shono
Advertisement
Aadhaar

তৈরি হয়েছিল বিদেশি চিহ্নিত করতে, সেই আধারকে হাতিয়ার করেই ভোটার তালিকায় অনুপ্রবেশকারীরা?

কেন বাড়ছে আধার নিয়ে ধাঁধা?
Published By: Kishore GhoshPosted: 07:00 PM Jul 09, 2025Updated: 07:15 PM Jul 09, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নাগরিকত্বের পরিচয়পত্র নিয়ে ধাঁধা, দ্বিধা, দ্বন্দ্ব বেড়েই চলেছে। বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় বিতর্ক নতুন করে দানা বেঁধেছে। নাগরিকত্ব প্রমাণে ভোটার কার্ড এবং আধার কার্ড বাদ পড়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে আমজনতা থেকে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। এই আবহে ইউনিক আইডেন্টিফিকেশন অথোরিটি অফ ইন্ডিয়ার (ইউআইডিএআই) প্রধান (সিইও) ভূবনেশ কুমার জানিয়েছেন, নাগরিকত্ব প্রমাণে “আধার কখনই প্রধান পরিচয়পত্র নয়”। অথচ সেই পরিচয়পত্র কাজে লাগিয়ে দিব্য 'ভারতীয়' হয়ে উঠছেন অনুপ্রবেশকারীরা! বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গোলমাল রয়েছে নির্বাচন কমিশনের ৬ নং ফর্মে। কী আছে সেখানে?

Advertisement

নির্বাচনী বিধি, ১৯৬০ অনুযায়ী কমিশনের ৬ নং ফর্মে রয়েছে বিপুল শক্তি। যাতে বলা হয়েছে, ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সী ভারতীয়দের তাঁদের বাসস্থানের এলাকায় ভোটার তালিকায় নাম উঠবে। ভারতীয় প্রমাণ করতে একটি ব্যক্তিগত ঘোষণাপত্র এবং জন্ম তারিখের প্রমাণ দিলেই চলবে। জন্ম তারিখের প্রমাণ হিসাবে হাসপাতাল থেকে দেওয়া জন্মের শংসাপত্র ছাড়াও প্যান কার্ড, আধার কার্ড গ্রাহ্য হবে। অর্থাৎ, ঘুরপথে আধারের শক্তিই ভারতীয় নাগরিকত্বের 'প্রমাণপত্র' হয়ে উঠছে।

এদিকে গত ২৪ জুন বিহারে নাগরিকত্বের প্রমাণে যে ১১টি নথি চাওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনের তরফে, তার মধ্যে রয়েছে---পেনশন পেমেন্ট অর্ডার, জন্ম শংসাপত্র, পাসপোর্ট, ম্যাট্রিকুলেশন সার্টিফিকেট, জমি-বাড়ি, বর্ণ, বন অধিকার সার্টিফিকেট ইত্যাদি। এই তালিকায় নেই প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমনকী আধার কার্ড। সরকারের যুক্তি আধার এবং অন্য নথিগুলি 'পরিচয়পত্র' কিন্তু 'নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র' নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা প্রশ্ন তুলছেন, তাহলে কমিশনেরই ফর্ম ৬-এর নথি হিসাবে আধারের অনুমোদন রয়েছে কেন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আইন অনুযায়ী নতুন ভোটার হওয়ার জন্য ফর্ম ৬ পূরণ করার সময় কোনও ধরনের নাগরিকত্বের নথির প্রয়োজন হয় না। এর জন্য কেবল নাগরিকত্বের ঘোষণাপত্রই যথেষ্ট। আরও বক্তব্য, জন্ম তারিখ এবং ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে আধার দেওয়া যেতে পারে। পুরো নথিতে (ফর্ম ৬) 'আধার' শব্দটি ছয়বার উল্লেখ করা হয়েছে। 'নাগরিক' শব্দটি দু'বার উল্লেখ করা হয়েছে।

বিশ্লেষকদের বক্তব্য, আধার কার্ডের মতো পরিচয়পত্র খুব সহজেই তৈরি করা যায়। গোটা দেশে জাল আধার চক্র কাজ করছে। কিছুদিন আগেই লিটন দাস নামের বাংলাদেশের এক নাগরিকের কাছ থেকে মিলেছিল ভারতের আধার কার্ড। অর্থাৎ, যে আধার কেন্দ্র এনেছিল অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিত করতে, সেই আধারকে হাতিয়ার করে 'ভারতীয় নাগরিক' হয়ে উঠছেন ছদ্মবেশী অনুপ্রবেশকারীরা। সেই জন্যই কি নাগরিকত্বের প্রমাণপত্রের নথি থেকে এটিকে বাদ দেওয়ার ভাবনা? তাহলেও প্রশ্ন থেকে যায়।

প্রশ্ন হল, যদি আধার বা ভোটার কার্ড ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ না-ই হয় তবে ভারতের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র কোনটি? তা কি জন্মের শংসাপত্র? সেক্ষেত্রে একজন নাগরিকের অন্যতম অধিকার ভোটদানে ভোটার কার্ড কীভাবে গ্রহণযোগ্য হয়? পাশাপাশি রাষ্ট্রের দেওয়া খাদ্যপণ্য পেতেও (রেশন ব্যবস্থা) রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার কার্ড সংযুক্ত করতে হচ্ছে। আধার যদি প্রাথমিক পরিচয়পত্র না-ই হয়, তবে এর পিছনে যুক্তিই বা কী? আধার ও ভোটার যদি নাগরিকের প্রধান পরিচয়পত্রের মধ্যে না পড়ে, তবে ভোটার কার্ড-আধার কার্ড সংযুক্তকরণের প্রয়োজনটাই বা কী? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত এই বিভ্রান্তি দূর করতে পারেনি কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। মাঝখান থেকে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • নির্বাচনী বিধি, ১৯৬০ অনুযায়ী কমিশনের ৬ নং ফর্মে রয়েছে বিপুল শক্তি।
  • বিশ্লেষকদের বক্তব্য, আধার কার্ডের মতো পরিচয়পত্র খুব সহজেই তৈরি করা যায়।
Advertisement