সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফ্রান্স ও ব্রিটেনের পর এবার ইটালি। ইউরোপ জুড়ে বইছে রাজনৈতিক অস্থিরতার হাওয়া। এবার ‘ফাইভ স্টার’ বিদ্রোহের জেরে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন ইটালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। তবে ‘সুপার মারিও’র পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি প্রেসিডেন্ট সের্জিও মাত্তারেল্লা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ইটালিতে জোট সরকার চালাচ্ছেন মারিও দ্রাঘি। ওই জোটের শরিক ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জুসেপে কন্টের দল ‘ফাইভ স্টার মুভমেন্ট’। কিন্তু করোনা পরবর্তী সময়ে দ্রাঘির একটি প্রস্তাবিত আর্থিক প্যাকেজ নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়ে পড়ে ফাইভ স্টার। তারপরই বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটে সরকার থেকে সমর্থন তুলে নেয় তারা। সেদিন সন্ধ্যায় দ্রাঘি জানান, তাঁর জোট সরকার আস্থা হারিয়েছে। তাই তিনি পদত্যাগ করতে চান। সেই মতো রাতে প্রেসিডেন্টের কাছে তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। এর পরেই প্রেসিডেন্ট সের্জিও জানিয়ে দেন, সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করছেন না। প্রেসিডেন্টের অফিস থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা হয়নি। তাঁকে সংসদে আসার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অবশ্য এর আগে প্রধানমন্ত্রী সেনেটের আস্থা ভোটে জয়ী হয়েছিলেন।
[আরও পড়ুন: মোদিকে চিঠি লেখাই কাল? এয়ার ইন্ডিয়া বিমান হামলার অভিযুক্তের খুন ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্য]
করোনা আবহে ২০২১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি মারিও দ্রাঘির সরকার যখন ক্ষমতায় আসে, তখন ইটালির আমজনতা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। কারণ, ‘সুপার মারিও’ হিসেবে পরিচিত দ্রাঘি ছিলেন ব্যাংক অফ ইটালির গভর্নর এবং ২০১১ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত সেন্ট্রাল ব্যাংক অফ ইউরোপের প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। তার ক্ষমতা ও কর্ম দক্ষতার কথা মানুষের মুখে মুখে ফেরে। সম্প্রতি মহামারীতে বিধ্বস্ত সাধারণ মানুষের মদতে এবং ধুঁকতে থাক ব্যবসাগুলিকে বাঁচাতে প্রায় ১৯.৫ বিলিয়ন পাউন্ডের একটি আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করতে চাইছেন দ্রাঘি। কিন্তু শরিকদল ফাইভ স্টারের দাবি, দৈনন্দিন খরচ চালাতে হিমশিম খাচ্ছে জনতা। ‘কস্ট অফ লিভিং’ বাড়ছে। সেই ইস্যুগুলি সমাধান না করে সরকার ‘অবাস্তব’ প্যাকেজ নিয়ে মাতামাতি করছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই ব্রিটেনে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেয়। দলীয় সাংসদদের রোষের মুখে পড়েই প্রধানমন্ত্রী পদ ছাড়তে বাধ্য হন বরিস জনসন। এর আগে ফ্রান্সের রাজনীতিতেও উত্তাল ঢেউ দেখা যায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারান প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এবার সেই তালিকায় নাম জুড়েছে ইটালিরও।