অর্ণব আইচ: আইএসআইয়ের নজরে রাষ্ট্রপতি ভবন! পাক গুপ্তচর সংস্থাটির সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে ধৃত এজেন্টকে জেরা করে চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দাদের হাতে।
কলকাতা পুলিশের স্পেশ্যাল টাস্ক ফোর্সের আধিকারিকদের কাছে আসা তথ্য অনুযায়ী, দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনের সঙ্গে ইন্ডিয়া গেট, ওয়ার মেমোরিয়ালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলিকেও টার্গেট করেছে আইএসআই। দিল্লিতে তোলা নিরাপত্তার চাদরে মোড়া এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলির ছবি ও ভিডিও যে পাকিস্তানে পাচার করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েছেন কলকাতার গোয়েন্দারা। তাই দিল্লি পুলিশ ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নতুন করে সতর্ক করেছে লালবাজার।
[আরও পড়ুন: দলবদলের পর আর শৃঙ্খলাপরায়ণ নন শুভেন্দু, হাই কোর্টে দাবি রাজ্যের]
গত মাসে হাওড়া থেকে পাক চরদের এজেন্ট ভক্ত বংশী ঝাকে আটক করে এসটিএফের রিপন স্ট্রিটের অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই গ্রেপ্তার করা হয় ওই যুবককে। তার মোবাইল ঘেঁটে গোয়েন্দা পুলিশ বালি ব্রিজের ছবি উদ্ধার করে। ওই ব্রিজের ছবি ‘সিগন্যাল’ অ্যাপের মাধ্যমে পাঠানো হয়েছে পাকিস্তানে আইএসআইয়ের এক আধিকারিকের কাছে। ফলে বালি ব্রিজ যে আইএসআইয়ের টার্গেট ছিল, সেই ব্যাপারে গোয়েন্দারা নিশ্চিত। এ ছাড়াও আইএসআইয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকা এজেন্ট ভক্ত বংশী ঝায়ের মোবাইলে থাকা সিগন্যাল অ্যাপের মাধ্যমে পাকিস্তানে পাঠানো হয়েছে দিল্লির ওই তিনটি জায়গার ছবি। ফলে রাষ্ট্রপতি ভবন, ইন্ডিয়া গেট ও ওয়ার মোমোরিয়ালে আইএসআই নিজেদের ‘সাবোতাজ এজেন্ট’ অথবা কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে নাশকতার ছক কষেছিল কি না, এবার গোয়েন্দারা তা জানার চেষ্টা করছেন।
গোয়েন্দারা জেনেছেন, ওই যুবককে পাকিস্তানের (Pakistan) এক মহিলা হানিট্র্যাপে ফেলে। মহিলা নিজেকে পাঞ্জাবের বাসিন্দা বলে পরিচয় দিয়ে ভক্তকে বলে, তার বোন সাংবাদিক। তার জন্য কিছু ছবি ও ভিডিও তুলতে। ভক্ত দিল্লিতে থাকাকালীন ওই জায়গাগুলির আশপাশে ঘুরে মোবাইলে ছবি ও ভিডিও তোলে। এমনকী নিরাপত্তার বলয় ভেদ করেও রীতিমতো ঝুঁকি নিয়ে ছবি ও ভিডিও তোলে ওই এজেন্ট। যদিও হোয়াটস অ্যাপে দিল্লি বা কলকাতার কোনও ‘ভাইটাল ইন্সটলেশন’ বা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় তোলা ওই ছবিগুলি পাঠাতে বারণ করা হয় তাকে। তার বদলে সিগন্যাল অ্যাপেই পাঠাতে বলা হয়। কারণ, ওই অ্যাপটিতে নজরদারি করা বিশেষ সহজ নয় পুলিশের পক্ষে। এদিকে, এই তথ্যগুলি হাতে আসার পর পরই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের সতর্ক করে দেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারা। একই সঙ্গে এই ছবিগুলি পাকিস্তানে পাচারের খবর পাওয়ার পর কলকাতার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলির উপর নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।