সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গাজার পাশাপাশি এবার ইজরায়েলের রক্তচক্ষুর নজরে পড়েছে লেবানন। ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লাকে নিশানা করে সেখানে ভয়ংকর হামলা চালাচ্ছে ইজরায়েলি সেনা। এর আগে গাজায় মাটির নিচে হামাসের টানেলের খোঁজ পেয়েছিল ইজরায়েলি ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ)। সেখানে কমান্ড সেন্টার ও অস্ত্রভাণ্ডারের ছবি দিয়েছিল আইডিএফ। এবার তারা হদিশ পেয়েছে লেবাননে মাটির নিচে হেজবোল্লার সুড়ঙ্গের। যার স্বপক্ষে প্রমাণ পেশ করেছে তেল আভিভ।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স সূত্রে খবর, মঙ্গলবার আইডিএফ হেজবোল্লার কয়েকটি সুড়ঙ্গের ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করে। যা দক্ষিণ লেবাননের মাটির নিচে কয়েকদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। যা নিয়ে ভিডিওবার্তায় আইডিএফ জানায়, 'হেজবোল্লা জঙ্গিরা ৭ অক্টোবরের মতো উত্তর ইজরায়েলে হামলা চালানোর ছক কষেছিল। সেই জন্য বাসিন্দাদের বাড়ির নিচে সুড়ঙ্গ তৈরি করা হয়েছিল। এই সুড়ঙ্গের মধ্যে রয়েছে বাঙ্কার। যেখানে প্রচুর অস্ত্র মজুত রয়েছে। লোহার দরজার পিছনে কমান্ড রুম, AK-47 রাইফেল, জেনারেটর, জলের ট্যাঙ্ক রয়েছে।' এই মুহূর্তে ইজরায়েলের রক্তক্ষয়ী আক্রমণে কাঁপছে লেবানন। রাজধানী বেইরুট-সহ একাধিক শহর ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হেজবোল্লা সদস্যদের পাশাপাশি প্রাণ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষও। ইতিমধ্যেই লেবাননে নিহতের সংখ্যা দুহাজার পেরিয়ে গিয়েছে।
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় হামলা শুরুর পর মাটির নিচে হামাসের ডেরায় আক্রমণ শানাচ্ছে ইজরায়েল। গাজার ভূখণ্ডে মাটির ৮০ মিটার নিচে ছড়িয়ে রয়েছে হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক, যার ব্যাপ্তি কয়েকশো কিলোমিটার। ওই সব সুড়ঙ্গের ভিতরে রয়েছে বাঙ্কার, হাতিয়ার ভাণ্ডার থেকে শুরু করে নানা ধরনের ফাঁদও। গাজার হাসপাতাল, মসজিদ, স্কুলের নিচে হদিশ মিলেছিল ‘দ্য মেট্রো’বা হামাসের সুড়ঙ্গ জালের। মাটির নিচের এই ডেরা থেকে বিভিন্ন হামাসের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগ তুলেছে ইজরায়েল। এবার খোঁজ মিলেছে হেজবোল্লার টানেলের। ফলে মাটির নিচেও আগুন ঝরাবে ইজরায়েলি সেনা।
যেভাবে গাজায় একের পর এক হামাস নেতাকে খতম করেছে ইজরায়েল ঠিক সেভাবেই অভিযান চলছে লেবাননে। হেজবোল্লার প্রধান হাসান নাসরাল্লাকে নিকেশ করেই থেমে নেই তেল আভিভ। মঙ্গলবার ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা করেন যে ইজরায়েলি সেনা হেজবোল্লার সম্ভাব্য সর্বোচ্চ নেতাকেও শেষ করেছে। রেকর্ড করা ভিডিয়ো বার্তায় তাঁকে বলতে শোনা যায়, “আমরা হেজবোল্লার ক্ষমতা ছেঁটে ফেলেছি। আমরা হাজার হাজার জঙ্গিকে নিকেশ করেছি। হেজবোল্লা প্রধান নাসরাল্লা, তার উত্তরসূরি এবং উত্তরসূরির বিকল্পকেও খতম করেছি।” এতে ইরানের সঙ্গে আরও সংঘাত বাড়ছে ইজরায়েলের। নাসরাল্লার মৃত্যুর বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে কয়েকদিন আগেই ইজরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছিল তেহরান। যার পালটা দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেল আভিভ। ফলে ভয়ংকর রূপ নিচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি।