ত্রিসভার বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন। তা চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে যায় রাজ্য।
২০২৪ সালের এপ্রিলে ডিভিশন বেঞ্চও জানান, নিয়ম বহির্ভূতভাবে সুপারনিউমেরারি পোস্ট তৈরি করা হয়েছিল, তা ঠিক হয়নি। সিবিআই চাইলে মন্ত্রিসভার সদস্যদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হলে হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ জারি করেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ। আর মঙ্গলবারের শুনানিতে হাই কোর্টের সেই সিবিআই তদন্তের নির্দেশই খারিজ করে দিল প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার বেঞ্চ।
এদিনের সওয়াল-জবাবেও মামলাকারীরা দাবি করেন, বেআইনিভাবে 'অযোগ্য'দের চাকরি বজায় রাখতে শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, আইন বহির্ভূত কিছু হয়নি। এটা এসএসসি করতেই পারে। আর তাছাড়া সেসময় রাজ্য মন্ত্রিসভার অনুমোদনক্রমে, তৎকালীন রাজ্যপালের পরামর্শ মেনে শূন্যপদ তৈরি হয়েছিল। তাই সুপ্রিম কোর্ট এতে হস্তক্ষেপ করছে না।
এনিয়ে তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের কটাক্ষ, ''রামবামের চক্রান্ত ব্যর্থ হয়েছে। এই সিপিএম, বিজেপি, কংগ্রেসের একাংশ যে অপপ্রচার চালাচ্ছিল, তা ধুয়েমুছে দুরমুশ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। আমরা চাকরি দেওয়ার রাজনীতি করি, ওরা চাকরি খাওয়ার রাজনীতি করে।''