সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টার থেকে ফের ইতিহাস গড়ল ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। সোমবার এক সঙ্গে ২৯টি কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল ভারত। এর মধ্যে রয়েছে শত্রুদেশের রাডার চিহ্নিত করার জন্য বিশেষ ভারতীয় স্যাটেলাইট ‘এমিস্যাট’-ও। বাকি ২৮টি স্যাটেলাইট আমেরিকা, স্পেন, সুইজারল্যান্ড ও লিথুয়ানিয়ার হয়ে কক্ষপথে পাঠিয়েছে ইসরো।
অবশ্য এদিনের অভিযান নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ছিলেন বিজ্ঞানীরা। তবে সমস্ত উদ্বেগ শেষ করে সফলভাবেই পাড়ি দেয় পিএসএলভি রকেট। গত সপ্তাহে কৃত্রিম উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র বা ‘এস্যাট’-এর সফল পরীক্ষা চালিয়েছে ভারত। এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘মিশন শক্তি’। জানা গিয়েছে, এর মাধ্যমে ধ্বংস করা হয়েছে পৃথিবী থেকে ৩০০ কিলোমিটার দূরের কক্ষে অবস্থিত ৭০০ কিলোগ্রাম ওজনের মাইক্রোস্যাট-আর নামের এই স্যাটেলাইট। বিজ্ঞানীরা জানাছেন, এর ফলে ওই স্যাটেলাইট এবং ক্ষেপণাস্ত্রের প্রায় ৩০০টি টুকরো মহাকাশেই রয়ে গিয়েছে। এদিনের নতুন উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে উঠতে পারত ওই টুকরোগুলি। কারণ মহাকাশে এই টুকরোগুলির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে ইসরোর মহাকাশ যান।
নীতি আয়োগের সদস্য এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা সংস্থা ডিআরডিও-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান ভি কে সারস্বত জানাচ্ছেন, শুধু কৃত্রিম উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রর জন্য নয়, সাধারণ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের সময়েও এমন বহু টুকরো তৈরি হয়। পৃথিবীর আশপাশে এমন বহু টুকরোই ছড়িয়ে আছে। মাধ্যাকর্ষণের ফলে এই টুকরোগুলোও উপগ্রহের মতো পৃথিবীর পাশে কক্ষে ঘোরে। স্যাটেলাইট বা মহাকাশ যানের উৎক্ষেপণের সময় এমন টুকরো থেকে দুর্ঘটনারও সম্ভাবনা থাকে। তাই বিশ্বের বহু দেশই এই ধরনের আবর্জনা সাফ করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে আছে ভারতও।
ইসরো সহকারী বিজ্ঞান সচিব, বিবেক সিং অবশ্য জানাচ্ছেন, এর জন্য যথেষ্ট সতর্কতা নেয় ইসরো। মহাকাশের এমন জঞ্জালের পথ চিহ্নিত করতে শ্রীহরিকোটায় বিশেষ রেডার বসানো আছে। এমন কী এর জন্য মার্কিন সেনাবাহিনী বা অন্য সংস্থার দেওয়া তথ্যের সাহায্যও নেয় ইসরো। ওই ধরনের আবর্জনার সঙ্গে সংঘর্ষ এড়াতে কখনও কখনও উৎক্ষেপণ কয়েক মিনিটের জন্য পিছিয়েও দেওয়া হয়। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, ‘মিশন শক্তি’-র পরেও এই জন্য বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে ইসরো।
দেখুন ভিডিও:
The post শত্রুর রাডার খুঁজতে ‘এমিস্যাট’ উপগ্রহ মহাকাশে পাঠাল ভারত appeared first on Sangbad Pratidin.