মোহনবাগান: ২ (বুমোস, মনবীর)
ইস্টবেঙ্গল: ০
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কলকাতার বুকে আইএসএলের (ISL) প্রথম ডার্বি। যুবভারতীতে ৬২ হাজার দর্শকের হিল্লোল। গত কয়েকবছর ডার্বিতে ফাঁকা গ্যালারির যে ছবি ভারতীয় ফুটবল সমর্থকরা দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন, এবার সেই ছবিতে বদল এসেছে। শিরশিরানি আবহাওয়ায় কানায় কানায় পূর্ণ গ্যালারি ডার্বির আমেজে অন্য মাত্রা যোগ করেছে। এবারের ডার্বিতে অনেক কিছুই বদলালো, বদলালো না শুধু ফলাফল। গত ছয় ডার্বির মতো এবারেও শেষ হাসি হাসলেন সবুজ-মেরুন সমর্থকরা। হুগো বুমোস এবং মনবীরের পায়ের জাদুতে সপ্তম স্বর্গে পৌঁছে গেল মোহনবাগান (Mohun Bagan)। তাতে অবশ্য কিছুটা যোগদান ছিল লাল-হলুদ গোলরক্ষক কমলজিতেরও। তিনি মোক্ষম সময়ে বিশ্রী ভুলটা না করলে ডার্বির রং অন্যরকম হতেই পারত।
খাতায়-কলমে যে দলই এগিয়ে থাক, ডার্বিতে সব হিসাব ওলট-পালট হয়ে যেতে বহুবার দেখেছে ময়দান। এবারেও সেই আশায় বুক বাঁধছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। ইস্টবেঙ্গল যে শুরুটা খুব খারাপ করেছিল তাও নয়। রক্ষণে লোক বাড়িয়ে মোহনবাগানের আক্রমণ প্রতিহত করে প্রতিআক্রমণে প্রতিপক্ষকে আঘাত হানার ছক নিয়ে এদিনের ম্যাচে নেমেছিলেন ইস্টবেঙ্গল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। সেই স্ট্র্যাটেজিতে প্রথমার্ধে অন্তত তিনি ভালরকম সফল হন।
[আরও পড়ুন: বেকারত্ব দূর করতে মিছিল, আমজনতাকেই পেটাল মুখোশধারী আন্দোলনকারীরা! ভাঙচুর অ্যাম্বুল্যান্সেও]
ম্যাচের প্রথমার্ধে খেলা ছিল সমানে সমানে। মোহনবাগান বলের দখল বেশি রাখলেও সেভাবে আক্রমণ দানা বাঁধছিল না। উলটে কাউন্টার অ্যাটাকে বেশ কয়েকটি ভাল সুযোগ তৈরি করে ফেলেছিল ইস্টবেঙ্গল। সবুজ-মেরুন গোলরক্ষক বিশালের কথা এখানে বলতেই হয়। এদিন শুরু থেকেই অনেক বেশি আত্মবিশ্বাসী দেখিয়েছে তাঁকে। বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সেভও প্রথমার্ধে করেছেন তিনি। বিশেষ করে ১৬ মিনিটে যেভাবে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে সেমবয়ের হেডার বাঁচান তিনি, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। সব মিলিয়ে ম্যাচের প্রথমার্ধ এবং দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে বেশ উপভোগ্য খেলা হচ্ছিল। ইস্টবেঙ্গল আন্ডারডগ হলেও তাঁদের খেলায় অন্তত সেটা প্রতিফলিত হয়নি।
[আরও পড়ুন: ‘বাবরের থেকে এক হাজার গুণ ভাল সূর্য’, এবার বলছেন এক প্রাক্তন পাক তারকাও]
কিন্তু সব হিসাব বদলে যায় ম্যাচের ৫৬ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল গোলরক্ষক কমলজিতের বিশ্রী একটি ভুলের জন্য। হুগো বুমোসের (Hugo Boumos) দূরপাল্লার আপাত সাধারণ মানের শটে যেভাবে মিস জাজমেন্ট করলেন তিনি, সেটা আর যাই হোক ডার্বির মতো বড় ম্যাচে মেনে নেওয়া যায় না। আসলে ডার্বি মানেই তো স্নায়ুযুদ্ধ। সেই স্নায়ুর লড়াইয়ে গত কয়েকবছরের মতো এবারেও হার মানল ইস্টবেঙ্গল। কমলজিতের বিশ্রী সেই ভুলে সেই যে মোহনবাগান এগিয়ে গেল, তারপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি সবুজ-মেরুনকে। মিনিট দশেকের মধ্যেই দ্বিতীয় গোলটি পেয়ে যায় তাঁরা। এবারে ইস্টবেঙ্গলের ছন্নছাড়া রক্ষণের সুযোগ নিয়ে লাল-হলুদ জালে বল জড়িয়ে দেন মনবীর সিং। দু’গোলে পিছিয়ে পড়া ইস্টবেঙ্গল আর কামব্যাক করার সুযোগ পায়নি। আইএসএলের ডার্বিতে এখনও জয় অধরা থেকে গেল তাঁদের।