সোমনাথ রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যে ডাক্তারের সংখ্যার সংকট মেটাতে ডিপ্লোমা ডাক্তারের প্রস্তাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করেছে তাঁর তৈরি করে দেওয়া ১৫ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি। এই আবহে এক বিকল্প পথের সন্ধান দিতে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চেয়ে আবেদন করল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট।
১৫ বছর আগে প্রখ্যাত চিকিৎসক দেবী শেঠির হাত ধরে বাংলায় শুরু হয় ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট (পিএ)-দের যাত্রা। তার আরও আগে থেকেই অবশ্য দেশের স্বাস্থ্য পরিসেবায় শুরু হয়েছে এই নতুন ক্ষেত্র। ১৯৯২ সালে তামিলনাড়ুর মাদ্রাজ মেডিক্যাল মিশনে চালু হয় পিএ-দের পথচলা। কলকাতায় আর এন টেগোর ও নেতাজি সুভাষ মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২০ আগস্ট ২০০৮ সালে শুরু হয় তিন বছরের ছ’টি সেমেস্টারের কোর্স। স্বাস্থ্যভবনের হেলথ ইউনিভার্সিটি, আর এন টেগোর হাসপাতাল ছাড়া বর্তমানে কল্যাণীর জেএনএম হাসপাতাল ও হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজে হয় ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্টদের কোর্স।
[আরও পড়ুন: নীতীশের ‘দৌত্য’, কেজরির সঙ্গে কথা বলেই খাড়গের সাক্ষাৎপ্রার্থী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী]
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নানা বেসরকারি হাসপাতালে এই প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে পাশ করা শতাধিক পিএ বর্তমানে কর্মরত। তাঁরা হলেন মূলত ডাক্তার ও নার্সদের মাঝের সেতু। বেসরকারি হাসপাতালগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে গেলেও এতদিন এই পেশায় নিযুক্তদের ছিল না কোনও সরকারি স্বীকৃতি। তবে ২০২০-২১ বাজেট অধিবেশনে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. হর্ষ বর্ধন সংসদে পেশ করেন ন্যাশনাল কমিশন ফর অ্যালায়েড অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রফেশনস বিল, ২০২০। সর্বসম্মতিতে দুই কক্ষেই পাশ হয়ে যায় এই বিল। এরপর তামিলনাড়ু, ত্রিপুরা-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায় ৫০ জন ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ করা হয়।
কীভাবে এই পিএ-রা গ্রামীণ ক্ষেত্র-সহ অন্যান্য স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উন্নতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন, সেই কথাই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বোঝাতে চায় পিএ-দের সংগঠন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স থেকে প্রতি বছর ১০০ থেকে ১৫০ পিএ উত্তীর্ন হচ্ছেন। তিন বছর ডিগ্রি কোর্সের পর তাঁদের হাসপাতালে এক বছর ইন্টার্নশিপ করতে হয়। ফলে এই পিএ-রা যথেষ্ট অভিজ্ঞ। আইএপিএ-র সাধারণ সম্পাদক জিৎ অধিকারী বলছিলেন, “মুখ্যমন্ত্রী ডাক্তারের সংখ্যার সংকট মেটাতে যে পরিকল্পনা করছেন, আমরা তার যোগ্য মাধ্যম। উনি ব্যস্ত, তবু যদি একবার সময় দেন ওঁর সঙ্গে দেখা করে আমরা কীভাবে রাজ্যের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে ভূমিকা রাখতে পারি, তা বোঝাতে পারব।”