সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৬ দিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যে চলছে রক্তক্ষয়ী লড়াই। যার সূত্রপাত গত ৭ অক্টোবর ইজরায়েলের বুকে প্যালেস্টাইনের জঙ্গি গোষ্ঠী হামাসের বেনজির আক্রমণের পর। ওই হামলায় মৃত্যু হয় প্রায় ২ হাজারের কাছাকাছি ইজরায়েলির। সেদিন কীভাবে ইহুদিভূমে নৃশংস হত্যালীলা চালিয়েছিল এই সুন্নি জেহাদিরা এবার তার ভিডিও প্রকাশ করা হল নয়াদিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাসের পক্ষ থেকে। দেখানো হল ভারতীয় সাংবাদিকদের।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, বুধবার নয়াদিল্লির ইজরায়েলি দূতাবাসের (Israeli embassy) পক্ষ থেকে ভারতীয় সাংবাদিকদের জন্য বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়। যেখানে হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী ও হামলায় আক্রান্তদের বিভিন্ন ভিডিও দেখানো হয়। এগুলো বেশিরভাগই সিসিটিভি ফুটেজ, জেহাদিদের গায়ে লাগানো ক্যামেরা ও আক্রান্তদের দ্বারা সোশাল মিডিয়ায় প্রকাশ করা ভিডিওকে জুড়ে তৈরি করা।
সেরকমই একটি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, হামলা চালানোর পর নিজের পরিবারকে পাঠানো একটি ভিডিওতে এক হামাস জঙ্গি বলছে, “হোয়াটসঅ্যাপ খুলে দেখো কতজন মারা গিয়েছে। তোমার ছেলে অনেক ইহুদিদের মেরেছে। তোমার ছেলে একজন নায়কের মতো কাজ করেছে।” আরও কয়েকটি ভিডিও দেখানো হয়েছে যেখানে দেখা গিয়েছে, কীভাবে রাস্তার একটি কুকুরকে নির্মমভাবে গুলি করছে জেহাদিরা। একাধিক বাড়ি ও অ্যাম্বুল্যান্স লক্ষ্য করেও হামলা চালাচ্ছে।
[আরও পড়ুন: পাক ফৌজের হাতে হেনস্তার সম্ভাবনা, দ্রুত পাকিস্তান ছাড়ছেন আফগান শরণার্থীরা]
গত ৭ অক্টোবর থেকে হামাসের (Hamas) এই নৃশংসতার পর যুদ্ধ ঘোষণা করে দেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। জেহাদিদের মুছে ফেলতে আক্রমণ করা হয়েছে গাজায়। এখন গাজা ভূখণ্ডের ক্রমশ গভীরে ঢুকে হামলা শুরু করে দিয়েছে ইজরায়েলি ফৌজ। বিশ্বের অনেক দেশ যেমন তেল আভিভের পাশে দাঁড়িয়েছে তেমনই বেশ কিছু দেশ তাদের বিরোধিতাও করছে। কারণ নেতানিয়াহুর প্রশাসনের আক্রমণে প্রাণ হারাচ্ছেন হাজার হাজার প্যালেস্তিনিয়। বিঘ্ন ঘটছে ত্রাণ পৌঁছে দিতেও। এই প্রেক্ষিতে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, হামাসের বর্বরতার ছবি বিশ্বের কাছে তুলে ধরে কূটনৈতিক সহযোগিতা পেতে চাইছে ইজরায়েল।
বলে রাখা ভালো, কয়েকদিন আগেই হামাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে দিল্লিতে (Delhi) দরবার করেছিলেন ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধে ‘ইজরায়েলের পাশেই আছে ভারতের মানুষ’ বলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্যালেস্টাইনের এই জেহাদি সংগঠনকে নিষিদ্ধ জঙ্গি গোষ্ঠীর তকমা দেয়নি ভারত। এই জঙ্গি গোষ্ঠীর উপর চাপ বাড়াতেই নয়া দিল্লির পক্ষ থেকে হামাস জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন তিনি। এক্ষেত্রেও কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এবার হামাসের ভিডিও সাংবাদিকদের দেখিয়ে আরও একবার এই জেহাদিদের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তুলতে ও ভারতের কূটনৈতিক সাহায্যের জন্য এই পদক্ষেপ করেছে ইজরায়েল। তবে শুধু ভারত নয় এই ধরনের ভিডিও দেখানো হয়েছে অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা-সহ ১৫টি দেশে।