স্টাফ রিপোর্টার: প্রতিবারই মরশুমের শুরুতে লাল-হলুদকে ঘিরে দারুণ ভাবে প্রত্যাশা তৈরি হয়। কিন্তু দিনের শেষে সেই ব্যর্থতা। প্রথম ছ’য়ে থাকার স্বপ্ন শেষ পর্যন্ত স্বপ্নই থেকে যায়। পর পর চার বছর ব্যর্থতার মুখ দেখার পর এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের যা দল হয়েছে, তাতে সমর্থকরা আশা করছেন, এইবার অন্তত প্লেঅফে দেখা যাবে তাঁদের প্রিয় দলকে।
ইস্টবেঙ্গলকে ঘিরে একটা পরিবর্তন যে এসেছে, বুধবার ইন্ডিয়ান সুপার লিগের (ISL 2024-25) সরকারি সাংবাদিক সম্মেলনে তা মেনে নেন কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতও। বলছিলেন, ‘‘আগে ইস্টবেঙ্গলে খেলার প্রস্তাব দিলে, ফুটবলাররা হয় ফোন কেটে দিত। নাহলে খেলব না, বলে দিত। এখন দেখুন। সব প্রতিষ্ঠিত ফুটবলাররাই লাল-হলুদ জার্সি পরতে চাইছে। সকলের কাছে ইস্টবেঙ্গল সম্পর্কে এটাই মূল পরিবর্তন হয়েছে। আশা করা যায়, বাকি সব কিছু পরিবর্তনও ধীরে ধীরে হয়ে যাবে।’’
[আরও পড়ুন: আরও উন্নতির প্রয়োজন, আইএসএলের আগে মোহনবাগান টিমকে বার্তা কোচ মোলিনার]
রাজারহাটের এক পাঁচতারা হোটেলে আইএসএলের সাতটি দলের কোচ এবং ফুটবলারদের নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের আয়োজন করেছিল এফএসডিএল। অধিনায়ক ক্লেটন সিলভা, হেক্টর আর শৌভিককে সঙ্গী করে সাংবাদিক সম্মেলনে এসেছিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। সেখানেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুরুতেই ইস্টবেঙ্গল কোচ বলেন, ‘‘এই প্রথমবার পর পর দুটো মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের কোচের চেয়ারে একজন রয়েছেন। সেরকম গত মরশুমের কিছু ফুটবলারও রয়েছে। সব মিলিয়ে এবার ভালো কিছু আশা করাই যায়।’’ কিন্তু এসবরে পরেও কি এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের প্লেঅফে খেলার সুযোগ নিশ্চিত হবে? কার্লেস কুয়াদ্রাত সরাসরি কোনও উত্তর না দিয়ে বলেন, ‘‘একটা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্লেয়ার ডেভলপমেন্ট হচ্ছে। নিশ্চিতভাবেই সব কিছু ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যাবে।’’ এই মরশুমে দলের প্লে অফে খেলা নিয়ে কোচ সরাসরি কিছু না বললেও অধিনায়ক ক্লেটন সরাসরি বলে দিলেন, ‘‘এবারের আইএসএলে আমরা নিশ্চিতভাবেই প্রথম ছ’য়ে থাকব।’’
[আরও পড়ুন: মেসি-রোনাল্ডো যুগের অবসান! ২০ বছরে প্রথমবার ব্যালন ডি’অরের দৌড়ে নেই দুই মহারথী]
গত মরশুমে লিগ টেবিলে নবম স্থানে শেষ করে ইস্টবেঙ্গল। সেই প্রসঙ্গ উঠতেই কুয়াদ্রাত বলেন, ‘‘গত মরশুমের সঙ্গে এবারের মরশুমের তুলনা করাটা ঠিক হবে না। গত মরশুমের পরিস্থিতির সঙ্গে এবারের পরিস্থিতি পুরোটাই আলাদা। ফুটবলারও অনেক পরিবর্তন হয়েছে। আমাদের যেরকম পরিবর্তন হয়েছে, সেরকম প্রতিপক্ষ দলগুলিরও অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ফলে গত মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের কী হয়েছিল, তা নিয়ে এই মরশুমে তুলনা করা ঠিক হবে না।’’ এই মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের পক্ষে সবচেয়ে যেটা ভাল দিক, তা হল, মোহনবাগানের দুই স্টপারকেই তুলে নিয়ে এসেছে তারা। একজন আনোয়ার আলি হলে অন্যজন হেক্টর। আনোয়ারের সঙ্গে খেলার প্রসঙ্গে হেক্টর বললেন, ‘‘আনোয়ার আলি হচ্ছে আইএসএলের অন্যতম সেরা ডিফেন্ডার। ওর সঙ্গে ডিফেন্সে খেলতে পারার সুযোগ আসায় অবশ্যই আমি খুশি।’’ আর আনোয়ারকে দলে পেয়ে কুয়াদ্রাত যে খুশি বলাই বাহুল্য। দলের চোট-আঘাত প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসা করা হলে ইস্টবেঙ্গল কোচ জানালেন, ‘‘চোটের তালিকায় রয়েছে দু’জন ফুটবলার। প্রভাত লাকরা আর নিশু কুমার। তবে আমি জুনিয়র ফুটবলার তৈরি করে নিই। বেঙ্গালুরু থাকতে সুরেশ আর রোশন সিংকে সুযোগ দিয়েছিলাম। ওরা এখন জাতীয় দলের ফুটবলার। ইস্টবেঙ্গলেও জুনিয়র ফুটবলার তুলে আনার দিকে লক্ষ্য রাখব।’’