সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদী হামলায় জঙ্গিদের সাহায্যকারী সন্দেহভাজন এক যুবকের দেহ উদ্ধার। রবিবার সকালে কুলগামের অহরবল এলাকায় নদী থেকে উদ্ধার হল ইমতিয়াজ আহমেদ মাগরে নামে ২৩ বছর বয়সি ওই যুবকের দেহ। এই ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ তুলেছে যুবকের পরিবার। বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। পালটা পুলিশের দাবি, পালাতে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলেন ওই যুবক যার জেরেই মৃত্যু হয়েছে। নিজেদের দাবির সপক্ষে এক ভিডিও প্রকাশ্যে এনেছে পুলিশ। ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভূস্বর্গের রাজনীতি।
২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা ও ২৬ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গোটা কাশ্মীর জুড়ে তল্লাশি অভিযানে নেমেছে সেনা ও পুলিশ। জঙ্গিদের সাহায্যের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বহু সন্দেহভাজনকে চলছে জিজ্ঞাসাবাদও। পুলিশের সন্দেহের তালিকায় থাকা ইমতিয়াজকেও গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ ছিল, হামলাকারী জঙ্গিদের পহেলগাঁওয়ে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল এই ইমতিয়াজ। পুলিশের দাবি, জেরায় জঙ্গিদের সাহায্যের কথা স্বীকার করেছিল অভিযুক্ত। জঙ্গলের মধ্যে জঙ্গিরা কোথায় ঘাঁটি গেড়েছিল সেই ঠিকানা দেখতে ইমতিয়াজকে সঙ্গে নিয়ে রওনা দেয় নিরাপত্তাবাহিনী। সেই সময় পুলিশের হাত ছাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করে অভিযুক্ত। পুলিশের দাবি, নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে সন্দেহভাজন ওই লস্কর জঙ্গি। ইমতিয়াজের নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজও প্রকাশ্যে আনা হয়েছে পুলিশের তরফে।
এদিকে ইমতিয়াজের মৃত্যুর ঘটনায় রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে জম্মু ও কাশ্মীরের রাজনীতি। মন্ত্রী সাকিনা ইতু ইমতিয়াজের মৃত্যুর বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, 'এই মৃত্যু সম্পর্কে পুলিশের রেকর্ডে কোনও তথ্য নেই। পহেলগাঁওয়ে যে ঘটনা ঘটেছে তার জন্য আমরা দুঃখিত। কিন্তু এই ঘটনায় উপত্যকাজুড়ে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহার কাছে অনুরোধ করব বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হোক যাতে সত্য প্রকাশ্যে আসে। এবং তদন্তের নামে নিরপরাধ মানুষের হয়রানি বা কোনও ক্ষতি যাতে না হয় তা দেখার নির্দেশ দেওয়া হোক প্রশাসনকে।'
জম্মু ও কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এবং পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতিও বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছেন। এই ইস্যুতে এক্স হ্যান্ডেলে তিনি লেখেন, কুলগামে ইমতিয়াজ নামে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয়দের দাবি, দু'দিন আগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই যুবককে আটক করেছিল পুলিশ। এরপর তাঁর মৃতদেহ নদী থেকে উদ্ধার হল। এই ঘটনা গুরুতর প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলা উপত্যকার শান্তি, পর্যটন ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের সুপরিকল্পিত প্রচেষ্টা। তবে এই ঘটনার ফলে উপত্যকার মানুষকে নির্বিচারে গ্রেপ্তার, বাড়ি ভাঙা ও সাধারণ নাগরিকদের এভাবে টার্গেট করা হয়, তাহলে বলতে হবে অপরাধীরা তাদের লক্ষ্যে সফল হয়েছে।
