সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হিজাব বিরোধী আন্দোলনে (Anti Hijab Protest) অংশ নেওয়ার ‘অপরাধে’ প্রতিবাদীদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছিল ইরানের (Iran) প্রশাসন। এবার সেই আদেশ কার্যকর করল সেদেশের মৌলবাদী শাসকরা। জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালেই মহসিন শেকারি নামে ওই ব্যক্তিকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। সেদেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলির দাবি, বিচার প্রক্রিয়া ছাড়াই মহসিনকে দোষী সাব্যস্ত করা করা হয়েছে। ইরানের আদালতের দাবি, ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অপরাধ করেছেন ওই ব্যক্তি। সেই জন্যই তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
গত দু’মাস ধরে হিজাব বিরোধী আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে ইরান। পুলিশ-সহ অন্যান্য নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন আন্দোলনকারীরা। মহসিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, রাজধানী তেহরানের রাস্তা আটকে প্রতিবাদ করছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে আধা-সামরিক বাহিনীর একজনকে আক্রমণ করার অভিযোগ আনা হয়। ইরানের আদালত জানিয়ে দেয়, হিজাব পরার প্রতিবাদ করে আসলে ঈশ্বরের বিরুদ্ধে অন্যায় করেছেন মহসিন। সেই অপরাধেই তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার সকালেই সেই আদেশ কার্যকর করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড, ক্ষমতায় ফিরে স্বমহিমায় তালিবান]
এহেন ঘটনায় শঙ্কিত ইরানের মানবাধিকার সংগঠনগুলি। তাঁদের মতে, এবার প্রত্যেকদিন হিজাব বিরোধীদের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ কার্যকর করতে শুরু করবে ইরানের প্রশাসন। অবিলম্বে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপ না হলে ইরানের দমননীতি আরও বাড়বে বলেই তাঁদের অনুমান। অন্যদিকে, ইরানের তরফে সরকারিভাবে ১১ জনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেওয়ার দেওয়া হয়েছে। প্রচুর সংখ্যক আন্দোলনকারীদের কারাদণ্ডের সাজাও দেওয়া হয়েছে। বিচারব্যবস্থাকে কার্যত প্রহসনে পরিণত করা হয়েছে। আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়েই আন্দোলনকারীদের দোষী সাব্যস্ত করে দেওয়া হচ্ছে।
হিজাব না পরার কারণে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় ইরানের তরুণী মাহসা আমিনির। তারপরেই বিক্ষোভে ফেটে পড়ে গোটা ইরান। সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত হিজাব বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে অন্তত সাড়ে তিনশোজন প্রতিবাদীকে হত্যা করেছে সেদেশের প্রশাসন। প্রায় পনের হাজার প্রতিবাদীকে নানা অভিযোগে আটক করা হয়েছে। সারা বিশ্বের মানুষ ইরানের বিক্ষোভকারীদের সমর্থন জানিয়েছেন, তা সত্বেও কঠোর নীতি আঁকড়ে বসে রয়েছে মৌলবাদী প্রশাসন। শত বিপদের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে এখনও প্রতিবাদ চালিয়ে যাচ্ছেন ইরানের সাধারণ মানুষ।