শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: চাহিদামতো পণের টাকা দিতে না পারায় স্বামীর অত্যাচারে গর্ভস্থ সন্তানকে হারালেন গৃহবধূ। মর্মান্তিক ঘটনায় স্তম্ভিত জলপাইগুড়ির (Jalpaiguri) ময়নাগুড়ি। মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর স্বামীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
দু’বছর আগে ময়নাগুড়ি উত্তর খাগড়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা পম্পা রায়ের সঙ্গে ময়নাগুড়ি পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের আশিস রায়ের বিয়ে হয়। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে পম্পা রায়ের উপর নির্মম অত্যাচার চালাত তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজন। শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারে বছরখানেক আগে পম্পা দেবীর একটি সন্তান গর্ভেই নষ্ট হয়ে যায়।
[আরও পড়ুন: বাংলার রাজ্যপাল পদে শপথ নিলেন লা গণেশন, হাজির মুখ্যমন্ত্রীও]
তা সত্ত্বেও স্বামীর সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত থেকে একচুলও নড়েননি বধূ। সব কিছু সহ্য করে সংসার করছিলেন তিনি। আবারও অন্তঃসত্ত্বা হন। অভিযোগ, দিনকয়েক আগে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন ফের বেধড়ক মারধর করে তাঁকে। ফলে গর্ভের দ্বিতীয় সন্তানটিও নষ্ট হয়ে যায়। সোমবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পান তিনি। শারীরিকভাবে এখনও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি তিনি। পরপর দু’বার গর্ভস্থ সন্তানকে হারিয়ে মানসিকভাবেও ভেঙে পড়েছেন বধূ।
পম্পার অভিযোগ, “পণ দিতে না পারায় নির্মম অত্যাচার করত স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এই নিয়ে দু’বার মারধর করে গর্ভস্থ সন্তানকে নষ্ট করে দিয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে পালিয়ে পিসির বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলাম। সেখান বাপের বাড়ির লোকেরা আসেন। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসা করায়।” হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই ময়নাগুড়ি থানায় যান পম্পা। স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে ময়নাগুড়ি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পম্পার স্বামী আশিস। ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাস বলেন, “লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালাই। আশিস রায়কে গ্রেপ্তার করেছি। মঙ্গলবার তাকে জলপাইগুড়ি আদালতে তোলা হবে। অন্যান্য অভিযুক্তরা পলাতক রয়েছে। তাদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”