স্টাফ রিপোর্টার: হালফিলের ক্রিকেট দুনিয়া যতই সোশ্যাল মিডিয়া নির্ভর হোক। যতই প্রিয় ক্রিকেটারের নাক চুলকানো থেকে শুরু করে ব্রেকফাস্ট মেনু এক মিনিটে সোশ্যাল মিডিয়ায় আপনি দেখতে বা জানতে পেরে যান। এটাও বাস্তব যে, সোশ্যাল মিডিয়া অধিকাংশ সময়ই ভ্রমাত্মক। টিমের সত্যিকারের অবস্থা কী, অধিকাংশ সময়ই তা বলে না। আর তাই কেকেআরের (KKR) ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইল বা ফেসবুক পেজ দেখে সব কিছু ধ্রুব সত্য ধরে নিলে ভুগতে হবে।
এই যেমন রবিবার। নাইট রাইডার্স ইনস্টাগ্রামে ক্রিকেটারদের ওয়াটার ফুটবল খেলার ভিডিও আপলোড করে দেওয়া হল। ক্রিকেটাররা সব বল নিয়ে সুইমিং পুলে দাপাদাপি করছেন। ছুটোছুটি করছেন। দেখলে কে বলবে, টানা হারে টিমটা বিপর্যস্ত? দিল্লি-হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে কুৎসিত হারের পর মুখ চুন করে এঁরাই, এই ক্রিকেটাররাই ড্রেসিংরুমে বসেছিলেন? লিগ টেবল বলছে, ছয় ম্যাচ খেলে কেকেআরের পয়েন্ট জয় ছয়, হার ছয়। লিগ টেবলে পজিশনও তাই–ছয়! কিন্তু যেটা বলছে না তা হল, সোমবার যদি অমিত শক্তিধর রাজস্থান রয়্যালসের কাছে আবার হারতে হয়, তা হলে বিপত্তি আরও বাড়বে। কারণ তখন, প্রথম সাতটা ম্যাচে জয়ের সংখ্যা দাঁড়াবে তিন, হার চার। এটা অনস্বীকার্য যে, অতীতে এর চেয়েও খারাপ অবস্থা থেকে প্রত্যাবর্তন করে আইপিএল (IPL) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কেকেআর। গত বার টিমটা ফাইনাল খেলেছে প্রথম সাত ম্যাচে দুই জয়ের দুর্দশা থেকে। প্রশ্ন একটাই, রূপকথা বারবার হয় তো?
[আরও পড়ুন: আইপিএলের টান, খেলা দেখতে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে ঢুকল বাংলাদেশি যুবক, তারপর…]
আর তাই, সোমবারের রাজস্থান যুদ্ধ নাইটদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়, মহাগুরুত্বপূর্ণ। আর এই রাজস্থান কিন্তু অতীতের নড়বড়ে রাজস্থান নয়। সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) রাজস্থান এবারের আইপিএলের অন্যতম সেরা টিম, যারা প্রতিপক্ষের ‘রক্তপাত’ ঘটানোর সব রকম ক্ষমতা রাখে। জস বাটলার, সঞ্জু স্যামসন, শিমরন হেটমায়ার, দেবদূত পারিক্কল, ট্রেন্ট বোল্ট, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, যুজবেন্দ্র চাহাল–কে নেই টিমটায়? টিম তো নয়, নক্ষত্রপুঞ্জ যেন! রাজস্থানের (Rajasthan Royals) বিরুদ্ধে নামার আগে কেকেআরের সহকারী কোচ অভিষেক নায়ারের গলাটা কেমন শুকনোও শোনাল। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে হারা ম্যাচ থেকে পাওয়া ইতিবাচক ব্যাপারস্যাপার নিয়ে বলছিলেন অভিষেক। “ব্রেবোর্নে সে দিন ব্যাট করা সহজ ছিল না। তবু আমাদের টিম লড়েছে। শ্রেয়স ভাল খেলেছে। নীতীশ রানা ভাল খেলেছে। টপ অর্ডারের দু’জনের রান পেয়ে যাওয়াটা ভাল ব্যাপার,” বললেন নায়ার। সব ঠিক আছে। কিন্তু গলায় যথেষ্ট জোর কোথায়, জোর?
[আরও পড়ুন: আইপিএল চলাকালীন চোট পেলে কি চুক্তির পুরো টাকা পান ক্রিকেটাররা? কী বলছে নিয়ম?]
তার মধ্যে যত জল্পনার আবির্ভাব। টিম হারতে শুরু করলেই যা অবধারিত ভাবে ঘিরে ধরে। শোনা গেল, কেকেআরের থিঙ্কট্যাঙ্কের দুই অতীব গুরুত্বপূর্ণ সদস্যের মধ্যে নাকি সম্পর্ক হালফিলে ভাল নয়। প্রায়শই নাকি লেগে যাচ্ছে। যা দেখে টিমের সিনিয়র সদস্যদের কেউ কেউ বেশ আশঙ্কিত। তাঁদের নাকি মনে হচ্ছে, টিমের পরিবেশ ভাল না হলে মাঠে গিয়ে ভাল পারফর্ম করা সম্ভব কী করে? টিমের স্ট্র্যাটেজিও ঘোরতর প্রশ্নের মুখে পড়ছে। এক, প্যাট কামিন্স (Pat Cummins) এখনও পর্যন্ত বারো ওভার মতো বল করে দেড়শোর কাছাকাছি রান দিয়েছেন। তিনি আসার সঙ্গে সঙ্গে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল টিম সাউদিকে (Tim Southee)। যিনি উমেশ যাদবের সঙ্গে জুটি বেঁধে দারুণ বোলিং করছিলেন। দুই, ভেঙ্কটেশ আইয়ার পারছেন না দেখেও কেন সুনীল নারিনকে ওপেনিংয়ে ফেরত পাঠানো হচ্ছে না? পাওয়ার প্লে-তে ধুঁয়াধার ব্যাটিং কী করে করতে হয়, যিনি জানেন। প্রথম প্রশ্নের উত্তর তবু আছে। শোনা গেল, কামিন্সকে বসিয়ে রাজস্থানের বিরুদ্ধে খেলানো হতে পারে সাউদিকে। কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর এখনও নেই।
আজ আইপিএলে
কেকেআর বনাম
রাজস্থান রয়্যালস
ব্রেবোর্ন, সন্ধে ৭.৩০
স্টার স্পোর্টস