দুলাল দে: আই লিগে (I League) চ্যাম্পিয়ন হলেই সরাসরি আইএসএলে (ISL) খেলার সুযোগ। গত বছর পাঞ্জাব এফসি এই সুযোগ পেয়েছিল, এই মরশুমে আই লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে সরাসরি আইএসএলে খেলবে কলকাতার মহামেডান স্পোর্টিং। ফলে সেপ্টেম্বর থেকে যে আইএসএল শুরু হওয়ার কথা সেখানে এবার খেলবে ১৩টি দল। এভাবে যদি প্রত্যেক বছর আই লিগের চ্যাম্পিয়ন দল সরাসরি আইএসএলে খেলা শুরু করে দেয়, তাহলে শেষ পর্যন্ত কত দলের আইএসএল হবে? ফলে একটা ভাবনা চিন্তা শুরু হয়েছে কিছু একটা ভারসাম্য আনার।
এএফসির রোড ম্যাপ ধরে একবার যখন আই লিগের চ্যাম্পিয়ন দলকে আইএসএলে খেলার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তখন আর তা আটকানোর কোনও সম্ভাবনা নেই। আইএসএলে দলের ভারসাম্য রাখা সম্ভব একমাত্র যদি অবনমন শুরু করা যায়। প্রতি বছর আই লিগ থেকে একটি দল উঠবে। আর আইএসএল থেকে একটি দলের অবনমন হবে। তাহলেই একমাত্র আইএসএলে দলের ভারসাম্য থাকবে। কিন্তু কবে শুরু হবে আইএসএলের অবনমন? আপাতত যা জানা যাচ্ছে তাতে আইএসএলে ১৪ টি দল হওয়ার পরেই শুরু হবে অবনমন প্রক্রিয়া। যার অর্থ, ২০২৫-এ ১৪টি দল নিয়ে আইএসএল হওয়ার পর ২০২৬ থেকে শুরু হবে অবনমন।
[আরও পড়ুন: আরসিবির জার্সিতে আইপিএলে ফিরছেন গেইল! জল্পনা উসকে দিলেন খোদ বিরাট]
এমনিতে ফেডারেশনের সঙ্গে ২০২৫ এর ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি রয়েছে এফএসডিএলের (FSDL)। ২০২৬ থেকে চুক্তি নবীকরণের জন্য পরের মরশুমে আলোচনা শুরু হবে ফেডারেশন এবং এফএসডিএলের মধ্যে। চুক্তি অনুযায়ী ফেডারেশনের যাবতীয় প্রতিযোগিতার মার্কেটিং রাইটস এফএসডিএলের কাছে। কল্যাণ চৌবে ফেডারেশন প্রেসিডেন্ট হয়ে আসার পর দু’পক্ষের আলোচনায় আপাতত সন্তোষ ট্রফি, ফুটসল সহ আরও ঘরোয়া কিছু প্রতিযোগিতার রাইটস ফেডারেশনকে ফিরিয়ে দিয়েছে এফএসডিএল। যে কারণে, শেষ সন্তোষ ট্রফির আয়োজন ফেডারেশন থেকেই করা হয়েছে। কিন্তু ২০২৬ থেকে ফেডারেশনের সঙ্গে এফএসডিএলের চুক্তির ভবিষ্যৎ কী? চুক্তি অনুযায়ী এখন প্রতি বছর ৫০ কোটি টাকা ফেডারেশনকে দেয় এফএসডিএল। এই মুহূর্তে যা জানা যাচ্ছে, ২০২৫ এর মাঝামাঝি সময়ে দু’পক্ষ আলোচনায় বসে ঠিক করবে সেই সময় বাজার দর কী রয়েছে। সেই অনুযায়ী পরের চুক্তিতে অর্থের পরিমাণ বাড়বে কি না, সেটা ঠিক হবে। এক্ষেত্রে এফএসডিএলের পরিষ্কার যুক্তি, ফেডারেশন যদি মনে করে এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবলে রিলায়েন্সের থেকে কেউ বেশি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করবে, করতেই পারে। কিন্তু যা পরিস্থিতি, তাতে রিলায়েন্স ছাড়া এই মুহূর্তে ভারতীয় ফুটবল কর্তাদের হাতে বিকল্প কোনও বিনিয়োগকারী নেই। অনেকে বলছেন, আইএসএলের কোনও স্পনসর নেই। এই প্রসঙ্গে এফএসডিএলের আভ্যন্তরীণ ব্যাখ্যা হল, আগে স্টারের থেকে একটা ভাল টাকা পাওযা যেত। স্টার সরে যেতে এখন সেই টাকাটা ভায়াকম দিচ্ছে। তাছাড়া সমস্যাটা এফএসডিএলের। এই নিয়ে অন্য কারও চিন্তিত হওয়ার কারণ নেই। কারণ, আইএসএল চালানো নিয়ে সামান্যতম চিন্তায় নেই এফএসডিএলের।
[আরও পড়ুন: ইপিএলে ইতিহাস, টানা চারবার লিগ জয় ম্যাঞ্চেস্টার সিটির]
গত মরশুমেই ঠিক হয়েছিল, একটা প্রতিযোগিতার মতো করে সামান্য কিছুদিনের জন্য সুপার কাপ হবে না। পরিবর্তে এফএ কাপের ধাঁচে সারা বছর ধরে সুপার কাপ হবে। কিন্তু সারা বছর ধরে সুপার কাপ করা সম্ভব হবে কি না, তা এই মুহূর্তে নির্ভর করছে ওড়িশা সরকারের উপর। সুপার কাপ করার জন্য ফেডারেশন, এফএসডিএল এবং ওড়িষা সরকালের মধ্যে ২ বছরের চুক্তি হয়। গত মরশুমে সুপার কাপ ভুবনেশ্বরে করার জন্য ২-২.৫০ কোটি টাকা খরচ করে ওড়িশা সরকার। এই মরশুমেও সুপার কাপ করার জন্য চুক্তি রয়েছে ওড়িশার সঙ্গে। এইবার পুরো বছর ধরে সুপার কাপ করতে হলে হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে ম্যাচ করতে হবে। সেক্ষেত্রে বহু ম্যাচ ওড়িশার বাইরে করতে হবে। এইবার ওড়িষা সরকার স্পনসর করবে, আর ম্যাচ বাইরে চলে যাবে এটা ওড়িশা সরকার মেনে নেবে কি না, তা নিয়ে আলোচনায় বসবে এফএসডিএল এবং ফেডারেশন কর্তারা। বছর জুড়ে বিভিন্ন ভেন্যুতে হোম-অ্যাওয়ে ম্যাচ করলেও ওড়িশা সরকার যদি সুপার কাপকে স্পনসর করতে রাজি হয়, তাহলে সারা বছর জুড়েই হবে। না হলে আগের মতো কিছুদিন ধরে একটা প্রতিযোগিতার মতো হবে সুপার কাপ।