সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কেরলের ওয়ানড়ে ভয়াবহ ভূমিধসে লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। মর্মান্তিক এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে উদ্ধারকাজে নামল দেশের সেনাবাহিনী। পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে সেনাবাহিনীকে আগেই নামানো হয়েছিল এবার নৌসেনা ও বায়ুসেনাকেও নামানো হল উদ্ধারকাজে। রাজ্য ও কেন্দ্র দুই তরফেই যৌথভাবে শুরু হয়েছে উদ্ধারকাজ। যদিও ভারী বৃষ্টির জেরে প্রতি মুহূর্তে বেগ পেতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের।
ওয়ানড়ের কালপেট্টা থেকে প্রায় ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত মেপ্পাদির পাহাড়ি অঞ্চলের একাধিক পাহাড়ে ধস নামে। রাত ১টা নাগাদ মুন্ডাক্কাই টাউনের কাছে প্রথম ধসের খবর পাওয়া যায়। এর ঘণ্টা তিনেক পর ওই এলাকায় এক স্কুলের কাছে দ্বিতীয় ধস নামে। আশেপাশের বাড়ি ও দোকানের মধ্যে জল কাদা ঢুকে ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়। ভেসে যায় একাধিক গাড়ি, ভেঙে গিয়েছে রাস্তা, সেতু। নদীতে ভাসতে দেখা যাচ্ছে মৃতদেহ। ধসের জেরে নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে গ্রামের পর গ্রাম। এই ঘটনায় এলাকায় অন্তত ৪০০টি পরিবার আটকে পড়ে। দুর্ঘটনার খবর পেয়েই উদ্ধারকাজে নেমেছিল দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। খোদ প্রধানমন্ত্রী কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করে পরিস্থিতির খবর নেন। এর পরই দুর্ঘটনাস্থলে উদ্ধার কাজে নামল সেনা।
[আরও পড়ুন: ওয়ানড় ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৩, আর্থিক সাহায্য ঘোষণা মোদির]
এনডিআরএফের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সেখানে উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি বায়ুসেনার হেলিকপ্টারের সাহায্যে জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। ধ্বংসস্তূপের নীচে যারা আটকে পড়েছেন তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। তবে ভারী বৃষ্টির ফলে ব্যহত হচ্ছে উদ্ধারকাজ। বায়ুসেনার পাশাপাশি এঝিমালা থেকে নৌবাহিনীও উদ্ধারকাজে গতি আনতে হাত লাগিয়েছে। সবমিলিয়ে কার্যত যুদ্ধকালীন অবস্থায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা চালাচ্ছে সেনা। এদিকে কেরলের তথ্য ও জনসংযোগ দফতরের পক্ষ থেকে একাধিক হেল্পলাইন চালু করা হয়েছে। 0483-2734387, 0471-2327628 এবং 2518637 নম্বরগুলি যোগাযোগের জন্য ২৪ ঘণ্টা খোলা।
[আরও পড়ুন: লাদাখেও দাবদাহ! প্রবল গরমে বাতিল বিমান, উদ্বিগ্ন পরিবেশবিদরা]
ভয়াবহ এই দুর্ঘটনায় এক্স হ্যান্ডেলে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি লেখেন, ‘ওয়ানড়ে ভয়ংকর দুর্ঘটনার কথা শুনে আমি মর্মাহত। এই ভূমিধসে যারা প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাঁদের সমবেদনা জানাই। আহতরা যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন সেই প্রার্থনা করি। যেখানে যেখানে ধস নেমেছে সব জায়গায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়েছে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। গোটা পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কেন্দ্রের তরফে যথাসম্ভব সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।’ এর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের তরফে জানানো হয়েছে, কেরলের এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে মৃতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা ও আহতদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থসাহয্য করা হবে।