সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কিয়েভ (Kyiv) থেকে ২৭০ কিলোমিটার দূরে ভিনিতসিয়া শহর থেকে রোমানিয়া সীমন্তে যখন পালাচ্ছিলেন তখন কিয়েভে ভিতরে ঢুকে পড়েছে রুশ সেনা। রাস্তায় লড়াইয়ে নেমেছে ইউক্রেনীয় সেনাও। সেই ভয়ানক দৃশ্য দেখতে দেখতে কোনও রকমে বাসে উঠে রোমানিয়া সীমান্তে পালিয়ে এসেছিলেন শুভাংশু। বাসের ব্যবস্থা করে কনট্রাক্টর সংস্থা।
বুধবার রোমানিয়া থেকে শতাধিক ভারতীয় ছাত্রকে নিয়ে উড়ে আসা এয়ার ইন্ডিয়ার বিমান থেকে দিল্লি বিমানবন্দরে নেমে হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন ওই তরুণ। বিমানবন্দরের বাইরে মাকে দেখতে পেয়ে জড়িয়ে ধরলেন। ছেলেকে কাছে পেয়ে ডুকরে উঠলেন মা।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধের আবহে ইউক্রেনীয়দের ‘ইরানি’ বলে সম্বোধন বাইডেনের, কিন্তু কেন?]
ইউক্রেন (Ukraine Crisis) থেকে দেশে ফেরার অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের জানানোর সময় দিল্লির বাসিন্দা শুভাংশু বলেন, “ওখানে নরকের মতো পরিস্থিতি। রোমানিয়া প্রবেশের আগে সীমান্তে ১২ কিলোমিটার হাঁটতে হয়। তবে সেটা কোনও অসুবিধারই নয়। সীমান্তের যত কাছে পৌঁছচ্ছিলাম, ভিড়, বিশৃঙ্খলা দেখে মনে হচ্ছিল আর বোধ হয় ওপারে যেতে পারব না। চারদিকে পড়ুয়ারা হাউ হাউ করে কাঁদছিল। তারা রোমানিয়ার সীমান্তরক্ষীদের কাছে গেট খুলে দেওয়ার জন্য ভিক্ষা চাইছিল। আমাকে আগে যেতে দাও, আগে যেতে দাও” বলে চিৎকার করছিল।
ওই পড়ুয়া আরও জানান, “রোমানীয়রা চাইছিলেন না আমরা ওই দেশে ঢুকে পড়ি। এসব দেখে কয়েকজন ছেলেমেয়ে ভয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। কেউ গেটের কাছে আগে যাওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে মারপিট শুরু করল।” কয়েকজন ছাত্রকে মাথায় বন্দুকের বাঁট দিয়ে মারধর করা হয় বলে জানান তিনি। দেশে ফেরার পরও সেই আতঙ্ক কাটিয়ে উঠতে পারেননি শুভাংশু। তাঁর কথায়, “পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে গিয়েছিল। যখন সীমান্তের গেট খুলল, তখন প্রথমে ইউক্রেনীয়দের ঢুকতে দিল রোমানিয়া। শেষমেশ বেশ খানিকক্ষণ পর আমরা সীমান্ত পেরোলাম। সেখানে আমাদের জন্য ভারতীয় দূতাবাস কর্মীরা অপেক্ষা করছিলেন। ওঁরা আমাদের খুব যত্ন করেন। আর কোনও বিপদের মুখোমুখি হতে হয়নি।”