সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় পণ্যের উপরে ২৬ শতাংশ শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা আজ বুধবার থেকে কার্যকর হয়ে গিয়েছে। ট্রাম্পের 'শুল্কবাণে' বিশ্বজুড়ে বাণিজ্যযুদ্ধের মেঘ ঘনিয়েছে। প্রভাব পড়েছে ভারতের শেয়ার বাজারেও। এই পরিস্থিতিতে আজই জরুরী বৈঠকে বসতে চলছে নরেন্দ্র মোদির মন্ত্রিসভা। ট্রাম্পের নয়া শুল্কে ভারতের বাজারে যে ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে তার সমাধানের জন্য়ই এই বৈঠকে আলোচনা হবে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কবাণ আছড়ে পড়ার পরে অন্যান্য দেশের মতোই ধস নেমেছে ভারতের শেয়ার বাজারেও। গত সোমবার দিনের শেষে দেখা যায়, ২.৯৫ শতাংশ পড়েছে সেনসেক্স। এমনকি দুপুরের দিকে প্রায় চার হাজার পয়েন্ট পড়ে গিয়েছিল সূচক। তবে সোমবারের রক্তক্ষরণ হলেও পরের দিন মঙ্গলবার ঘুরে দাঁড়ায় বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ। বাজার খুলতেই একলাফে হাজার পয়েন্ট বেড়ে সেনসেক্স পৌঁছে যায় ৭৪ হাজারের ঘরে। স্বমহিমায় ফেরে নিফটিও। ২২ হাজার ৫০০ পেরিয়ে যায় নিফটির সূচক। কিন্তু একদিনের মধ্যে আজ ফের পতন শেয়ার বাজারের সূচকে। প্রায় ৫০০ পয়েন্টের নিচে নেমেছে সেনসেক্স। নিফটিও প্রায় ২০০ পয়েন্টের নিচে।
বাজারের এই উত্থানপতনের মধ্যেই আজ বৈঠকে বসবে মোদির মন্ত্রিসভা। ট্রাম্পের শুল্কের ইতিবাচক ও নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি সমস্যা সমধানের পথও খোঁজা হবে। এই মুহূর্তের দিল্লির জন্য স্বস্তি এটাই যে, ২৬ শতাংশ শুল্কের খাঁড়া থেকে বাদ পড়েছে বেশ কয়েকটি পণ্য। যেমন- তামা, ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়াম, সোনা ও রুপোর বাট, ওষুধ এবং ওষুধ তৈরির কাঁচামাল। বাকি সব জিনিসপত্রের উপরেই আজ থেকে এই কর কার্যকর হয়েছে। ফলে এদিনের আলোচনার পর মোদি সরকার মার্কিন পণ্যের উপর পালটা অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের পথে হাঁটে নাকি হোয়াট হাউসের সঙ্গে সমঝতার রাস্তায় যায় সেদিকেই নজর সকলের।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগেই নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কেন্দ্র সরকারি আধিকারিককে উদ্ধৃত করে একটি রিপোর্ট পেশ করে রয়টার্স। সেই রিপোর্টে বলা হয়, শুল্ক ঘোষণা করে যে এক্সিকিউটিভ অর্ডার সই করেছেন ট্রাম্প, সেই অর্ডারেরই একটি ধারাকে হাতিয়ার করতে চাইছে কেন্দ্র। শুল্ক নির্দেশিকায় ট্রাম্প বলেছিলেন, "পারস্পরিক নয় এমন বাণিজ্য ব্যবস্থা শুধরে নিতে যেসব দেশ আগ্রহী, শুল্কযুদ্ধে তাদের বিশেষ ছাড় দেওয়া হবে।" এই ধারাকে কাজে লাগিয়েই লাগিয়েই কিছুটা সমঝোতার পথে হাঁটতে চাইছে ভারত।
সরকারি আধিকারিকের মতে, এশিয়ার অন্যান্য দেশের চেয়ে ভারতে অনেক কম হারে শুল্ক চাপানো হয়েছে। আপাতত সেটাকেই ইতিবাচক দিক হিসাবে দেখতে হবে। ভারতের উপর ২৬ শতাংশ কর চাপিয়েছে আমেরিকা। কিন্তু চিন, ভিয়েতনাম এবং ইন্দোনেশিয়ার ক্ষেত্রে সেই অঙ্কটা যথাক্রমে ৩৪%, ৪৬% এবং ৩২%। পালটা মার্কিন পণ্য়ের উপরে ৩৪ শতাংশ কর চাপিয়েছে চিন। কিন্তু ভারত সেরকম কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না। মার্কিন পণ্যের উপর পালটা কর চাপানোর কোনও পরিকল্পনা নেই সরকারের। কিন্তু শেয়ার বাজারে যেভাবে প্রভাব পড়ছে তাতে শেষমেশ পদক্ষেপ করা হবে তা জানতে আগ্রহী বাণিজ্যিক মহল।