সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) মহামারী দেশের অর্থনীতিকে সার্বিকভাবে বড়সড় ধাক্কা দিয়েছে। ভারতের জিডিপি কমতে কমতে বড়সড় সংকোচনের পথে। রিজার্ভ ব্যাংকের নিজস্ব পরিসংখ্যানই বলছে, চলতি বছর দেশের সার্বিক বৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশ পর্যন্ত সংকুচিত হতে পারে। কিন্তু তার বিন্দুমাত্র প্রভাব পড়েনি তথাকথিত ধনকুবেরদের উপর। আসলে করোনাকালে ধনি-গরিবের বৈষম্য আরও বেড়েছে। গরিব না খেতে পেয়ে মরেছে, আর ধনীদের পকেট ভরেছে।
পরিসংখ্যান বলছে, চলতি বছরের রেকর্ড করেছে ভারতের কোটিপতির সংখ্যা। ২০২০ সালে একশো কোটি ডলার সম্পত্তির ক্লাবে ঢুকে পড়েছেন দেশের ৯০ জন ধনকুবের। যা কিনা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ২০১৯ সালে এই সংখ্যাটা ছিল ৮০ জন। অর্থাৎ, এই একবছরে নতুন করে আরও ১০ জন ধনকুবের একশো কোটি ডলারের ক্লাবে ঢুকে পড়েছেন। আর এই ৯০ জন ধনকুবেরের দখলে দেশের একের পাঁচ শতাংশ সম্পত্তি। পরিসংখ্যান বলছে, এই ৯০ জন ধনকুবেরের মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৩৫ লক্ষ ৫৭ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। যা দেশের মোট জিডিপির একের পাঁচ শতাংশ। এই ৯০ জন ধনকুবেরর সম্পত্তিই চলতি বছরে কমবেশি বেড়েছে। অথচ, দেশের জিডিপি (GDP) ঋণাত্মক।
[আরও পড়ুন: ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ সম্পর্কে জনমত তৈরির উদ্যোগ, দেশজুড়ে প্রচারে নামছে বিজেপি]
সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় প্রত্যাশিতভাবেই সবার উপরে রয়েছেন রিলায়েন্স কর্ণধার মুকেশ আম্বানি (Mukesh Ambani)। চলতি বছর তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে ৩৭.২ শতাংশ। এবছর প্রতিদিন নিজের সম্পত্তি ৪৮০ কোটি টাকা করে বাড়িয়ে নিয়েছেন রিলায়েন্স কর্তা। তবে, শতাংশের হিসেবে সম্পত্তি বৃদ্ধিতে মুকেশকে টেক্কা দিয়েছেন গৌতম আদানি (Gautam Adani)। চলতি বছর তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে প্রায় ১০০ শতাংশ। ২,১০০ কোটি ডলার থেকে তা বেড়ে হয়েছে ৪ হাজার কোটি ডলার। এঁরা ছাড়াও ইউপ্রোর আজিম প্রেমজি, এইচসিএলের শিব নাদাররা নিজেদের সম্পত্তি ৫৫-৬৭ শতাংশ বাড়িয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও চলতি বছর সম্পত্তি বেড়েছে এশিয়ান পেইন্টস, সান ফার্মা, ভারতী এয়ারটেলের মতো সংস্থার।
[আরও পড়ুন: মোদি সরকারের জন্যই সন্ত্রাসের পথ ছেড়েছেন উত্তর-পূর্বের যুবরা, দাবি অমিত শাহের]
মহামারীর বছরে যেখানে দেশের একটা বড় অংশের মানুষ চরম দারিদ্রে ঢলে পড়েছে, সেখানে ধনকুবেরদের এই সম্পত্তি বৃদ্ধি চমকপ্রদ তো বটেই। স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে সরকারের নীতি নিয়ে। সম্পদের অসম বণ্টনের জন্যই হয়তো ‘আচ্ছে দিন’ আসছে বড়লোকেদের।