সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোম-সন্ধেয় কার্যত নজিরবিহীন ঘটনার সাক্ষী রইল কাতার। হিজাববিরোধী আন্দোলনের আঁচ এবার সরাসরি এসে পড়ল বিশ্বকাপের মঞ্চে। নিজেদের উদ্বোধনী ম্যাচে নিঃশব্দ প্রতিবাদ জানালেন ইরানের ফুটবলাররা। প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিতে বিশ্বকাপের মঞ্চে জাতীয় সংগীত গাইলেন না তাঁরা।
বছর বাইশের মাহসা আমিনির মৃত্যুকে ঘিরে গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে উত্তাল ইরান। নীতি পুলিশের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাঁকে। অভিযোগ, পুলিশ ভ্যানে তোলার সময় বেধড়ক মারধর করা হয় তাঁকে। তাতেই অসুস্থ হন তিনি। যদিও পুলিশের দাবি ওই তরুণীকে মারধর করা হয়নি। গ্রেপ্তারের পরে অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। আক্রান্ত হন হৃদরোগে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর হাসপাতালে মাহসার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় আন্দোলন। রাজপথে নেমে আসে কাতারে কাতারে মানুষ। হিজাব পুড়িয়ে, চুল কেটে ইসলামের নামে মহিলাদের শিকলবন্দি করার প্রতিবাদ করা শুরু হয়।
[আরও পড়ুন: কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলই! অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ভবিষ্যদ্বাণী’ ঘিরে তুঙ্গে জল্পনা]
কেবল মহিলারাই নন, প্রতিবাদে শামিল হন পুরুষরাও। যদিও দেশজুড়ে প্রবল বিক্ষোভ, আন্দোলনের পরেও থামছে না ইরান সরকার। বিক্ষোভকারীদের থামানোর জন্য আরও কড়া হয়েছে সে দেশের সরকার। কিন্তু তাতেও যে আন্দোলনের আঁচ এতটুকু কমবে না, তা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বারবার। এবার বিশ্বকাপে (FIFA World Cup 2022) ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের আগে ফের ধরা পড়ল প্রতিবাদের ছবি। ভাষাস্বরূপ বেছে নেওয়া হল জাতীয় সংগীত গাওয়া থেকে বিরত থাকাকে।
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে জাতীয় দল থেকে বাদ পড়তে পারেন, এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েও প্রতিবাদীদের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ইরানের ফুটবলার সর্দার আজমৌন। এরকম রাজনৈতিক পটভূমিতে ইরান খেলতে নামায় গোটা বিশ্বের নজর ছিল সেদিকে। আর সেখানেই নিঃশব্দ প্রতিবাদে গর্জে উঠলেন তারকারা। মাঠে যতক্ষণ জাতীয় সংগীত বাজল, ততক্ষণ মুখ বুজে দাঁড়িয়ে রইলেন ফুটবলাররা। ম্যাচে নামার আগেই অধিনায়ক আলিজেরা জানিয়েছিলেন, দলগতভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে, জাতীয় সংগীত গাওয়া হবে কি না। দেখা গেল, বিশ্বকাপের মঞ্চেও আন্দোলনকারীদের পাশেই দাঁড়ালেন তাঁরা।