সানরাইজার্স হায়দরাবাদ: ২০১/৩ (নীতীশকুমার অপরাজিত ৭৬, ট্রাভিস হেড ৫৮, আবেশ খান ৩৯/২)
রাজস্থান রয়্যালস: ২০০/৭ (যশস্বী জয়সওয়াল ৬৭, রিয়ান পরাগ ৭৭, ভুবনেশ্বর ৪১/৩)
১ রানে জয়ী হায়দরাবাদ।
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এরই নাম ক্রিকেট। চার-ছক্কার আধিক্যে আইপিএলে ক্রিকেটের কৌলিন্যই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, এমন অভিযোগ বিশুদ্ধবাদীদের। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাজস্থান-হায়দরাবাদ ম্যাচে ব্যাট ও বলের এক চমৎকার সহাবস্থান দেখা গেল। শেষপর্যন্ত ভুবনেশ্বরের বোলিংয়ে ভর করে যেভাবে হায়দরাবাদ জিতল তা ফের বুঝিয়ে দিয়ে গেল, ফর্ম্যাট যাই হোক না কেন ক্রিকেট সব সময়ই 'গ্লোরিয়াস গেম অফ আনসার্টেনটি'। ব্যাটারদের রাজত্বে ফের বোলারদের পতাকা উঁচু করে তুলে ধরলেন অভিজ্ঞ এক ভারতীয় সুইং বোলার।
এদিন টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল হায়দরাবাদ (Sunrisers Hyderabad)। লিগ টেবিলের শীর্ষে থাকা রাজস্থান রয়্যালসের (Rajasthan Royals) বিরুদ্ধে শুরুটা ভালো হয়নি প্যাট কামিন্সদের। ৩৫ রানে দুই উইকেট হারায় তারা। খেলা ততক্ষণে গড়িয়ে গিয়েছে ষষ্ঠ ওভারে। কিন্তু হেডের সঙ্গে জুটি গড়ে নীতীশ খেলা ঘুরিয়ে দেন। করেন অপরাজিত ৭৬। অন্যদিকে ট্রাভিস হেড করেন ৫৮। পরে চমৎকার খেলে দেন হেইনরিখ ক্লাসেন। ১৯ বলে ৪২ করে অপরাজিত থাকেন তিনিও। ফলে ২০০ পেরতে সমস্যা হয়নি হায়দরাবাদের। এদিন বলা হাতে জঘন্য পারফরম্যান্স করলেন চাহাল। সদ্য টিটোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুযোগ পাওয়া স্পিনার তাঁর চার ওভারে দিলেন ৬২ রান! বাকিদের কেউই যেখানে ওভারপিছু গড়ে ১০ রানও দেননি, সেখানে তিনি দিলেন ১৫ রানেরও বেশি।
[আরও পড়ুন: রাহুলের প্রশংসা পাক নেতার! ‘শাহাজাদাকে প্রধানমন্ত্রী করতে মরিয়া পাকিস্তান’, খোঁচা মোদির]
হাতে ২০০ রান নিয়ে দুরন্ত শুরু করে হায়দরাবাদ। প্রথম ওভারেই চমকে দেন বহু যুদ্ধের ঘোড়া ভুবনেশ্বর কুমার। দ্বিতীয় বলে বাটলারকে ফিরিয়ে পঞ্চম বলেই সঞ্জু স্যামসনকেও ফেরান ভুবি। এভাবে দুটি দামি উইকেট পড়ে যাওয়ার ফলে নিশ্চিত ভাবেই চাপ বেড়ে গিয়েছিল মরুশহরের দলের উপরে। পর পর চারটি ম্যাচ জিতে গিয়েছিল রাজস্থান। এদিন জিতলে কার্যতই পরিষ্কার হয়ে যেত নকআউটের আসন। কিন্তু শুরুতেই পর পর উইকেট হারানোয় হারের জুজু দেখতে থাকেন দলের সমর্থকরা। যদিও অচিরেই লড়াইটা বিপক্ষ শিবিরে পৌঁছে দেন যশস্বী জয়সওয়াল ও রিয়ান পরাগ। প্রথমজন ৩০ বলে এবং দ্বিতীয়জন ৩১ বলে অর্ধশতরান পান। তাঁদের পার্টনারশিপ জমে যাওয়ার পর কার্যতই অসহায় দেখাচ্ছিল হায়দরাবাদকে। কে জানত ইনিংসের শুরুতে শুরুতে জাদু দেখানো ভুবি ওস্তাদের মার দেখা যাবে শেষ রাতেও!
অতিরিক্ত অ্যাডভেঞ্চারার্স হতে গিয়ে যশস্বী বোল্ড না হলে এই খেলায় রাজস্থান হারে না। ৪০ বলের ইনিংসে ৭টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কা হাঁকিয়ে ৬৭ করে ম্যাচের ভিত গড়ে দিয়েই যান ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন তারকা। তিনি আউট হওয়ার এক বল পরেই ছক্কা মেরে পরাগ যেন বুঝিয়ে দিতে চাইছিলেন এবার দলের ইনিংসের রাশ তাঁর হাতে। কিন্তু তুলে মারতে গিয়েই শেষপর্যন্ত লং অনে ধরা পড়েন তিনিও (৭৭)। ম্যাচের সর্বোচ্চ স্কোরার মারেন ৮টি বাউন্ডারি ও ৪টি ছক্কা। আর এর পরই খেলা ক্রমশই ঝুঁকতে থাকে হায়দরাবাদের দিকে। ম্যাচের ১৭তম ওভারে দুরন্ত বল করে নটরাজন ম্যাচটিকে কার্যতই ৫০-৫০ পরিস্থিতিতে এনে ফেলেন। ধ্রুব জুড়েল আউট হন পরের ওভারের শুরুতেই। প্যাডের উপরে আসা বলে যে শট মেরে তিনি আউট হলেন তা নিয়ে কোনও নিন্দাই যথেষ্ট বলে মনে হয় না। বিশেষ করে একজন উদীয়মান তারকার কাছ থেকে ম্যাচের ওই পরিস্থিতিতে ওরকম শট আশাই করা যায় না। একেবারে শেষ ওভারে ভুবনেশ্বর কুমার যখন বল করতে এলেন তখন পরিস্থিতি একেবারে টেনশনে ভরপুর। ৬ বলে ১৩। সেখান থেকে ৩ বলে ৬। শেষে ১ বলে বাকি ছিল ২। আর সেই বলেই আউট পাওয়েল। লেগ-মিডলে নেমে আসা ফুলটস ফ্লিক করতে গিয়ে ফসকান তিনি। ভুবনেশ্বরের সেই ম্যাজিক-বলের দৌলতে দুরন্ত জয় পেয়ে যায় হায়দরাবাদ।