shono
Advertisement

রেলের টিকিট চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে, বন্ধ হতে পারে তৎকাল পরিষেবা

তৎকাল টিকিট পরিষেবা বন্ধ হলে চরম সমস্যায় পড়বেন যাত্রীরা। The post রেলের টিকিট চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে, বন্ধ হতে পারে তৎকাল পরিষেবা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 06:30 PM Sep 03, 2020Updated: 06:30 PM Sep 03, 2020

সুব্রত বিশ্বাস: ইন্টারনেটের মাধ্যমে রেল টিকিটের অধিকাংশটাই চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে। আপৎকালীন পরিষেবার উদ্দেশ্যে যে তৎকাল টিকিটের ব্যবস্থা রয়েছে তা নিমেষে উধাও হচ্ছে সফটওয়্যারের কারিগরিতে। রেলের সাইবার ক্রাইম বিভাগ একের পর এক এমন এজেন্সির সন্ধান পাচ্ছে, যারা রেলের সফটওয়্যার বিক্রি করছে। আর এই সফটওয়্যারের দৌলতেই রেলের টিকিট চলে যাচ্ছে দালাল এজেন্সিগুলোর হাতে। সাধারণ যাত্রীরা বাধ্য হয়ে দালালদের দ্বারস্থ হচ্ছেন। সেখানে মোটা টাকা দিয়ে টিকিট করাতে বাধ্য হচ্ছেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: সাক্ষাৎ কল্পতরু! নিজের সঞ্চয় থেকে প্রায় ১০৩ কোটি টাকা দান প্রধানমন্ত্রী মোদির]

সম্প্রতি শিয়ালদহ আরপিএফের ক্রাইম ইন্টেলিজেন্স বিভাগ, বারাকপুর আরপিএফ, কৃষ্ণনগর আরপিএফ, তেহট্ট, বেলঘরিয়া প্রভৃতি অঞ্চল থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। যারা সফটওয়্যার বিক্রির চক্রের সঙ্গে যুক্ত। দেশজুড়ে এমন অসংখ্য চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠায় সংরক্ষিত টিকিট পাচ্ছেন না সাধারণ যাত্রীরা। বিশেষত তৎকাল টিকিট দুষ্প্রাপ্য হয়ে উঠেছে এই জন্য। সম্প্রতি বোর্ড কর্তাদের সঙ্গে জোন আধিকারিকদের ভিডিও মিটিংয়ে এনিয়ে আলোচনা হয়েছে। দালালদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশের পাশাপাশি তৎকাল পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়ার প্রসঙ্গে ভাবনা চিন্তাও করা হয়েছে। এরপর রেলকর্তাদের একাংশ মনে করছেন, তৎকাল পরিষেবা বন্ধ হতে পারে। সাধারন মানুষকে চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হবে তাৎকাল পরিষেবা বন্ধ হলে। যাত্রীদের মতে, পরীক্ষা, চিকিৎসা, নিকটজনের শারীর খারাপে যাতায়াতে তৎকাল পরিষেবা জরুরি। তা বন্ধ হলে অসুবিধার মধ্যে পড়তে হবে।

লকডাউনের কয়েকমাস আগে আরপিএফ টিকিট দালালি চক্রে জঙ্গিযোগের সন্ধান পেয়েছিল। আরপিএফ ডিজি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন, সাধারণ মানুষের টিকিট পাওয়া নিয়ে। এরপর আরপিএফ কোমর বেঁধে নামে চক্রের সন্ধানে। পূর্ব রেলের লিলুয়ায় প্রথম সাইবার ক্রাইম ধরতে সেল খোলা হয় ১৫ আগস্ট। এরপর একের পর এক দালাল এজেন্ট ধরা পড়ে যারা রেলের সফটওয়্যার বিক্রির করছে। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তাদন্তকারীরা জেনেছে, উচ্চমানেরই সফটওয়্যারে আগে থেকেই দালালরা যাত্রীর নাম, ঠিকানা, গন্তব্য, তারিখ, ট্রেনের নাম-নম্বর, লিঙ্গ প্রয়োজনীয় সব কিছু লোড করে রাখে। রিজার্ভেশনের লিংক খোলা মাত্র প্রিন্টার ‘ওকে’ এন্টার করে দেয়। তড়িৎগতিতে টিকিট বের করে নেয়। এত তাড়াতাড়ি কোনও কাউন্টারে সম্ভব নয়। পূর্ব রেলের রিজার্ভেশনের জনৈক কমার্শিয়াল আধিকারিকের কথায়, টাইপিংয়ে এক্সপার্ট কোনও রিজার্ভেশন ক্লার্ক কাউন্টারে থেকে এতো দ্রুত ফর্ম ফিলাপ করতে পারবেন না। একটা ফর্ম ফিলাপ করে টিকিট করতে ন্যূনতম সাত-আট সেকেন্ড লাগবেই। ততক্ষনে দালালরা জাজ হাসিল করে ফেলছেন। রেলের রিকুইজিশনে এক সঙ্গে ছ’জনের টিকিট করা গেলেও এজেন্টদের কাছে এক সঙ্গে বারো জনের টিকিট করার সুযোগ রয়েছে।

এজেন্সি নিয়োগ করে আইআরসিটিসি। এখন রেলের আশি শতাংশই ই-টিকিট। যা নিয়ন্ত্রণ করে কর্পোরেট সংস্থাটি। রেল সরাসরি নিজস্ব নিয়ন্ত্রণ ছাড়ায় এই দুর্নীতি মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। যার ফল ভোগ করছেন সাধারণ মানুষ। এই অভিযোগ তুলে রেলের হাতে নিয়ন্ত্রন রাখার পাশাপাশি কোনও করপোরেশন ও বেসরকারি সংস্থার হাতে টিকিটের সংরক্ষণ রাখা উচিত নয় বলে দাবি তুলেছে পূর্ব রেলের কর্মী সংগঠন মেনস ইউনিয়ন। সাধারণ সম্পাদক অমিত ঘোষ অভিযোগ তুলেছেন, গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনগুলির স্লিপারের কুড়ি থেকে পঁচিশ শতাংশ তৎকাল সিট কর্পোরেট সাংস্থার হাতে দেওয়ায় দালালরা বিধি সুযোগ পাচ্ছেন। পাশাপাশি ভ্রমনের নামে ওই কর্পোরেট সংস্থার বার্থে কোটা রয়েছে। কোটা পূরণ বা হলে প্রোগ্রাম বাতিল হয়। কিন্তু কোটার টিকিট এক শ্রেণির কর্মীর সহযোগিতায় দালালদের হাতে পৌঁছে যাচ্ছে বলে আমিতবাবু অভিযোগ করেছেন। ই-টিকিট কনফার্ম না হলে টিকিটের টাকা যাত্রীর একাউন্টে ঢুকে যায়। বাতিল হয়ে যায় সেই টিকিটটি। কিন্তু অধিকাংশ সময়ে সেই বাতিল টিকিটের প্রিন্ট নিয়ে অসংরক্ষিত কোচে যাত্রা করেন সেই যাত্রী। কারন, গন্তব্যে পৌঁছানোর পর ভিড়ে টিকিট সংগ্রাহক তা যাচাই করার সুযোগ পাননা বলে অভিযোগ করে অমিত ঘোষ বলেন, রেলের ট্রফিক, অ্যাকাউন্টস এডিট করলেও কর্পোরেট সংস্থার এডিট না করায় বিষয়গুলি অধরা থেকে যাচ্ছে। চরম ক্ষতির মুখে পড়ে রয়েছে রেল। উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে দিল্লির চাঁদনী চক এলাকার কয়েকটি সংস্থা উন্নতমানের রেলেই সফটওয়্যার বাজারে বিক্রি করা শুরু করে। শুরু হয় তদন্ত। ধরা পড়ে চক্রের পান্ডারা। রেলের সঙ্গে যুক্ত কর্পোরেট সংস্থার কয়েকজন অধিকারিকও ধরা পড়ে ছিল। আবার এধরনের চক্র সক্রিয় হওয়ায় উদ্বেগ বেড়েছে রেলের।

[আরও পড়ুন: সীমান্তে সিঁদুরে মেঘ, সংঘাতের আবহে লাদাখ সফরে সেনাপ্রধান নারাভানে]

The post রেলের টিকিট চলে যাচ্ছে দালালদের হাতে, বন্ধ হতে পারে তৎকাল পরিষেবা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement