সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘অপেক্ষা করছিলাম কবে ওদের ফাঁসিতে ঝোলানোর দিনঘোষণা করবে আদালত। ওদের আর কোনও আরজি মানা হল না।’ দিল্লির পাতিয়ালা হাউস কোর্টের বিচারকের রায় শোনার পর এটাই প্রথম প্রতিক্রিয়া নির্ভয়ার মা আশা দেবী, সাত বছর ধরে যিনি অপেক্ষা করে রয়েছেন মেয়ের সঙ্গে ঘটা অন্যায়ের সুবিচারের পথ চেয়ে।
আজ বিকেল সাড়ে চারটের কিছু পরে পাতিয়ালা হাউস কোর্টের বিচারক সতীশ কুমার অরোরা নির্ভয়া গণধর্ষণকাণ্ডে চার অপরাধীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার কথা ঘোষণা করে দেন। আগামী ২২ তারিখ তাদের সাজা কার্যকর করা হবে। আদালত কক্ষে বসে একথা শোনার পর যেন নিশ্চিন্তে শ্বাস নিলেন আশা দেবী। বাইরে বেরিয়ে এসেও সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সেকথা জানিয়েছেন। বাবা বদ্রীনাথও খুশি পাতিয়ালা আদালত ধর্ষকদের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখায়। তাঁর মতে, এবার অপরাধীদের মনে ভয় জন্মাবেই।
ফাঁসি চাই, ফাঁসিই চাই। এই দাবি, স্লোগানে সেই ২০১২-এর শেষলগ্ন থেকেই সরব সাধারণ দেশবাসী। আট বছর আগে রাতের দিল্লিতে ফাঁকা বাসে প্যারামেডিক্যাল ছাত্রীকে ধর্ষণ করে নৃশংসভাবে মারধর করে রাস্তায় ফেলে রাখা হয়েছিল। তাকে সিঙ্গাপুরের হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েও শেষরক্ষা করা যায়নি। কোমা থেকে একেবারে চিরঘুমের দেশে চলে গিয়েছিল সে। আশা দেবীর লড়াই শুরু সেখান থেকেই। এত বছর ধরে সেই লড়াই চালাচ্ছে নির্ভয়ার পরিবার। বারবার দোষীদের দ্রুত ফাঁসির দাবিতে তিনি আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে। কখনও আশাহতও হয়েছে, বিচারপ্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায়।
[আরও পড়ুন: ২২ জানুয়ারি ফাঁসি দেওয়া হবে নির্ভয়ার ধর্ষকদের]
সম্প্রতি তেলঙ্গানায় পশু চিকিৎসককে গণধর্ষণের পর পুড়িয়ে খুনের ঘটনায় অভিযুক্তরা পুলিশের এনকাউন্টারে খতম হওয়ায় খুশি হয়েছিলেন তিনি। সেকথা প্রকাশ করে বলেছিলেন, “অন্তত একজন কন্যা সুবিচার পেল। আমি পুলিশকে ধন্যবাদ জানাব। অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে আমি ৭ বছর ধরে চিত্কার করে যাচ্ছি। বলছি, প্রয়োজনে সমাজের স্বার্থে আইন ভাঙুন। এখনও আদালতে চক্কর কেটে যাচ্ছি। আবারও একটা ১৩ ডিসেম্বর আসছে। আবার আদালতে যেতে হবে। তরুণী চিকিৎসকের বাবা-মা নিশ্চয়ই খুব স্বস্তি পেয়েছেন। তাঁদের মেয়ে সুবিচার পেল। এমন নৃশংস অপরাধীরা এবার কিছুটা হলেও ভয় পাবে।”
আদালতে ঘুরে ঘুরেও তাঁদের কন্যার সুবিচার পাওয়াটা যেন কিছুতেই কার্যকরী হচ্ছে না, আশা দেবীর এই আক্ষেপ ঘুচে গেল আজ। ২২ তারিখ নির্ভয়ার ৪ ধর্ষকের মৃত্যুর পরোয়ানা দিয়েছে আদালত। যে যন্ত্রণায় তাঁদের মেয়েকে মৃত্যুর দুয়ারে পৌঁছতে হয়েছিল, সেভাবেই অপরাধীদের জীবনেও অন্তিম মুহূর্ত ঘনিয়ে আসুক, এটাই চান মা।
[আরও পড়ুন: ‘ফ্রি কাশ্মীর’ পোস্টার ঘিরে তুঙ্গে বিতর্ক, ক্ষমা চাইলেন প্রতিবাদী মহিলা]
এদিকে, এই ৪ জনের ফাঁসি দেওয়ার কাজটি যাঁর করার কথা,মিরাটের সেই পবন জানিয়েছেন যে এখনও তাঁর কাছে এই সংক্রান্ত কোনও খবর পৌঁছয়নি। নির্দেশ পাওয়ামাত্রই তিনি কাজের প্রস্তুতি শুরু করবেন। এও জানালেন যে ওদের শাস্তি দিতে পারলে তাঁর মন শান্তি পাবে।
The post ‘ফাঁসির দিন ঘোষণার অপেক্ষাতেই ছিলাম’, আদালতের রায় শুনে বললেন নির্ভয়ার মা appeared first on Sangbad Pratidin.