সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তেলিনিপাড়ায় অশান্তির জের। সোশ্যাল মিডিয়ায় হু হু করে ছড়াচ্ছে গুজব। পরিস্থিতি সামাল দিতে তাই বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট। চন্দননগর, ভদ্রেশ্বর, সিঙ্গুর, হরিপাল, তারকেশ্বর, শ্রীরামপুর, রিষড়া, উত্তরপাড়া, ডানকুনি, চণ্ডীতলা, জাঙ্গিপাড়ায় বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট পরিষেবার। আগামী ১৭ মে পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর থাকবে।
রবিবার সন্ধ্যায় ভদ্রেশ্বরের তেলিনিপাড়ায় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে তুমল গন্ডগোল হয়। বিভিন্ন বাড়ি লক্ষ্য করে ইট ও পাথর ছোঁড়া পাশাপাশি বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুরের পাশাপাশি সোনার দোকানে লুটপাট চলে বলেও অভিযোগ ঘটে। এরপর সোমবার সকাল থেকেই বিষয়টি নিয়ে শুরু বিজেপি ও তৃণমূলের তরজা। বিজেপির পক্ষ থেকে স্থানীয় এক তৃণমূল কাউন্সিলরের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলা হয়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি দেখতে চাইলে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়কে বাধা দেয় পুলিশ। এর জেরে নতুন করে উত্তেজনাও ছড়ায়। মঙ্গলবার সকাল থেকে এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। দফায় দফায় বোমাবাজি, ভাঙচুর হচ্ছে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে। এই মর্মে বঙ্গ বিজেপির একটি প্রতিনিধি দল রাজ্যপালের কাছে সরকার ও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘সবাইকে ফেরাতে বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা হচ্ছে’, আসানসোলবাসীকে আশ্বাস সাংসদ বাবুলের]
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সাংবাদিক বৈঠকে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন মমতা। বলেন,”একজন হিন্দুর আঘাত লাগলেও আমার কষ্ট হবে, একজন মুসলিমের লাগলেও কষ্ট হবে। বাংলায় সবাই আমার কাছে সমান। এখানে সব ধর্মকে সম্মান করা শেখানো হয়। এসব নিয়ে রাজনীতি কোনওদিন করিনি, করবও না। কিন্তু কয়েকজন আছে এইসময়ও রাজনীতি করে। হিন্দু-মুসলিম করে। আপনাদের লজ্জা লাগে না। বাংলার বদনাম আপনাদের গায়ে লাগে না। কেমন মানসিকতা আপনাদের?” এরপরই তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যারা লকডাউন ভেঙে রাস্তায় বেরিয়ে দাঙ্গা করছে, সে যে সম্প্রদায়েরই হোক পুলিশকে বলেছি কঠোর ব্যবস্থা নিতে। কাউকে ছাড়া হবে না। প্রয়োজনে মহামারি আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এসব বরদাস্ত করা হবে না।”
এরপর সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রুখতে মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে চন্দননগর এবং শ্রীরামপুর মহকুমায় ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে হুগলি জেলা প্রশাসন। এ দিন এই মর্মে নির্দেশিকা জারি করেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। রাতে তিনি জানিয়েছেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়াচ্ছে তেলিনিপাড়া সংঘর্ষের ছবি, ভিডিও। কিছু সমাজবিরোধী ইন্টারনেটের মাধ্যমে গুজব ছড়াচ্ছে। তা রুখতেই প্রশাসন আপাতত ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০০০ সালের তথ্যপ্রযুক্তি আইন অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৭ মে পর্যন্ত এই নির্দেশ কার্যকর। ভোডাফোন, জিও, বিএসএনএল, আইডিয়া, এয়ারটেল, টাটা টেলি সার্ভিস-সহ সমস্ত কেবল টিভির ইন্টারনেট সংযোগও বিচ্ছিন্ন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংস্থাগুলিকে।
[আরও পড়ুন: ‘পাগলি’ বলার শাস্তি! কিশোরকে অপহরণ করে খুনের পর গুহায় লুকানো হল দেহ়
The post তেলিনিপাড়া হিংসা নিয়ে গুজব রুখতে ব্যবস্থা, হুগলিতে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা appeared first on Sangbad Pratidin.