সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভয়ংকর যুদ্ধের দামামা বাজল ইরান ও ইজরায়েলের মধ্যে! তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার বদলা নিতে ফুঁসছিল ইহুদি দেশটি। এবার ইরানের সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে সরাসরি আঘাত হানল ইজরায়েল। শনিবার ইজরায়েলি সেনার একের পর এক বোমাবর্ষণে কেঁপে ওঠে ইরানের রাজধানী তেহরান-সহ একাধিক এলাকা। পাশাপাশি আক্রমণ শানানো হয় ইরাক ও সিরিয়াতেও। ইরানের সেনাঘাঁটিতে হামলার কথা ঘোষণা করে ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। এদিকে তেল আভিভের এই আগ্রাসানের জবাব দিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ইরানি সেনাও। ফলে লড়াই আরও তীব্র আকার নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যে।
এক বছর পেরিয়ে গেলেও রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ থামেনি গাজায়। হামাসের বিরুদ্ধে লড়াই জারি রেখেছে ইজরায়েল। এই সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে ইজরায়েলে হামলা চালাচ্ছিল ইরানের মদতপুষ্ট লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হেজবোল্লা। ফলে তেহরানের সঙ্গে সংঘাত তীব্র হয় তেল আভিভের। এর মাঝেই আগুনে ঘি ঢালে হামাসের রাজনৈতিক প্রধান ইসমাইল হানিয়েহ ও হেজবোল্লা প্রধান হাসান নাসরাল্লার মৃত্যু। ক্ষোভের আগুনে ফুঁসে উঠে গত ১ অক্টোবর ইজরায়েলে মিসাইল হামলা চালায় তেহরান। এই আক্রমণ নিয়ে এতদিন 'নীল নকশা' তৈরি করছিল তেল আভিভ। এবার ইরানের বুকে সরাসরি হামলা চালালো ইজরায়েলি সেনা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, এদিন ইরানের একাধিক জায়গায় আছড়ে পড়ে ইজরায়েলি বোমা। বাদ যায়নি সেনাঘাঁটিও। তবে এই হামলায় এখনও পর্যন্ত হতাহতের কোনও খবর মেলেনি। হামলার কথা ঘোষণা করে আইডিএফ বিবৃতি জানায়, 'আমরা ইরানের সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছি।' তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার প্রেক্ষিতেই যে আক্রমণ শানিয়েছে তারা তা স্পষ্ট। এদিকে, ইজরায়েল যে আঘাত হেনেছে তার মোক্ষম জবাব দিতে প্রস্তুত ইরানি সেনা। কড়া ভাষায় ইরান জানিয়ে দিয়েছে, 'এতে কোনও সন্দেহ নেই যে, এই আগ্রাসী পদক্ষেপের জন্য ইজরায়েলকে ভুগতে হবে। আমরা এর জবাব দিতে প্রস্তুত।'
জানা গিয়েছে, ইরানে হামলা চালানোর সময় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট সেনা দপ্তরে হাজির ছিলেন। গোটা পরিস্থিতির উপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছিলেন। সংবাদ সংস্থা এপি সূত্রে খবর, তেহরানের এক বাসিন্দা জানিয়েছে, কমপক্ষে ৭টি বিস্ফোরণের আওয়াজ শোনা গিয়েছে। এই মুহূর্তে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রগুলো নিয়ে। কয়েকদিন আগেই শোনা যাচ্ছিল সেগুলোতে হামলা চালাতে পারে তেল আভিভ। কিন্তু এখন ইজরায়েলের তরফে তেমন কোনও আভাস পাওয়া যায়নি। এবার দেখার প্রত্যুত্তরে ইরান কীভাবে আক্রমণ শানায়। গোটা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে আমেরিকাও।
সমর বিশ্লেষকদের মতে, মধ্যপ্রাচ্য বরাবরই বারুদের স্তূপে দাঁড়িয়ে। যাতে বিস্ফোরণ ঘটায় গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে হামাসের হামলা। প্রায় এক বছর হতে চলল গাজায় ‘ধবংসযজ্ঞ’ চালাচ্ছে তেল আভিভ। সংঘাত শুরু হয়েছে লেবাননে। এবার সম্মুখ সমরে ইরান-ইজরায়েল! ফলে যে যুদ্ধ শুরু হয়েছিল গাজায়, এখন তা লেবানন-ইরান হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে প্রায় মধ্যপ্রাচ্যে। একদিকে, গাজা-লেবাননে যখন প্রতিনিয়ত যুদ্ধবিরতির দাবি উঠছে তখন নতুন করে লড়াই শুরু করছে ইজরায়েল। ফলে আরও ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতি।