সুব্রত বিশ্বাস: এবার বিমানের স্বাচ্ছন্দ্য মিলবে ট্রেনে! যাত্রীদের কথা মাথায় রেখেই শতাব্দী ও রাজধানী এক্সপ্রেসে প্রথম শ্রেণির এসি এক্সিকিউটিভ চেয়ারকারে আনা হচ্ছে আমূল পরিবর্তন। এর ফলে বিলাসবহুল ভ্রমণের চমৎকার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবেন ভ্রমণপিপাসুরা৷ প্রাথমিকভাবে দশটিরও বেশি এধরনের ‘অনুভূতি’ কোচ তৈরি করেছে রেল। যা দ্রুত পরীক্ষামূলকভাবে চালু হবে।
জানা গিয়েছে, করোনা কালে এই প্রকল্প থমকে গেলেও এখন তা চালু করতে দ্রুত গতিতে কাজ শুরু হয়েছে। রেল সূত্রে খবর, ৫৬ সিটের ‘অনুভূতি’ কোচের দু’ধারে দু’টি করে সিট থাকবে। মাঝে যাতায়াতের পথ। সিটগুলি বিমানের ধাঁচে কুশানে মোড়া। একেবারে পায়ের তলা পর্যন্ত বিস্তৃত। ফলে পায়ে আরামদায়ক অনুভূতি মিলবে যাত্রীদের। প্রতিটি সিটের পিছনে লাগানো থাকবে এলইডি স্ক্রিন। যাতে সিনেমা থেকে নান্দনিক বেশকিছু প্রোগ্রাম দেখা যাবে। এছাড়া, সামনা সামনি চারটি করে সিটও থাকছে। দু’টি সিটের মধ্যে ইউএসবি ও মোবাইল চার্জিং ব্যবস্থা থাকবে। প্রতিটা সিটের পিছনে স্ন্যাক্স টেবিল এমন ভাবে থাকবে যে টানলেই তা বেরিয়ে আসবে, ঠেললে ভিতরে ঢুকে যাবে।
[আরও পড়ুন: দিল্লিতে ষাটোর্ধ্ব পুরোহিতকে পিটিয়ে খুন, জনতার পালটা মারে হাসপাতালে অভিযুক্ত]
রেল সূত্রে খবর, ট্রেনের রেলকর্মীদের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কথা বার্তার প্রয়োজন হলে নতুন কোচগুলিতে মাথার উপরে থাকবে কলিংবেল। টিপলেই জায়াগায় বসেই প্রয়োজনীয় কথা বলতে বা শুনতে পারবেন। উপরে ধার ঘেঁষে লাগেজ র্যাকটি প্রশস্ত ও ভেলভেটে মোড়া। সামগ্রী থাকবে নিরাপদে। লাগবে না কোনওরকম দাগ। দু’ধারে থাকবে ইনফরমেশন ডিসপ্লে বোর্ড। যাকে একেবারে বিমানের মতো ফুটে উঠবে কোন স্টেশন ছেড়ে গেল ও পরবর্তী কোন স্টেশন আসছে। কতটা দূরত্বে এল ট্রেনটি, গন্তব্য কতটা দূরে, কত বেগে চলছে ট্রেনটি ইত্যাদি তথ্য সিটে বসেই জানাতে পারবেন যাত্রীরা।
সফর চলাকালীন পরিচ্ছন্নতার উপর বিশেষ জোর দিয়েছে রেল। সেদিকে লক্ষ্য রেখে একেবারে মডিউলার টয়লেট বানিয়েছে রেল। শৌচালয়ের ট্যাপে যেমন হাত দিতে হবে না, তেমনই দূষণ ছড়াবে না এমন সব ব্যবস্থা রয়েছে শৌচালয়ে। ঘোষণা ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে এই কোচে। কোচের মধ্যেই থাকছে মিনি প্যান্ট্রি। যাতে জল গরমের ব্যবস্থা-সহ ব্যবহার্য সামগ্রীও থাকবে। বিশেষভাবে সক্ষম যাত্রীদের কথা মাথায় রেখে সিটের ইন্ডিকেটর স্টিকারগুলিতে ব্রেইল লিপি ব্যবহার করা হয়েছে। রেল বোর্ড সূত্রে বলা হয়েছে, চেন্নাইয়ের ইন্ট্রিগাল কোচ ফ্যাক্টরি থেকে প্রথমিকভাবে এই কোচগুলি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি কোচ তৈরিতে গড় খরচ ২.৮৪ কোটি টাকা। যা খুব শিগগির শতাব্দী ও রাজধানীগুলিতে ব্যবহার করা হবে। পূর্ব রেলের মুখ্য জন সংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, হাওড়া, শিয়ালদহের ট্রেনগুলিতে এখন এই কোচ লাগেনি। তবে দ্রুত তা চালু হবে শিগগির।