অর্ণব আইচ: খারিজ জামিনের আবেদন। জামিন পেলেন না আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ ১৫ জনের। ফের তাঁর জেল হেফাজতের নির্দেশ দিল ব্যাঙ্কশাল আদালত। আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে তোলা হবে নওশাদকে। “লড়াই জারি থাকবে”, আদালত থেকে জেলে যাওয়ার পথে মন্তব্য ধৃত বিধায়কের।
সরকারি আইনজীবীর দাবি, নওশাদের দু’টি মোবাইল থেকে একাধিক প্রভাবশালীর সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাটের হদিশ মিলেছে। ওই চ্যাটগুলিতে কোটি কোটি টাকা হাওলায় লেনদেনের তথ্য উঠে এসেছে। ওই টাকা একাধিক অফিসার-সহ কাদের পাঠানো হয়েছে, সেই তথ্য জানার জন্য দু’টি মোবাইল ফরেনসিকে পাঠানোর জন্য আবেদন করা হয়। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করে। অভিযুক্তদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আবেদনে বলেন, দলীয় কর্মীরা ধর্মতলায় জড়ো হয়েছিলেন মাত্র। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে নতুন করে কিছু পাওয়া যায়নি। নওশাদদের আটকে রাখার কোনও কারণ নেই। তাঁদের জামিনের আবেদন করেন আইনজীবী।
[আও পড়ুন: SIT আধিকারিককে সরাতে সময় চায় CBI, ‘নির্দেশে বদল নয়’, মন্তব্য বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের]
ধৃত সেনাকর্মী সৈয়দ আলমগির কলকাতায় বেড়াতে এসে ধর্মতলায় ঘুরছিলেন বলে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয় ও সংঘর্ষে তাঁর কোনও ভূমিকা ছিল না বলে দাবি সেনাকর্মীর আইনজীবীর। ধৃত এক মহিলা তাঁর উপর অত্যাচার হয়েছে বলে দাবি করেন। সরকারি আইনজীবী আবেদনে জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, খুনের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। আইন অনুযায়ী তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডেও দণ্ডিত করতে পারে আদালত। ১৪ জনকে গ্রেফতার করার পর নওশাদকে জেরা করে বাকি তিনজনের সন্ধান মিলেছে। সিসিটিভির ফুটেজের মাধ্যমেও বেশ কিছু নথি মিলেছে। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে নওশাদ ও তাঁর সঙ্গীদের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক।
উল্লেখ্য, গত ২০ জানুয়ারি ভাঙড়ে গুলি চলাকে কেন্দ্র করে অশান্তির সূত্রপাত। তার পরদিন ২১ জানুয়ারি ধর্মতলায় দলীয় কর্মসূচি ছিল আইএসএফের। অভিযোগ, সেই সময় কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল। তার প্রতিবাদে ধর্মতলায় অবরোধ শুরু করে আইএসএফ। ব্যস্ততম রাস্তায় অবরোধ হঠাতে এগিয়ে আসে পুলিশ। তারপর আইএসএফ কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ কার্যত খণ্ডযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। পুলিশকে মারধর, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট-সহ একাধিক অভিযোগ ওঠে আইএসএফের বিরুদ্ধে। সেই অভিযোগে পুলিশ আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি-সহ মোট ৪৩ জনকে গ্রেপ্তার করে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা-সহ একাধিক জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করা হয়।