শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: ডুয়ার্সের মাল নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় হড়পা বান। প্রাণ গিয়েছে অন্তত ৮জনের। আর কেউ নিখোঁজ নেই বলেই দাবি প্রশাসনের। যদিও বৃহস্পতিবার সকালেও জারি উদ্ধারকাজ। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের মুখে প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিরা। তবে গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করলেন জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার। তাঁর দাবি, যথেষ্ট সতর্কতামূলক ব্যবস্থা ছিল। তা সত্ত্বেও আটজনের প্রাণহানি নিছক দুর্ঘটনা ছাড়া আর কিছুই নয়।
দীর্ঘদিন ধরে মালবাজারের মাল নদীতে প্রতিমা নিরঞ্জন হয়। গত ২০ বছরে এমন কোনও দুর্ঘটনা ঘটেনি। তবে চলতি বছরের প্রতিমা বিসর্জনেই ঘটল বিপর্যয়। সিভিল ডিফেন্সের কর্মীদের দাবি, তেমন কোনও সতর্কতামূলক ব্যবস্থাপনা ছিল না। এমনকী উদ্ধারের জন্য দড়ি ছাড়া আর কিছুই নেই। এমনকী অ্যাম্বুল্যান্সের বন্দোবস্তও ছিল না। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত যদিও সে অভিযোগ খারিজ করেন। তিনি বলেন, "বহু বছর ধরে বিসর্জন হচ্ছে। ২০ বছরে কোনও দুর্ঘটনার ইতিহাস নেই। যথোপযুক্ত ব্যবস্থাপনা ছিল। সিভিল ডিফেন্সের অনেকেই ছিলেন। মেডিক্যাল টিম ছিল। ভাসান শুরুর সময় হাঁটুজল ছিল। পূর্বাভাস ছাড়া আচমকাই হড়পা বান আসে। সেই সময় নিরঞ্জন ঘাটে এক হাজারের মতো লোক ছিল। ভেসে যাচ্ছিলেন ২৭-২৮ জন। তাঁদের মধ্যে আটজনের মৃত্যু হয়েছে।" তবে বর্তমানে আর কেউই নিখোঁজ নন বলেই জানান তিনি।
[আরও পড়ুন: শিয়ালদহ ফ্লাইওভারে পরপর ছয় পথচারীকে ধাক্কা বেপরোয়া বাসের, প্রাণ গেল ৩ জনের]
দশমীতে মাল নদীতে কমপক্ষ ৬০-৭০টি প্রতিমা বিসর্জনের কথা ছিল। সে কারণে আগে থেকে বোল্ডারের সাহায্যে নদীর অভিমুখ বদল করাও হয়েছিল। তার ফলে এমন বিপত্তি কিনা, সে বিষয়ে অবশ্য মুখ খুলতে চাননি পুলিশ সুপার। তবে হড়পা বানে প্রাণহানির ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় নিরাপত্তা আরও বাড়ানো হচ্ছে। এবার আর নদীতে নেমে প্রতিমা নিরঞ্জন করা যাবে না। কাজে লাগানো হচ্ছে ক্রেন।
উমা বিদায়ের পর স্বাভাবিকভাবেই মনখারাপ উৎসবপ্রেমীদের। হড়পা বানে প্রাণহানির ঘটনায় বিষাদ যেন আরও বেশি করে ঘিরে ধরেছে মালবাজারের বাসিন্দাদের। চোখের জল বাঁধ মানছে না স্বজনহারাদের। জখমরা তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক, একটাই প্রার্থনা সকলের।