সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: টানা ন’দিন ধরে চলে রাম নবমী। আর দশেরাতে দুষ্টের দমন। রাবণ বধ করতে দেবী দু্র্গার অকাল বোধন ঘটিয়েছিলেন রামচন্দ্র। তাই বিজয়া দশমী এবং দশেরা মিলেমিশে একাকার হয়ে যায়। রাবণের কুশপুতুল জ্বালিয়ে অশুভ শক্তি নাশ করে অশুভ শক্তিকে নির্মূল করা হয়। এমনই চিরাচরিত প্রথা মেনে প্রতিবারের মতো এবারও দেশের প্রতিটি প্রান্তে দশেরা পালন করা হচ্ছে। কিন্তু দশেরা সম্পর্কে কয়েকটি তথ্য হয়তো এখনও অনেকেরই অজানা। এই প্রতিবেদনে থাকল তেমনই কিছু তথ্য।
প্রথমেই আসা যাক, রাবণ ও স্ত্রী মন্দোদরীর কথায়। লঙ্কাপুরীতে রামের হাতে রাবণ বধের পর মন্দোদরীর কী হয়েছিল, তার বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে পুরাণে। পুরাণ মতে, রাবণের মৃত্যুর পর ভগবান রামচন্দ্র রাবণের ভাই বিভীষণকে লঙ্কা সাম্রাজ্যের দায়িত্বভার গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই সঙ্গে মন্দোদরীকে বিয়ের অনুরোধও জানিয়েছিলেন। রামচন্দ্রের প্রস্তাবকে আদেশ হিসেবেই মেনে নেন বিভীষণ।
[মণ্ডপ থেকে মা দুর্গার একান্নটি শাড়ি চুরি, ধৃত যুবক]
দশেরার মাধ্যমে আসলে একইসঙ্গে দুটি সাফল্য উদযাপন করা হয়। প্রথমত, রাবণ বধ করে রামচন্দ্রের জয় এবং দ্বিতীয় মহিষাসুরকে বধ করে দেবী দুর্গার শক্তি প্রতিষ্ঠা। আর এই কারণেই বিজয়া দশমী এবং দশেরা একই দিনে পালিত হয়।
দশেরা কথার অর্থ দশ হারা। অর্থাৎ সূর্যের হার। আর বিজয়া দশমীর অর্থ দশম দিনে বিজয়ী হওয়া।
শোনা যায়, ১৭ শতাব্দী থেকে এ দেশে দশেরা পালিত হয়ে আসছে। মাইসুরুতে অত্যন্ত ধুমধাম করে প্রতিবার এই উৎসব হয়। দেবী চামুণ্ডেশ্বরীকে একটি সোনার পালকিতে বসিয়ে তার সামনে হয় রাবণ বধ।
হিমাচল প্রদেশের কুলুতে দশেরা উপলক্ষে এক সপ্তাহ ধরে চলে উৎসব। দশেরার দিন শুরু হয়ে চলে টানা সাতদিন।
শুধু ভারতেই নয়, দেশের বাইরেও দশেরা এবং বিজয় দশমী উৎসব পালিত হয়। নেপাল এবং বাংলাদেশে যে সংখ্যা নেহাত কম নয়। এমনকী মালয়েশিয়াতেও ধুমধাম করে দুষ্টের দমনের উৎসব পালিত হয়।
[আদিবাসীদের মন্দিরে ‘লাইভ’ মহিষাসুরমর্দিনী, বিচারের ভূমিকায় নরসিংহ মূর্তি]
শুধুমাত্র হিন্দুদের জন্য নয়, দশেরা এবং বিজয়া দশমীর দিনটি বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কথিত আছে, সম্রাট অশোক এই বিশেষ দিনেই বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন। তারপর থেকেই ভারত তথা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার করেন অশোক। যার পর এই ধর্মে গ্রহণ করেছিলেন অনেকেই।
পুরাণ মতে, দশেরার দিনই বর্ষাকাল বিদায় নেয়। আসে শীতকাল। দশেরার পর থেকেই কৃষকরা খারিফ শস্যের চাষ করেন। আর দীপাবলির পর রবি শস্য বোনা শুরু হয়।
The post জানেন, রাবণের মৃত্যুর পর মন্দোদরীর কী হয়েছিল? appeared first on Sangbad Pratidin.