অর্ণব আইচ: সুন্দরবন ও উপকূল নিরাপত্তার জন্য কম গভীরতায় চলে, এমন জলযান নিয়ে আসছে নৌসেনা। জঙ্গিহানার মোকাবিলা করবেই এই জলযানগুলি। এমনকী, বঙ্গোপসাগরে (Bay of Bengal) সাবমেরিন করেও যদি শত্রুপক্ষ আক্রমণ করতে আসে, তখন তার মোকাবিলা করবে এই জলযান বা জাহাজগুলি, যার পোশাকি নাম ‘শ্যালো ওয়াটার ক্রাফট’। ডিসেম্বরেই একটি জলযান আসবে নৌসেনার (Indian Navy) হাতে। এরপর ধীরে ধীরে আরও সাতটি পাবে নৌবাহিনী। নৌসেনার এক কর্তা জানান, কলকাতা ও চেন্নাইয়ে তৈরি হচ্ছে এই জলযান। এটিকে বড় যুদ্ধ জাহাজের ছোট সংস্করণ বললেও চলে।
রাজ্যের নৌসেনার এনওআইসি কমোডর ঋতুরাজ সাহু জানান, বিভিন্ন সময়ে খতিয়ে দেখা হয়, কোন কোন জায়গার নিরাপত্তা বেশি জরুরি। সেই মতো নৌবাহিনী জাহাজ তৈরি করে কাজে লাগায়। নৌসেনা জানিয়েছে, পূর্ব ভারতের উপকূল ও সুন্দরবন (Sunderbans) সংলগ্ন এলাকায় নিরাপত্তা বৃদ্ধির জরুরি হয়ে পড়েছে। কোনও জঙ্গি সংগঠন যাতে মুম্বই হামলার (Mumbai Attack) আদলে জলপথে এসে আক্রমণ করতে না পারে, সেই ব্যাপারে নৌসেনা আরও তৎপর হয়েছে। চিন ও পাক সাবমেরিনে করে শত্রুরা যাতে উপকূলের দিকে না আসতে পারে, সেদিকে নজরদারির জন্যই অল্প জলের যুদ্ধজাহাজ, এই ‘শ্যালো ওয়াটার ক্রাফট’ বঙ্গোপসাগর (Bay of Bengal) ও সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকা জুড়ে চালাবে নজরদারি। এই রণতরীতে রয়েছে আল্ট্রাসনিক ব্যবস্থা, যার ফলে জলের তলায় কোন সাবমেরিন বা অন্যান্য বস্তু থাকলেও তা সহজেই নজরে আসবে। এ ছাড়াও জঙ্গি ও শত্রুর মোকাবিলা করতে জলযানের উপরের অংশে থাকবে স্বয়ংক্রিয় উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন রাইফেল।
[আরও পড়ুন: ‘হিন্দুরা দাঙ্গা করে না’, শাহর ‘উচিত শিক্ষা’ মন্তব্যে সমর্থন হিমন্তর]
আগামী রবিবার নৌসেনা দিবস। তার আগেই শুক্রবার এনওআইসি জানান, সামনেই গঙ্গাসাগর মেলা। তার আগে থেকেই রাজ্য সরকারের সহযোগিতায় উপকূলে নিরাপত্তা ও তীর্থযাত্রীদের সুরক্ষার জন্য একাধিক জলযান উপকূল এলাকায় টহল দেবে। তৈরি থাকবে নৌবাহিনীর আকাশযান। নৌসেনার দাবি, চিন বা পাকিস্তানের কোনও জলযান বা জাহাজ যাতে ভারতীয় জলসীমায় প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য নৌসেনার কড়া নজর থাকে। আন্দামানের ইন্দিরা পয়েন্টের নৌঘাঁটি থেকেও কড়া নজরদারি চালানো হবে।
[আরও পড়ুন: একদিনেই ১ কোটির চাকরির অফার ২৫ পড়ুয়াকে, নয়া রেকর্ড মাদ্রাজ আইআইটির]
টিটাগড়ের একটি বেসরকারি কারখানায় নৌসেনার পাঁচটি জলযান তৈরি হচ্ছে, সেগুলিতে থাকছে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সহ ডুবুরিদের সব রকম সুবিধা। সমুদ্র ও উপকূলে কোন অভিযান অথবা উদ্ধারকাজের জন্য ‘ডাইভিং সাপোর্ট ক্রাফ্ট’ নামে এই জলযানগুলি কাজে লাগবে। এছাড়াও ওই কারখানায় তৈরি হচ্ছে ৬টি ‘২৫ টন বোলার পুল ট্যাগ’ জলযান। তরুণ-তরুণীরা যাতে নৌসেনায় যোগদান করেন, তো জন্যও বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে নৌসেনা।