অর্ণব আইচ: পার্ক স্ট্রিটের মির্জা গালিব স্ট্রিটে গুলি চালানোর পিছনের বেআইনি কল সেন্টার ঘিরে তোলাবাজিই। প্রাথমিক তদন্তে এমনই ধারণা লালবাজারের গোয়েন্দাদের। এই গুলি চালানোর ঘটনার মূল অভিযুক্ত মহম্মদ ফইউদ্দিন ওরফে সোনা ২০০১ সালে খাদিমকর্তা পার্থ রায়বর্মন অপহরণের ঘটনার অভিযুক্ত ছিল বলে জানা গিয়েছে। পূর্ব কলকাতার কুখ্যাত গ্যাংস্টার গব্বরের সঙ্গে সঙ্গে একসময় সোনার নামও উচ্চারিত হত। খুনের অভিযুক্ত সোনা এখন নিজেও বিভিন্ন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হলেও লালবাজারের গোয়েন্দাদের ধারণা, তিলজলা অঞ্চলে বেআইনি কল সেন্টার চালানোয় মদত দেওয়া ও কল সেন্টার থেকে তোলাবাজি নিয়েই তার সঙ্গে গুলিতে আহত রাকিবের মূল গোলমাল।
আপাতত গা ঢাকা দেওয়া সোনা বিহারে পালিয়েছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না পার্ক স্ট্রিট থানার পুলিশ ও লালবাজারের গোয়েন্দা আধিকারিকরা। কারণ, বিহার দ্বারভাঙায় সোনার আসল বাড়ি। তার শ্বশুরবাড়ি বিহারের সাসারামে। ওই দুই জায়গায়ই তার সম্পত্তি রয়েছে বলে পুলিশের কাছে খবর। সোনার সন্ধানে যেন কলকাতা ও তার আশপাশের অঞ্চলে তল্লাশি চলছে, তেমনই তাকে খুঁজতে বিহারেও পুলিশের টিম গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: ‘বিয়ে পাগলা বুড়ো’! পাকিস্তানে ১২ বছরের মেয়েকে বিয়ে করতে গিয়ে গ্রেপ্তার ৭২-এর বৃদ্ধ]
পুলিশের সূত্র জানিয়েছে, তিলজলার কুখ্যাত গ্যাংস্টার রশিদ আলম ওরফে গব্বর তার শ্যালক ফইউদ্দিন ওরফে সোনাকে সঙ্গে নিয়েই গ্যাং তৈরি করে। তার আগে মধ্য কলকাতার কুখ্যাত গ্যাংস্টার রিপন স্ট্রিটের আখতার মেহমুদের দলে ছিল সোনা। পরে গব্বর ও সোনার গ্যাং মধ্য কলকাতা, পূর্ব কলকাতা ও দক্ষিণ কলকাতায় দাপিয়ে বেড়াতে শুরু করে। খুন, খুনের চেষ্টা, অপহরণ, মাদক পাচার, প্রোমোটিং ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে তোলাবাজিতে গব্বর-সোনার গ্যাং সিদ্ধহস্ত। ১৯৯৭ সালে বাদশা ও ১৯৯৮ সালে সাদিক খুনের অভিযোগে সোনা গ্রেপ্তারও হয়েছিল। তিলজলায় বান্টি খুনের ঘটনায় ২০০১ সালের ডিসেম্বরে গব্বর গ্রেপ্তার হয়। তার আগেই সোনা তিলজলার চুন্নু মিঞার গ্যাংয়ে যোগ দেয়।
গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, সোনার মদ বা মহিলার প্রতি কোনও আসক্তি ছিল না। শুধু টাকা রোজগারের নেশা ছিল তার। মাদক ও তোলাবাজির ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে তার সঙ্গে গব্বরের গোলমাল হয়। তিলজলার সাপগাছি লেনকে কেন্দ্র করে নিজের সাম্রাজ্য গড়ে তোলে সোনা। ওই সময়ই তার বেশ কয়েকটি গাড়ি ছিল। সোনা পার্থ রায়বর্মন অপহরণের ঘটনার অভিযুক্ত। তিলজলায় তাঁর যাতায়াতের পথের উপর নজরদারির দায়িত্বে ছিল সোনা। অপহরণের পর সোনা এলাকা থেকে উধাও হয়ে যায়। ২০০১ সালের ৩১ ডিসেম্বর চুন্নু তথা গব্বরের সঙ্গী সোনাকে পুলিশ ফের গ্রেপ্তার করে। ফের তাকে গ্রেপ্তারের জন্য খোঁজা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।