জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: প্রায় এক বছর আগে ভিটেমাটি ছেড়ে নদীপথে এদেশে এসেছিলেন বেশ কয়েকজন। তার মধ্যে কয়েকজন মোটা টাকা খসিয়ে বানিয়ে ফেলেছেন এ দেশের পরিচয়পত্র। কেউ কেউ অবশ্য পকেট খালি করেও পরিচয়পত্র জোগার করতে পারেননি। তবে এ রাজ্যে কাজ জুটিয়ে ফেলেছিলেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতি বদলাতেই এবার সে দেশে ফিরতে চান সইফুলরা। সোমবার পেট্রাপোল সীমান্তের কাছে শুভেন্দু অধিকারীর সভার কাছ থেকে এমনই একজনকে আটক করল পুলিশ।
বাংলাদেশের মদনপুর মহেশপুর ঝিনেদা এলাকার বাসিন্দা সইফুল ইসলাম। বয়স ২৬ বছর। জানা গিয়েছে, এক বছর আগে সোশাল মিডিয়া মারফত পরিচয় হওয়া এক ব্যক্তির সাহায্যে পাসপোর্ট-ভিসা ছাড়াই নদীপথ পেরিয়ে এ দেশে এসেছিলেন। বেসরকারি সংস্থায় কাজও জুটিয়ে ফেলেছিলেন। কিন্তু এবার বাড়ি ফিরতে চান তিনি। সইফুলের দাবি, বর্তমান পরিস্থিতিতে তিনি আতঙ্কিত। প্রয়োজনে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে দেশে ফেরার জন্য উদগ্রীব। সেখানে পরিবার রয়েছে, তাঁদের কাছে ফিরতে চাইছেন। পরিবারের কাছে ফিরতে সমস্ত লড়াইয়ের জন্যও তিনি প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন। এদিন সীমান্তরক্ষী বাহিনী এবং পুলিশ আধিকারিকদের একেবারে ঢিল ছোড়া দূরত্বে শুভেন্দু অধিকারীর সভার সামনে দাঁড়িয়ে যুবকের এমন স্বীকারোক্তিতে রীতিমতো শোরগোল পড়ে যায় গোটা এলাকায়।
তিনি একা নন, তাঁর মতো অবৈধভাবে আরও অন্তত ২৫ জন এ দেশে এসেছেন বলে দাবি করেছেন সইফুল। তাঁদের মধ্যে অনেকেই এই দেশের পরিচয় পত্র বানিয়ে নিলেও, অনেকেই বানাতে পারেননি। বিষয়টি জানাজানি হতেই তাঁকে আটক করে পুলিশ।
তবে গোটা বিষয়টিক নেপথ্যে অন্য গন্ধ পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। তাদের দাবি, শেখ হাসিনার আমলে বাংলাদেশে মৌলবাদী, জেহাদিদের রমরমায় লাগাম পরেছিল। ফলে অনেকেই বিভিন্ন পথে এ দেশে অনুপ্রবেশ করে রীতিমতো সংসার পেতে বসেছিল। বর্তমানে সীমান্তের ওপারের পরিস্থিতি বদলেছে। জেল থেকে রেহাই পাচ্ছে জেহাদিরা। এই 'খোলা হাওয়া'য় গা ভাসাতে চাইছে এ দেশে ঘাঁটি বানানো জেহাদিরাও। তাই যে কোনও মূল্যে বাংলাদেশে ফিরতে চায় তারা। সইফুলও তাদের মধ্যে একজন কি না তা খতিয়ে দেখার দাবি উঠতে শুরু করেছে।