সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পণবন্দি অবস্থায় নিজের দেশের সেনাকে দেখে মনে বল পেয়েছিলেন। তাই মাতৃভাষা হিব্রুতে চিৎকার করে সাহায্য চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটাকে হামাসের (Hamas) ফাঁদ বলে মনে করে পণবন্দিদের সটান হত্যা করে ফেলে ইজরায়েলি সেনা। একসঙ্গে তিন পণবন্দিকে গুলিতে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয়। সদ্যপ্রকাশিত এক রিপোর্টে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য উঠে এসেছে। ইজরায়েলের (Israel) সেনাপ্রধান হেরজি হালেভির বিবৃতির ভিত্তিতেই তদন্ত চালিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে এই রিপোর্ট।
জানা গিয়েছে, গত ১০ ডিসেম্বর গাজার (Gaza) একটি বাড়িতে ঢোকে ইজরায়েলি সেনা। সেই সময়ে বাড়ির ভিতর থেকে তাঁরা হিব্রু ভাষায় আর্তনাদ শুনতে পান। সাহায্য চেয়ে বেশ কয়েকজন চিৎকার করছিলেন। কিন্তু সেটাকে হামাসের ফাঁদ বলে মনে করেন জওয়ানরা। তাঁদের মনে হয়েছিল, হিব্রু ভাষায় কথা বলে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। বাড়ির মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে তাঁদের খুন করবে হামাস জঙ্গিরা, সেটা মনে করেই পিছিয়ে আসে ইজরায়েলি সেনা। তবে বেরনোর আগে বাড়িতে থাকা পাঁচ হামাস জঙ্গিকে নিকেশ করে তারা।
[আরও পড়ুন: বর্ষবরণে করা যাবে না আনন্দ-উল্লাস, কড়া ফতোয়া পাকিস্তানে]
হামাস জঙ্গিদের মৃত্যুর পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ে পণবন্দিরা। প্রায় পাঁচদিন পরে ফের ইজরায়েলি সেনার সঙ্গে দেখা হয় তাঁদের। সেই সময়েও ফের পণবন্দিদের হামাস জঙ্গি ভেবে ভুল করে বসেন ইজরায়েলি সেনারা। তিন পণবন্দিকে লক্ষ্য করে লাগাতার গুলিবৃষ্টি শুরু করে তারা। সঙ্গে সঙ্গেই দুজনের মৃত্যু হয়। তবে শেষ মুহূর্তে তৃতীয়জনকে চিনতে পারেন সেনা কমান্ডার। সেই সময়ে গুলিবৃষ্টি থামাতে নির্দেশ দিলেও শুনতে পাননি অনেকে। গুলি করে খুন করা হয় তৃতীয় পণবন্দিকেও।
এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর (Benjamin Netanyahu) প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে ইজরায়েলের সাধারণ মানুষ। অন্য কোনও উপায়ে হামাসের হাতে আটক পণবন্দিদের উদ্ধার করা হোক, এই দাবিতে সুর চড়িয়েছেন তাঁরা। যদিও তিনজনের মৃত্যুর খবর পেয়ে শোক প্রকাশ করেছেন ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই খবরে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের হৃদয় ভেঙে গিয়েছে। তবে গোটা ঘটনায় ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন সেনাপ্রধান। তিনি সাফ জানিয়েছেন, এই তিনজনের মৃত্যু অবশ্যই আটকানো যেত। উল্লেখ্য, ৭ অক্টোবর থেকে এখনও ১২৯ জন ইজরায়েলি পণবন্দি আটকে রয়েছেন হামাসের হাতে।