সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইউরো কোয়ার্টার ফাইনালে কি ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো (Cristiano Ronaldo) বনাম কিলিয়ান এমবাপে (Kylian Mbappe) হবে? ফুটবলবিশ্ব দেখবে শেষ আটে গুরু বনাম শিষ্যের লড়াই?
উত্তর আজ রাতে। আজ, সোমবার যদি রোনাল্ডোর পর্তুগাল হারায় স্লোভেনিয়াকে, কিলিয়ান এমবাপের ফ্রান্স যদি জয় পায় বেলজিয়ামের বিরুদ্ধে, তা হলেই আসবে সেই কাঙ্খিত মুহূর্ত। ইউরোর শেষ আটে মুখোমুখি হবেন রোনাল্ডো এবং এমবাপে!
ফরাসি মহাতারকার সিআর-প্রীতি আজকের নয়। বহু দিনের। শৈশবে এমবাপে ঘুমোতে যেতেন পর্তুগিজ মহানায়কের পোস্টারের দিকে তাকিয়ে। ২০১২ সালে রিয়াল মাদ্রিদের অন্দরমহলে যাওয়ার সুযোগ এসেছিল ১৪ বছরের এমবাপের কাছে। গিয়ে প্রথম যে কাজটা তিনি করেছিলেন, তা হল গুরুর পাশে দাঁড়িয়ে দু’ আঙুলে ‘ভি’ দেখিয়ে ছবি তুলে স্মৃতিকে আজীবন বন্দি করে রাখা। যে গুরুর নাম ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো।
[আরও পড়ুন: অধরা ট্রফি জিততেই টি-২০ থেকে অবসর? বিরাট সিদ্ধান্তের প্রশংসায় ছোটবেলার গুরু]
কিন্তু তার আগে রোনাল্ডো আর এমবাপেকে তো প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে নিজেদের ম্যাচ জিততে হবে। এমবাপের ফ্রান্সের কাঁটা বেলজিয়াম। রোনাল্ডোর বাধা স্লোভেনিয়া ও তাদের ডিফেন্সিভ ফুটবল। ফ্রান্স বরাবরই বেলজিয়ামের কাছে দুঃস্বপ্ন। ’৩৮ বিশ্বকাপের প্রি কোয়ার্টার, ’৮৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্ব ও তৃতীয় স্থানের ম্যাচ, ’১৮ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল, ’২১-এর নেশনস লিগের সেমিফাইনাল। ফরাসি সুবাসকে কখনওই টেক্কা দিতে পারেননি বেলজিয়াম। অন্যদিকে ফুটবল ইতিহাসে একবারই স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে খেলেছে পর্তুগাল। তিন মাস আগের ফ্রেন্ডলিতে ০-২ হারতে হয়েছিল পর্তুগিজদের।
গত ইউরোয় সর্বোচ্চ গোলদাতার খেতাব জয়ী রোনাল্ডো এখনও খুলতে পারেননি গোলের খাতা। যদিও স্লোভেনিয়ার বিরুদ্ধে একটা পরিসংখ্যান তাঁকে উৎসাহ দেবে। গোলরক্ষক জান ওবলাকের বিরুদ্ধে তাঁর পরিসংখ্যান। থেকে। ওবলাকের বিরুদ্ধে ২০ বার মুখোমুখি হয়েছেন সি আর। যার মধ্যে দু’জনই জিতেছেন ছ’টি করে। অমীমাংসিত আট বার। তিনটি হ্যাটট্রিক-সহ ১১টি গোল করেছেন রোনাল্ডো। উল্টোদিকে ‘হেড টু হেড’ লড়াইয়ে শেষ ম্যাচের পরিসংখ্যানে নিজেকে চাঙ্গা করছেন ওবলাক। ২০২১-২২ মরশুমে সিআরের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচে জিতেছিলেন ওবলাক। অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে সেদিন নিশ্চিত পাঁচ-পাঁচটি সেভ করেছিলেন তিনি। আবার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে, এখনও পর্যন্ত দুই দল মুখোমুখি হয়েছে মাত্র একবার। তিন মাস আগের সেই ফ্রেন্ডলিতে ২-০ জিতেছিল স্লোভেনিয়া। চলতি ইউরোয় প্রথম দু’ ম্যাচ জিতে নক আউট ছিনিয়ে নিয়েছিল পর্তুগাল। গ্রুপের শেষ ম্যাচে রিজার্ভ বেঞ্চ দেখে নিতে গিয়ে হারতে হয়েছিল রবার্টো মার্টিনেজদের। সেখানে তিনটি ড্র করে কোনওমতে ইতিহাসে প্রথমবার নক আউটে এসেছে স্লোভেনিয়া।
সোমবার ডুসেলডর্ফে মুখোমুখি ফ্রান্স-বেলজিয়াম। চলতি প্রতিযোগিতায় দু’দলের ফর্ম প্রায় একই। আক্রমণের ধারাবাহিক ব্যর্থতা সত্ত্বেও ডিফেন্ডারদের সৌজন্যে নকআউটের টিকিট জুটেছে। ফ্রান্স যেমন দাঁড়িয়ে আছে কিলিয়ান এমবাপের উপর। বেলজিয়ামের ‘হৃদপিন্ড’ তেমন কেভিন দে’ব্রুইন। দুই তারকার লড়াইয়ে শেষ হাসি হাসে কোন পক্ষ, সেটাই এখন শতবর্ষ প্রাচীন দ্বন্দ্বের আকর্ষণ।