shono
Advertisement

Breaking News

Murshidabad

মাদ্রাসায় পড়াতেন 'স্যর' আব্বাস, মিস্ত্রি মিনারুল, মুর্শিদাবাদে ধৃত ২ 'জেহাদি' আসলে কারা?

আব্বাস আলির মাদ্রাসায় মাঝেমাঝে যেত মিনারুল, জানিয়েছেন তার স্ত্রী টগরা বিবি।
Published By: Sucheta SenguptaPosted: 08:35 PM Dec 19, 2024Updated: 08:40 PM Dec 19, 2024

কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: কেউ মাদ্রাসা খুলে পড়াত, কারও আবার জীবিকা ছিল জলের কল, ট্রাক্টর সারানো। জাল আধার, পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়া থানা এলাকা থেকে এসটিএফের হাতে ধরা পড়া দুই যুবকের জেহাদি-যোগ নিয়ে এখন সর্বত্র চলছে তুমুল আলোচনা। তাদের সঙ্গে বাংলাদেশের জেএমবি গোষ্ঠীর যোগ মিলেছে বলে প্রাথমিক খবর এসটিএফ সূত্রে। কীভাবে এলাকার দুই নিরীহ যুবক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ল, তা বুঝতেই পারছে না দুই পরিবার।

Advertisement

জাল আধারকার্ড ও পাসপোর্ট চক্রের তদন্তে নেমে অসম পুলিশ, রাজ্য পুলিশের এসটিএফের যৌথ অভিযানে মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ায় অভিযান চালিয়ে ২ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের নাম আব্বাস আলি ও মিনারুল শেখ। পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরলের সঙ্গে অসমে জেহাদির যোগসূত্র পাওয়া যায়। এর আগে নুর ইসলাম নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে অসম পুলিশ। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে হরিহরপাড়ায় দুজনের খোঁজ মেলে। জেএমবি-র সংগঠন সম্প্রসারণ এবং এলাকায় নতুন নিয়োগের মাস্টার মাইন্ড নূর ইসলাম। জেএমবি-র অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে বাংলা ও কেরল সফর করেছে সে।

হরিহরপাড়ার মিনারুলদের বাড়ি এখন শুনশান। নিজস্ব চিত্র।

এদিকে, হরিহরপাড়ার নিশ্চিন্তপুরের বাসিন্দা আব্বাস আলি এবং রুকুনপুরের মিনারুল শেখ গ্রেপ্তার হতেই গ্রামে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, বারুইপাড়া এলাকায় মাদ্রাসা খুলেছিল আব্বাস আলি। সেখানে এলাকার ছাত্রছাত্রীদের একাই পড়াত আব্বাস। এ বিষয়ে এলাকার সমিরউদ্দিন মণ্ডলের বক্তব্য, ''বারুইপাড়া হাটে গত চার মাস ধরে একটি মাদ্রাসা চালাচ্ছিল আব্বাস। এলাকার ছেলেমেয়েদের নিজেই সে পড়াত। ফলে তাকে শিক্ষক বলে সম্বোধন করা হতো। কিন্তু এর পিছনে কী চলছে, সেটা কেউই জানত না।" আব্বাসের স্ত্রী ও মা ঘটনার পর থেকে বাড়িতে নেই। তাঁরা কোথায় গিয়েছেন, সেটা সঠিকভাবে কেউ কিছু বলতে পারেননি। তবে আব্বাস আলি জেএমবির সদস্য বলে জানতে পেরেছে এসটিএফ। তার বাড়ি থেকে বেশ কিছু নথি ও মোবাইল উদ্ধার হয়েছে। এর আগে কয়েকবছর জেলে ছিল আব্বাস বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে, রুকুনপুরের মিনারুল শেখের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পেন ড্রাইভ, হিজবুলের বই, মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে অসম পুলিশ এবং রাজ্য পুলিশের এসটিএফ। মিনারুল ট্রাক্টর, জলের কল এবং বিভিন্ন গাড়ি সারাতে সিদ্ধহস্ত ছিল। যদিও তার গ্রেপ্তারি প্রসঙ্গে এলাকার লোকজন তেমন কিছু জানেন না বলেই দাবি। মিনারুল শেখের মা আসিয়া বিবির বক্তব্য, গভীর রাতে তাঁর বাড়িতে হঠাৎ করে পুলিশ ঢুকে পড়ে তল্লাশি শুরু করে। ছেলে মিনারুলকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বিভিন্ন ঘরে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তবে কী কারণে তল্লাশি, সেটা পুলিশ জানায়নি। বুধবার ভোররাতে মিনারুলকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায় অসম পুলিশ এবং এসটিএফ। মিনারুলের দাদা শামসুল শেখ বলেন, মিনারুল অসুস্থ ছিল। কেন তাকে এভাবে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাওয়া হল, তা তিনি কিছুতেই বুঝতে পারছেন না তিনি।

সন্দেহভাজন বাড়িতে ভোররাতে তল্লাশি অসম পুলিশ, রাজ্য পুলিশের এসটিএফের। নিজস্ব ছবি।

আরও জানা গিয়েছে, আব্বাস আলির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল মিনারুল শেখের। সে মাঝে মাঝে আব্বাসের বারুইপাড়ার মাদ্রাসায় যে বলে জানিয়েছেন মিনারুলের স্ত্রী টগরা বিবি। কিন্তু আব্বাস ও মিনারুল কীভাবে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত হল, সেটা বুঝে উঠতে পারছেন না গ্রামের বাসিন্দারা। মুর্শিদাবাদ জেলা পুলিশ সুপার সূর্য প্রতাপ যাদব বলেন, ''হরিহরপাড়ার মিনারুল শেখ এবং আব্বাস আলিকে গ্রেপ্তার করেছে অসম পুলিশ। তবে ঠিক কী কারণে গ্রেপ্তার, সেটা এখনও জানানো হয়নি।''

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • হরিহরপাড়া থেকে ধৃত দুই যুবকের জঙ্গিযোগ নিয়ে জোরাল সন্দেহ।
  • ধৃতদের একজন মাদ্রাসায় পড়াত, অপরজন মিস্ত্রির কাজ করত বলে জানা গিয়েছে।
Advertisement