সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গোটা বিশ্বে ভয়াবহভাবে বাড়তে শুরু করেছে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ। পরিস্থিতি গুরুতর হওয়ার আগেই এবার সতর্ক হয়ে উঠল ভারত সরকার। বাংলাদেশ ও পাক সীমান্তের স্থলবন্দরের পাশাপাশি বিমানবন্দর এবং সমুদ্র বন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, বাইরে থেকে যারা আসছেন তাঁদের শরীরে এই রোগের লক্ষ্মণ রয়েছে কিনা নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, যে কোনও পরিস্থিতি সামাল দিতে আগাম সতর্কতা স্বরূপ দিল্লিতে ৩ হাসপাতালে কেন্দ্রের তরফে আইসোলেশন ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই তিন হাসপাতাল হল, রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল, সফদারজং হাসপাতাল এবং লেডি হার্ডিঞ্জ হাসপাতাল। পাশাপাশি সব রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, মাঙ্কিপক্স মোকাবিলায় হাসপাতালগুলিতে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার। যদিও দেশে এখনও পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের আক্রান্ত হওয়ার কোনও খবর পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিবেশী পাকিস্তানে একাধিক আক্রান্তের খবর পাওয়া গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: কোটায় ফের রহস্যমৃত্যু! শৌচাগারে মিলল কোচিং পড়ুয়ার দেহ]
জানা গিয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরে সোমবার এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। যিনি সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে ফিরেছিলেন। পাশাপাশি সেখানে আরও ৩ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিশ্বের ১১০টিরও বেশি দেশে মাঙ্কিপক্সের হদিশ পাওয়া গিয়েছে। দেখা গিয়েছে, এই ভাইরাসটি অত্যন্ত সংক্রামক। ফলে ঝড়ের গতিতে সংক্রমণ বাড়ছে। এ পর্যন্ত শুধু আফ্রিকাতেই ১৭ হাজার মাঙ্কিপক্স আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ৫১৭ জনের। পরিস্থিতি এতটাই জটিল যে মাঙ্কিপক্সের জন্য বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
[আরও পড়ুন: কুকি এলাকায় বোমা হামলার নির্দেশ খোদ মুখ্যমন্ত্রীর! ফাঁস মণিপুরের বিস্ফোরক অডিও]
উল্লেখ্য, আশির দশকে প্রথম মাঙ্কিপক্সের সন্ধান পাওয়া যায় বিশ্বে। মূলত পশ্চিম এবং মধ্য আফ্রিকার দেশগুলিতেই এই রোগ সীমাবদ্ধ ছিল। জানা যায়, মাঙ্কিপক্স মূলত পশুবাহিত রোগ। আর যে ধরনের পশুর শরীর থেকে এ রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা তাদের বাস মূলত গ্রীষ্মপ্রধান এলাকার বৃষ্টি বনাঞ্চলে। চিকিৎসকদের দাবি, দেশে পরিচিত চিকেন পক্সের ক্ষেত্রে কেবল গায়ে র্যাশ কিংবা ফুসকুড়ি বেরোয়। কিন্তু মাঙ্কি পক্সের ক্ষেত্রে সারা গায়ের পাশাপাশি, লসিকাবাহেও ছড়িয়ে পড়ে সংক্রমণ। এই ভাইরাসের কারণে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির কাছাকাছি থাকলে এই রোগে সংক্রমণের আশঙ্কা অত্যন্ত বেড়ে যেতে পারে। যৌন সংসর্গ ছাড়াও শ্বাসনালি, ক্ষতস্থান, নাক, মুখ কিংবা চোখের মাধ্যমেও এই ভাইরাস প্রবেশ করতে পারে সুস্থ ব্যক্তির দেহে।