shono
Advertisement

Breaking News

মুকুলের প্রত্যাবর্তন ২০২৪-এ তৃণমূলের পথ আরও সুগম করল?

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলে আগের মতোই কাজ করবেন মুকুল। 
Posted: 04:51 PM Jun 11, 2021Updated: 05:09 PM Jun 11, 2021

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এ যেন ঘরের ছেলের ঘরে ফেরা। ২০১৭ সালের অক্টোবরে গেরুয়া শিবিরে নাম লেখান একদা তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড। ২০২১ সালের জুনে আবার প্রত্যাবর্তন। মাঝখানের এই সাড়ে তিন বছর মুকুল রায় (Mukul Roy) খুব একটা স্বস্তিতে ছিলেন না বিজেপিতে। দল যে তাঁকে ‘যোগ্য সম্মান’ দিয়েছে, এমনটাও বলা যায় না। আবার মুকুলের অনুপস্থিতিতে উনিশের লোকসভায় তৃণমূলকেও বড়সড় ধাক্কা খেতে হয়েছে। অর্থাৎ, এই ‘বিচ্ছেদ’ কারও জন্যই তেমন সুখের হয়নি। অবশেষে বৈরিতা ভুলে ঘাসফুলে ফিরে এলেন মুকুল রায়। তৃণমূলও অতীতের সব তিক্ততা ভুলে ‘ঘরের ছেলে’কে ফিরিয়ে নিল। এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, মুকুলকে ছাড়াই তো একুশের লড়াইয়ে দুর্দান্ত ফল করল শাসকদল। তাহলে তথাকথিত ‘গদ্দার’কে ফেরানো কেন? আসলে, এর পিছনে রয়েছে ঘাসফুল শিবিরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা।

Advertisement

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে (BJP) ওজনদার নেতাদের যাওয়া শুরু হয়েছিল মুকুল রায়কে দিয়েই। তারপর একে একে অর্জুন সিং (Arjun Singh) থেকে শুরু করে শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari), রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়রা গিয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। আসলে মুকুলের বিজেপি যোগের পর বঙ্গ রাজনীতিতে একটা আবহ তৈরি হয়েছিল, যে তৃণমূলের ভাঙন আসন্ন। গেরুয়া শিবিরের সমর্থকরা স্বপ্নও দেখতে শুরু করেন তিলে তিলে মুকুলই তৃণমূলকে শেষ করে দেবেন। একুশের ভোটের পর ঠিক পালটা একটা পারসেপশন অর্থাৎ আবহ তৈরি করতে চাইছে তৃণমূল (TMC)। রাজ্যের শাসকদল এবার বার্তা দিতে চাইছে, বিজেপি ভাঙনের মুখে। এবং মুকুলের হাত ধরে একে একে নেতারা গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুলে নাম লেখাবেন। আর এই সবটাই চব্বিশের লোকসভার কথা মাথায় রেখে।

[আরও পড়ুন: আজই তৃণমূলে ‘ঘর ওয়াপসি’ মুকুল-শুভ্রাংশুর? বিকেলের বৈঠক ঘিরে জল্পনা তুঙ্গে]

মুকুল রায় যে দক্ষ সংগঠক, একথা তাঁর অতি বড় শত্রুও স্বীকার করেন। অনেকে তাঁকে রাজ্য রাজনীতির ‘চাণক্য’ও বলেন। উনিশের লোকসভায় বিজেপির (BJP) সাফল্য এবং তৃণমূলের ধাক্কার নেপথ্যের আসল কারিগরই ছিলেন দেশের প্রাক্তন রেলমন্ত্রী। মূলত, মুকুলের ভোট মেশিনারিতে ভর করেই গেরুয়া শিবির রাজ্য থেকে ১৮ জনকে সংসদে পাঠাতে পেরেছিল। তৃণমূল চাইছে বিজেপির থেকে সেই ভোট মেশিনারি ছিনিয়ে নিতে। ঘাসফুলের নিজস্ব সংগঠনের সঙ্গে মুকুলের মেশিনারি যোগ হলে, তৃণমূল যে অনেক বেশি শক্তিশালী হবে তাতে সন্দেহ নেই। মুকুলকে স্বাগত জানিয়ে মমতাও তেমনটাই দাবি করলেন। তৃণমূলনেত্রী বললেন, “আমাদের দল আগেই শক্তিশালী ছিল। আমরা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছি। তবে, আমি মনে করি মুকুল এখানে এল, ও একটু শান্তি পাবে।” মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিয়েছেন, তৃণমূলে আগের মতোই কাজ করবেন মুকুল। 

[আরও পড়ুন: মুকুলের প্রত্যাবর্তন হলে তৃণমূলে ফিরতে পারেন সব্যসাচী-রাজীবও! তুঙ্গে জল্পনা]

তৃণমূল কংগ্রেসের লক্ষ্য, ২৪-এ দিল্লি জয়। আর সর্বভারতীয় রাজনীতিতে মুকুলের থেকে বেশি অভিজ্ঞ তৃণমূলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ছাড়া আর কেউ নেই। স্বাভাবিকভাবেই চব্বিশের লড়াইয়ে মুকুলের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চাইবে রাজ্যের শাসকদল। একুশের লড়াইয়ে বড় জয় মানেই চব্বিশের লড়াইয়ে তৃণমূল ওয়াক-ওভার পেয়ে যাবে, এই ধারণা ঠিক নাও হতে পারে। কারণ, চব্বিশের লোকসভার লড়াইটা হবে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) সামনে রেখে। রণকৌশল তৈরির দায়িত্ব পুরোপুরি থাকবে অমিত শাহর (Amit Shah) কাছে। তাছাড়া তৃণমূল শিবিরে প্রশান্ত কিশোরের (PK) মস্তিস্কও থাকবে কিনা, নিশ্চিত নয়। এই পরিস্থিতিতে মুকুলের মতো ক্ষুরধার রাজনীতিবিদ প্রয়োজন ছিল তৃণমূলের। অন্তত এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement