সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: দুর্গাপুর (Durgapur) ‘মিশন’ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের সমস্ত ক্যাশলেস সুবিধা বাতিল করল রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থা। চরম বিপাকে কর্পোরেট বিমা সংস্থার সুবিধাপ্রাপ্ত হাজার হাজার রোগী। সেইল, ইসিএল, ইন্ডিয়ান অয়েল-সহ একাধিক রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্পোরেট বিমা সংস্থার ক্যাশলেস সুবিধা পান তাদের কর্মীরা। আর এই ক্যাশলেস পরিষেবার মাধ্যমেই হাজার হাজার গ্রাহকের চিকিৎসার সুবন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু বিমা সংস্থাগুলির অভিযোগ, ইচ্ছাকৃতভাবে বিমা সংস্থার বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট খরচের চেয়ে বেশি বিল করছে এই হাসপাতাল। লকডাউনের সময় থেকে এই প্রবণতা বেড়েছে। তাই ক্ষুব্ধ হয়ে তা বাতিল করল বিমা সংস্থাগুলি।
দুর্গাপুরের সুপার স্পেশ্যালিটি ‘মিশন’ হাসপাতালে মাস দুয়েক ধরেই সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার (Health insurance) ক্যাশলেস সুবিধা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সেইলের ডিএসপি ও অ্যালয় স্টিল প্ল্যান্টের হাজার হাজার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী ও তাঁদের স্ত্রীরা এই ক্যাশলেস সুবিধা পান। তার জন্যই এই বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর প্রবণতা বেশি। কিন্তু ক্যাশলেস সুবিধা বাতিল হওয়ায় এখন হাসপাতালে ভরতি হলেই মোটা টাকা গুনতে হচ্ছে তাঁদের। এর ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বিশেষত প্রবীণ নাগরিকরা। চিকিৎসার স্বার্থে ছুটতে হচ্ছে অন্য হাসপাতালে। জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের অন্যান্য বেসরকারি হাসপাতালে এখনও বিমার সুবিধা থাকলেও শুধুমাত্র ‘মিশন’ হাসপাতালের ক্ষেত্রেই এই সুবিধা প্রত্যাহার করেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাগুলি।
[আরও পড়ুন: বহুতলের ছাদ থেকে ট্যাঙ্ক মাথায় পড়ে ফরিদাবাদে মৃত্যু মুর্শিদাবাদের শ্রমিকের, শোকস্তব্ধ এলাকা]
কিন্তু আচমকা কেন এই সিদ্ধান্ত? বিমা সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, তাদের তরফে নির্দিষ্ট করে দেওয়া চিকিৎসা খরচের বেশি অঙ্কের বিল করছে দুর্গাপুরের জনপ্রিয় মিশন হাসপাতাল। আরও অভিযোগ, অনেক সময়ে কলকাতার হাসপাতালগুলির থেকেও রোগী পিছু বেশি খরচ দেখাচ্ছে মিশন। লকডাউনের সময় থেকে এই বিল বৃদ্ধির প্রবণতা অতিমাত্রায় বেড়েছে বলেই বিমা সংস্থাগুলির দাবি। আর এই ‘অবৈধ’ খরচ রুখতেই ক্যাশলেস সুবিধা আপাতত বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থা।
[আরও পড়ুন: ভোটের আগে বর্ধমানে বিজেপি যুব মোর্চায় ভাঙন, পদ পাওয়ার পরেও দল ছেড়ে তৃণমূলে ৪ নেতা]
এক রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থার দুর্গাপুরের ডিভিশনাল ম্যানেজার সুমন পাল জানান, “সমস্ত রাষ্ট্রায়ত্ত বিমা সংস্থাই মিশন হাসপাতাল থেকে এই সুবিধা প্রত্যাহার করেছে। অতিরিক্ত বিলের জন্যেই এই সিদ্ধান্ত।” তবে ফের এই সুবিধা চালু করতে বিমা সংস্থার বিভিন্ন ‘থার্ড পার্টি অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (টিপিএ) এর সঙ্গে আলোচনা চলছে বলে জানা গিয়েছে। এই বিষয়ে মিশন হাসপাতালের মেডিকেল সুপার পার্থ পাল জানান,” বিভিন্ন কারণে এই সমস্যা হয়েছে। সমস্যার দ্রুত মেটাতে আলোচনা চলছে।” তবে কবে তা মিটবে, ঠিক নেই। ফলে ততদিন পর্যন্ত মোটা অঙ্কের চিকিৎসার খরচের বোঝা বয়ে বেড়াতে হবে সাধারণ নাগরিককেই।