shono
Advertisement

হিতাহিতের বিচার করেন কে?

এই প্রতিবাদের নেতা হিসেবে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হবে সরকারকে৷ The post হিতাহিতের বিচার করেন কে? appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 09:43 PM Oct 25, 2016Updated: 05:43 PM Nov 02, 2016

চিনা পণ্য বয়কট করছে দেশবাসী৷ ঐক্যের জবাব দিতেও প্রস্তুত তাঁরা৷ কিন্তু প্রশাসনকে পাশে পাবে তো? বিকল্প ব্যবস্থা ভাবছে সরকার? উত্তর খুঁজলেন সুলয়া সিংহ

Advertisement

পৃথিবীতে দু’ধরনের মানুষের বসবাস৷ এক প্রকার, যাঁরা সমাজ, দেশ তথা বিশ্বে যা ঘটছে, তা নিয়ে বিন্দুমাত্র মাথা ঘামায় না৷ মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখে, শপিং মল থেকে ব্র্যান্ডেড জামাকাপড়, কসমেটিক্স কিনেই তাঁরা খুশি৷ কোনও বিষয়ে প্রতিবাদ জানানোর মতো ইচ্ছা তাঁদের নেই৷ মুখ বুজে সবটা সহ্য করে নেয়৷ আরেক প্রকার, যাঁরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে ভালবাসে৷ পরিবর্তনের জন্য প্রতিবাদকে হাতিয়ার বানায়৷

কে কোন ধরনের জীবনযাপন করবেন, তা সম্পূর্ণ তাঁর ব্যক্তিগত ব্যাপার৷ এমন গণতান্ত্রিক অধিকারে হস্তক্ষেপ করে সাধ্যি কার! দীপাবলিতে কে চিনা আলো দিয়ে নিজের বাড়ি সাজিয়ে তুলবে, বা কে চিনা মোবাইলকে ‘ইউজার ফ্রেন্ডলি’ আখ্যা দেবে, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলা যেতে পারে না৷ আরেক দল অবশ্য প্রশ্ন তুলছে৷ চিনা দ্রব্য ব্যবহার নিয়ে৷ চিনের চোখ রাঙানিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে, চিনা পণ্য বয়কটের পথে নমছে৷ হিসেব মতো এরাই দ্বিতীয় তালিকাভুক্ত৷ এ দেশের প্রতি চিনের হাবভাব তাদের মোটেই পছন্দ হচ্ছে না৷ না হওয়াটা তো অস্বাভাবিকও নয়৷

সীমান্তে একের পর এক হামলা চালাচ্ছে পাক জঙ্গিরা৷ রাতের অন্ধকারে বাড়ির ভিতর ঢুকে ভারতের সাজানো সংসারকে তছনছ করে দিয়ে যাচ্ছে কিছু ‘কাপুরুষ’-এর দল৷ দেশবাসীর চোখ জলে ভিজছে৷ আর নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির জন্য পাকিস্তান নামক ‘ছুরি’কে ইচ্ছে মতো কাজে লাগিয়ে ভারতকে রক্তাক্ত করে চলেছে চিন৷ ব্রিকস সম্মেলনে যখন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পাক সন্ত্রাস নিয়ে কথা বলতে চান, তখন চিন কিছু শুনতেই পায় না৷ আর সেই চিনের সব বায়নাক্কা কেন মেনে নেওয়া হবে? খুব সহজ এই প্রশ্ন তুলেই চিনা পণ্য ব্যবহারে অনিহা দেখাচ্ছে দ্বিতীয় প্রকারের তালিকাভুক্ত প্রতিবাদীর দল৷ কিন্তু যতটা সহজ শুনতে, প্রশ্নটা আদৌ কি ততটাই সহজ? পাক শিল্পী, পাক ক্রিকেটার, পাক অনুষ্ঠান, এমনকী পাকিস্তানে বিমান চলাচলও বন্ধ করা সম্ভব৷ কিন্তু ভারতের পক্ষে চিনের থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকা কি সম্ভব? বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ থেকে ওষুধপত্র, চিনের সঙ্গে বিচ্ছেদ করলে তো কিছুই জুটবে না৷ একপ্রকার পাড়ার মোড়ের পাথরের মূর্তিটার মতোই স্ট্যাচুতে পরিণত হবে এই দেশ৷ বরং বেশ কয়েক বছর পিছিয়ে যাবে বললেও বাড়িয়ে বলা হবে না৷

অথচ এ দেশের আঁতে ঘা দেওয়া চিনা বচনও তো সহ্য করা যায় না৷ চিন বলে, ভারতে ঐক্যের অভাব৷ সাধারণ মানুষ হীনমন্যতায় ভোগে৷ ব্যবসায়িক ভারসাম্যতাহীনতা ঢাকতে মুখেই চেঁচামিচি করে প্রশাসন৷ এসব কথা পছন্দ নয় দ্বিতীয় প্রকারের তালিকাভুক্তদের৷ সেই প্রতিবাদী ভারতীয়দের তরফে চিনের প্রেসিডেন্ট জিংপিং-কে বার্তা, ভারত ঐক্যবদ্ধ কি না, তা প্রমাণ করতে নামলে এদেশের বাজার থেকে চিনা আধিপত্য ধুয়ে ফেলতে খুব একটা সময় লাগবে না৷ উদয়পুর সেই কাজ জোর কদমে শুরুও করে দিয়েছে৷ এমনকী একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, এবারের দীপাবলিতে চিনা আলোর বিক্রিও প্রায় ১৭ গুণ কমে গিয়েছে৷ দেশীয় প্রদীপেই বাড়ি আলোকিত করতে আগ্রহী দ্বিতীয় প্রকারের তালিকাভুক্তরা৷

তবে এই প্রতিবাদের নেতা হিসেবে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে হবে সরকারকে৷ সে-ই তো এই মুখগুলির প্রতিনিধি৷ গতবারের সরকার বলেছিল, মোটা অঙ্ক খরচ করে ভারতকে শিল্পে সার্বিক উন্নতি ঘটাতে হবে৷ বিদেশি পণ্যের আমদানি কমিয়ে দেশের প্রযুক্তিকে কাজে লাগাতে হবে৷ তবেই চিনকে যোগ্য জবাব দেওয়া যাবে৷ এই সরকারও একই কথা বলে৷ কিন্তু কাজ কতটা হয়? চিনা পণ্য বয়কটের ডাকের অনেক মহলই প্রশংসা করছে৷ কিন্তু এর বিকল্প হিসেবে ভারত ভাবছে তো? প্রতিবাদেই পরিবর্তন আসে৷ প্রশ্ন হল এই প্রতিবাদ দেশের হিতেই পরিবর্তন আনবে তো?

The post হিতাহিতের বিচার করেন কে? appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement