সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শহরাঞ্চলের পাশাপাশি দেশের গ্রামাঞ্চলেও ব্যাপকভাবে ছড়িয়েছে। তাই শহরের অর্থনীতির পাশাপাশি এবার গ্রামীণ অর্থনীতিতেও মন্দার ছোঁয়া। মহামারীর মারে কাজ হারাচ্ছেন হাজার হাজার মানুষ। স্রেফ এক সপ্তাহে গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। শহরেও ছবিটা একই। তবে, করোনা গ্রামীণ অর্থনীতির উপর যে প্রভাব ফেলছে, তা এক কথায় অভাবনীয়।
Centre for Monitoring Indian Economy-নামের একটি সংস্থার করা সমীক্ষা অনুযায়ী, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে (৯ মে যে সপ্তাহ শেষ হয়েছে) দেশের গ্রামাঞ্চলে বেকারত্বের হার ছিল ৭.২৯ শতাংশ। আর দ্বিতীয় সপ্তাহে তা পৌঁছে গিয়েছে ১৪.৩৪ শতাংশে। অর্থাৎ মাত্র ৭ দিনের ব্যবধানে গ্রামীণ ভারতে কর্মহীন হয়েছেন দ্বিগুণ মানুষ। আর শুধু গ্রামাঞ্চলে নয়, শহরাঞ্চলেও একইভাবে বেড়েছে বেকারের সংখ্যা। ১৬ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে বেকারত্বের হার CMIE-র দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ১৪.৭১ শতাংশ। যা আগের সপ্তাহের থেকে ৩ শতাংশ বেশি। দেশের সার্বিক বেকারত্বের হার এই মুহূর্তে ১৪.৪৫ শতাংশ। যা কিনা গত সপ্তাহেই ছিল ৮,৬৭ শতাংশ।
[আরও পড়ুন: যোগীরাজ্যে গুঁড়িয়ে দেওয়া হল মসজিদ, অবৈধ নির্মাণ বলে দাবি প্রশাসনের]
আসলে, করোনা সংক্রমণ এবং লকডাউনের জেরে ভোগ্যপণ্যের চাহিদা ঠেকেছে তলানিতে। ফলস্বরূপ বছর ঘুরতেই আবার বড় আর্থিক ক্ষতির মুখে ক্ষুদ্র, ছোট, মাঝারি ব্যবসায়ীদের বড় অংশ। এই ব্যবসাগুলির সঙ্গে পরোক্ষভাবে জড়িতদের অনেকেরই রোজগার বন্ধ। একটি সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রায় ৭০ লক্ষ মানুষ কর্মহীন হতে পারেন মে মাসে। বেকারত্বের হার হতে পারে গত চার মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ।
[আরও পড়ুন: ১৬০০ নয়, ভোটের ডিউটিতে মৃত্যু মাত্র ৩ শিক্ষকের! যোগী সরকারের ঘোষণায় ক্ষোভ উত্তরপ্রদেশে]
করোনার বড়সড় ধাক্কা লাগতে চলেছে জিডিপি বৃদ্ধির হারেও। বিভিন্ন সংস্থার সমীক্ষা ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার নিয়ে যে সম্ভাবনার কথা জানিয়েছিল, তা ২.৮ শতাংশ পর্যন্ত কম হতে পারে। অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের যে আশা কেন্দ্র দেখেছিল এবং যে লক্ষ্যে লকডাউনকে শেষ হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী, তাও ধাক্কা খেতে চলেছে ব্যাপক ভাবে। পর্যাপ্ত করোনা টিকার অভাব মানুষের মধ্যে তীব্র অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করেছে। ফলে প্রায় সব ক্ষেত্রেই বিনিয়োগ ঠেকেছে তলানিতে। সবমিলিয়ে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে ভারতীয় অর্থনীতির পুনরুজ্জীবনের আশা কার্যত ছেড়েই দিয়েছেন অর্থনীতিবিদরা।