সুব্রত বিশ্বাস: শূন্য ভাঁড়ারে কিছু লক্ষ্মীলাভের আশা। তাই স্টেশন ও রেল চত্বরে সিনেমাওয়ালাদের কীভাবে টানা যায়, তা পরিকল্পনামাফিক প্রচেষ্টা শুরু করছে রেল। স্টেশনের পরিকাঠামো ও বিগত দিনে শুটিং (Shooting) স্পটগুলির খবর নেওয়া শুরু হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে শুটিংয়ে ব্যবহার্য সামগ্রী ও আয়ের বিষয়টিও। করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হলে আগের স্পটগুলিকে আরও কতটা মনোগ্রাহী করে তোলা যায়, সেদিকে দৃষ্টি দিয়ে উন্নয়ন ঘটানো হবে বলে বোর্ড সূত্রে খবর।
জানা গিয়েছে, সিনেমার শ্যুটিংয়ে স্টেশন ব্যবহারে আয়ের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে সেন্ট্রাল রেল (Central Railway)। খুব একটা এগিয়ে না থাকলেও, পূর্ব রেলের বিভিন্ন স্টেশনে শুটিং হয়েছে বেশ কয়েকবার। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘বব বিশ্বাস’-এর উপর একটি ছবির শুটিংয়ের জন্য বেশ কয়েক মাস আগে অনুমতি চাওয়া হয়েছিল শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার একটি স্টেশনে। পরে তাঁরা আর আসেননি। কয়েক মাস আগে বোলপুর স্টেশনে একটি বাংলা ছবির শুটিংয়ের জন্য অনুমতি চাওয়া হয়। লকডাউনের কারণে তা বাতিল হয়েছে।
[আরও পড়ুন: অযোধ্যায় ভূমিপুজোয় বিরাট আয়োজন, রামকে লক্ষাধিক লাড্ডু নিবেদন করবেন প্রধানমন্ত্রী]
বাংলা ছবির নির্মাতারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, ছবির যা বাজেট, তাতে স্টেশনে শুটিং করতে হলে ভাড়া দিয়ে পোষাবে না। পূর্ব রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, রেল বোর্ডের গাইডলাইন মেনে লাইসেন্স ফি ধার্য হয়। কী কী ব্যবহার করা হবে, তারও একটা গাইডলাইন আছে। কলকাতা মেট্রোয় ‘কহানি’র মতো জনপ্রিয় ছবির শুটিং হয়েছিল।
তবে এবিষয়ে এগিয়ে সেন্ট্রাল রেল। ওই রেলের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস, আপতা, পানভিল, চৌক, লোনাভালা, খান্ডলা, বাথার স্টেশন শুটিংয়ের জন্য আদর্শ জায়গা প্রায়। মোক্ষম স্টেশন ‘আপতা’। ২০১৯-২০তে ওই স্টেশনে চারটি ছবির শুটিং হয়। ‘রাত আকেলি হ্যায়’, ‘মুম্বই সাগা’, ‘শুভ মঙ্গল জ্যাদা সাবধান’। শুটিং থেকে আয় হয় ২২.৬১ লক্ষ টাকা। ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনালে শ্যুটিং হয় আটটি ছবির – ‘পাঙ্গা’, ‘চোকড’, ‘সুরজ সে মঙ্গল ভারী’। সেখান থেকে আয় হয়েছে ৪৪.৫২ লক্ষ টাকা। পানভিল স্টেশনে রজনীকান্তের ‘দরবার’ থেকে আয় হয়েছে ২২.১০ লক্ষ টাকা। পুনে ডিভিশনের বাথার স্টেশনে তিনটি ছবির শ্যুটিং থেকে আয় হয়েছে ৩৭.২২ লক্ষ টাকা। যার মধ্যে সলমন খানের ‘দাবাং ৩’ দিয়েছে ১৫.৭০ লক্ষ টাকা।
[আরও পড়ুন: মহামারী আবহে নেশার টানে পেটে যাচ্ছে বিষ মদ, বিষক্রিয়ায় পাঞ্জাবে মৃত ২১]
সেন্ট্রাল রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের আপতা স্টেশনটি শুটিংয়ের অনুকূল। লাইনের এক দিকে পাহাড় অন্য দিকে নদী পাশ ঘেঁষা রাস্তা। যা ট্রেনের সমান্তরাল ভাবে ব্যাবহার করা যায়। পানভিল-রোহা শাখার ওই স্টেশনটির চৌহদ্দি এতটা প্রশস্ত যে, ভ্যানিটি ভ্যান থেকে অসংখ্য গাড়ি রাখা যায়। ক্রসিং স্টেশন। বাড়তি লাইন রয়েছে। প্রয়োজনে ট্রেন সাজিয়ে শুটিং করা যেতে পারে। অনুকূল পরিবেশের জন্য বহু ছবির শুটিং হয়েছে। ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘রং দে বাসন্তী’, ‘বাগী’, ‘খাকি’, ‘শাদি নম্বর ওয়ান’, ‘চায়না টাউন’ ইত্যাদি। জনপ্রিয় শুটিংস্পট স্টেশনগুলির পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটিয়ে আরও আকর্ষণীয় করতে চায় রেল, যাতে পরিস্থিতি স্বভাবিক হলে সিনেমাওয়ালার আগ্রহ প্রকাশ করেন স্টেশনগুলোর প্রতি।
The post ভাঁড়ারে টান, আয় বাড়াতে শুটিংয়ের জন্য স্টেশন ভাড়া দিতে চায় রেল appeared first on Sangbad Pratidin.