সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্যাট কামিন্সকে বড়ই ফুরফুরে দেখাচ্ছে। নিলামে যে দুই অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারদের সর্বকালীন অঙ্ক দিয়ে কিনেছিল দুই ফ্র্যাঞ্চাইজি, সানরাইজার্সের কামিন্স তাঁদের একজন। সাড়ে কুড়ি কোটি টাকা খরচ করে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH) তাঁকে কিনেছিল গত নিলাম থেকে। প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছিল, কামিন্সই হয়তো আইপিএলের সর্বকালীন রেকর্ড সৃষ্টি করে গেলেন। কিন্তু দ্রুতই তাঁর থেকে আইপিএল ইতিহাসের সবচেয়ে দামী ক্রিকেটারের তাজ ছিনিয়ে নিয়ে যান তাঁরই স্বদেশীয় মিচেল স্টার্ক! যাঁকে ২৪.৭৫ কোটি টাকা দিয়ে কেনে কেকেআর। তা, চলতি আইপিএল মরশুম স্টার্কের দারুণ আহামরি কিছু যায়নি। যতই ১২ ম্যাচে ১২ উইকেট নিন বাঁ হাতি অস্ট্রেলীয় পেসার, ম্যাচের উপর প্রভাব বিচারে তাঁর নাইট সতীর্থ সুনীল নারিন কিংবা বরুণ চক্রবর্তীর আশেপাশে তিনি নেই। সেখানে কামিন্স অনেকাংশে বেশি সফল। ১৩টা ম্যাচ খেলে ১৫টা উইকেট নিয়েছেন। দারুণ নেতৃত্ব দিয়ে টিমকে লিগ টেবলে দু’নম্বর করে দিয়েছেন। এবং পাকেচক্রে, মঙ্গলবার আমেদাবাদে আইপিএলের (IPL 2024) প্রথম কোয়ালিফায়ারে কেকেআর (KKR) বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ছাপিয়ে অনেক বেশি করে যেন এই দুই সতীর্থ অস্ট্রেলীয়-র লড়াই।
[আরও পড়ুন: আইপিএল যেন ভারতের হয়ে খেলার শর্টকাট না হয়, বোর্ডকে সাবধানবাণী গম্ভীরের]
সাড়ে কুড়ি কোটি বনাম পৌনে পঁচিশ কোটি!
এটা ঘটনা যে, আইপিএলে কে কবে ভালো করবে, কে কবে জিতবে, কিছুই বলা যায় না। কিন্তু কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে, আমেদাবাদে স্পিন সহায়ক পিচ যদি না হয়, তা হলে কেকেআরের বিরুদ্ধে আজ কিছুটা এগিয়ে শুরু করবে সানরাইজার্স। এমনিতে দেখতে গেলে, শক্তি বিচারে দুটো টিম উনিশ-কুড়ি। ব্যাটিং শক্তি প্রায় সমান-সমান। সানরাইজার্সে ট্রাভিস হেড, অভিষেক শর্মা, হেনরিক ক্লাসেন, নীতীশ রেড্ডিরা থাকলে কেকেআরে রয়েছেন সুনীল নারিন, ভেঙ্কটেশ আইয়ার, আন্দ্রে রাসেল, রিঙ্কু সিংরা।
পেস বিভাগে সানরাইজার্স কিছুটা এগিয়ে। তাদের হাতে কামিন্স, ভুবনেশ্বর কুমার, টি নটরাজনের মতো পেসার রয়েছে। কেকেআর আবার স্পিন বিভাগে কয়েক মাইল এগিয়ে। নাইটদের ঝামেলা দুটো। এক, শেষ দুটো ম্যাচ তারা মাঠে নেমে একটা বলও খেলতে পারেনি। গুজরাত টাইটান্স ও রাজস্থান রয়্যালসের বিরুদ্ধে কেকেআরের শেষ দুটো ম্যাচ বৃষ্টিতে ধুয়ে গিয়েছে। অর্থাৎ, ছন্দপতন কিছুটা হলেও হয়েছে। সেখানে সানরাইজার্স গতকালই (রবিবার) পাঞ্জাব কিংসকে দুরমুশ করে গ্রুপে দু’নম্বর হয়ে শেষ করেছে। যার পর উচ্ছ্বসিত ক্যাপ্টেন কামিন্স বলে দিয়েছেন, “পাঞ্জাব ২২০ করেছিল। যা যথেষ্ট ভালো স্কোর। কিন্তু আমাদের ছেলেরা রানটা ঠিক তুলে দিল। পাওয়ার প্লে-তে অভিষেক, রাহুল ত্রিপাঠিরা আশি রানের কাছাকাছি তুলে দেয়। তার পর ক্লাস (ক্লাসেন) আর নীতীশ (রেড্ডি) একটা ভালো পার্টনারশিপে খেলাটা শেষ করে দিল।”
বিশ্বজয়ী অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ককে উদ্বেল দেখানোই স্বাভাবিক। কারণ, সানরাইজার্স অনায়াসে ২২০ তাড়া করেছে প্রথম বলে ট্রাভিস হেড বোল্ড হয়ে যাওয়ার পরেও! কেকেআরের দ্বিতীয় সমস্যা, ফিল সল্টের ফিরে যাওয়া। গোটা মরশুম জুড়ে নাইট ব্যাটিংকে ধুন্ধুমার একটা শুরু দিয়েছেন সল্ট।
কিন্তু ইংল্যান্ডের হয়ে সিরিজ খেলতে তিনি দেশে ফিরে যাওয়ায় ওপেনিং জুটি বদলাতে বাধ্য হয়েছে কেকেআর। কিন্তু তাঁর জায়গায় যাঁকে খেলানোর কথা ভাবা হচ্ছে, সেই রহমনুল্লাহ গুরবাজ কী অবস্থায় রয়েছে, দেখতেই পারেনি কেকেআর। কারণ, গত দু’টো ম্যাচে একটা বলও খেলা হয়নি যে!
সোমবার রাতের দিকে আমেদাবাদ ঢুকল কেকেআর। মাঠে যাওয়ার কোনও ব্যাপারই ছিল না এ দিন। অর্থাৎ, ম্যাচ কিংবা প্র্যাকটিস সেশন না করেই মাঠে নামতে হবে কেকেআরকে। তবে যেহেতু কেকেআর প্রথম দুইয়ে শেষ করেছে, তাই কোনও কারণে মঙ্গলবার হেরে গেলেও ফাইনালে যাওয়ার আরও একটা সুযোগ তারা পাবে।
এর আগে গুজরাট টাইটান্স ও কেকেআর ম্যাচ ছিল এই আহমেদাবাদেই। সেই ম্যাচ বৃষ্টির জন্য ভেস্তে গিয়েছিল। ফের আহমেদাবাদে কেকেআর নামছে। কলকাতা শিবিরেরই দুটো ম্যাচ ভেস্তে গিয়েছে বৃষ্টিতে। একটি গুজরাটের বিরুদ্ধে, অন্যটি রাজস্থান রয়্যালসের সঙ্গে। আহমেদাবাদে আজ যদি বৃষ্টির জন্য ম্যাচ ভেস্তে যায়, তাহলে কী হবে? নিয়ম অনুযায়ী, গ্রুপে যে দল বেশি পয়েন্ট পেয়েছিল, সেই দলই সুবিধা পাবে। এক্ষেত্রে কলকাতা ২০ পয়েন্ট পেয়ে পয়েন্ট টেবলে এক নম্বরে। ফলে আজ যদি বৃষ্টির কারণে ম্যাচ ভেস্তেও যায়, তাহলে নাইটরাই ফাইনালে পৌঁছে যাবে।
(আজ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স বনাম সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, প্রথম কোয়ালিফায়ার, আমেদাবাদ, সন্ধে ৭.৩০, স্টার স্পোর্টস)
[আরও পড়ুন: লক্ষ্য অধরা অলিম্পিক পদক, কার সঙ্গে জুটি বেঁধে প্যারিসে বোপান্না?]