সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কৃষ্ণনগরের জগদ্ধাত্রীপুজো বললেই উঠে আসে বুড়িমার নাম। থিমের চাকচিক্যের বাজারে ঐতিহ্য ধরে রেখেছে এই পুজো কমিটি। কৃষ্ণনগরের সবচেয়ে পুরনো বারোয়ারি পুজো ধরা হয় চাষাপাড়ার পুজোকেই। যা বুড়িমা নামে খ্যাত। কথিত আছে, মায়ের কাছে মানত করলে তিনি খালি হাতে ফেরান না।
কীভাবে শুরু এই পুজো, কত বছরের পুজো?
বুড়িমা নামে খ্যাত এই পুজো করে চাষাপাড়া সর্বজনীন পুজো কমিটি। ২৫২ বছরের এই পুজো শুরু হয় রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে। তবে এই পুজোকে ঘিরে দুটি কাহিনি শোনা যায়। একটি মতে, রাজবাড়ির পাঁচিল টপকে জগদ্ধাত্রীপুজোকে সর্বজনীন করে তোলার চেষ্টা করেছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। সেই মতো চাষাপাড়ায় লেঠেলদের পুজো শুরু করার অনুমতি দেন রাজা। অন্য একটি কাহিনি অনুযায়ী, রাজবাড়ির অতিরিক্ত খরচ নিয়ে দুশ্চিতা গ্রাস করে রাজাকে। তখন দেবীর স্বপ্নাদেশের পর লেঠেলদের পুজো করার অনুমতি দেন রাজা। একই সঙ্গে চলতে থাকে রাজবাড়ির পুজোও। বুড়িমার পুজো শুরুর ইতিহাস যাই হোক না কেন, শুরু থেকেই লোকমুখে তা জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এই পুজো প্রথমে চাষাপাড়ার পুজো নামেই পরিচিত ছিল। প্রায় ৮০-৯০ বছর আগে বুড়িমার পুজো নামে খ্যাত হয়।
মায়ের সাজ
বুড়িমার সাজে রয়েছে সোনারবাহার। প্রায় ১০কেজি সোনা দিয়ে সাজানো হয় দেবীকে। মাথায় থাকে সোনার মুকুট। কপাল ভরে যায় বিভিন্ন আকারের সোনার টিপে। গলায় থাকে চেন। সোনার বালাতে সাজে মায়ের হাত। পায়ে থাকে নুপুর। সেটিও সোনার। বাদ যায় না দেবীর বাহন সিংহও। তার মাথায় থাকে সোনার মুকুট। আজ শনিবার রাতে মাকে সোনার অলংকারে সাজানো হবে।
মায়ের ভোগ
প্রতিবার প্রায় লক্ষাধিক ভক্তকে দেওয়া হয় মায়ের ভোগ। পুজোর কয়েকদিন আগে থেকেই কুপন কাটা শুরু হয়েছে। মায়ের পুজোর পর সেই ভোগ তুলে দেওয়া হবে ভক্তদের হাতে।
ইতিমধ্যেই পুজোকে কেন্দ্র করে আলোর মালায় সেজে উঠছে মন্দির চত্বর। শনিবার থেকে শুরু হয়েছে অগ্রিম পুজো নেওয়া। যাঁরা মায়ের কাছে মানতের পুজো দিতে চান, তাঁদের জন্য এই ব্যবস্থা। অনেকেই দেবীকে সোনার টিপ-সহ অন্যান্য অলংকার অর্পণ করেন। পুজোয় বিশৃঙ্খলা এড়াতে মোতায়েন রয়েছে পুলিশও। সোমবার সব ঠাকুর বিসর্জনের পর রাজবাড়ি ঘুরে ভক্তদের কাঁধে জলঙ্গী নদীতে বিসর্জন হবে বুড়িমার।