শান্তনু কর, জলপাইগুড়ি: বিধানসভা নির্বাচনের (Assembly Election 2021) আগে শাসকদল তৃণমূলের অন্দরের ফাটল যেন ক্রমশ চওড়া হচ্ছে। দলে ক্রমশই ভিড় বাড়ছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিরোধীদের পাশাপাশি এমনই অভিযোগে সরব দলীয় নেতা-কর্মীরাও। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটল জলপাইগুড়ি। আর এই ঘটনাকেই এখন ঢাল হিসাবে ব্যবহার করতে চাইছে বিরোধীরা।
বুধবার ছিল তৃণমূলের (TMC) জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির বৈঠক। জেলা সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর এটাই ছিল কৃষ্ণকুমার কল্যাণীর ডাকা প্রথম বৈঠক। জেলা কমিটির বৈঠক থাকলেও বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা মোহন বসুকে ডাকা হয়নি বলে অভিযোগ। তাই বৈঠকে বর্ষীয়ান নেতার দেখা মেলেনি। মোহন বসুর মতোই বৈঠকে ডাক পাননি জলপাইগুড়ি জেলা মহিলা তৃণমূলের প্রাক্তন সভানেত্রী তথা রাজ্য সহ সাধারণ সম্পাদিকা সাগরিকা সেন। তবে আমন্ত্রণ ছাড়াই বৈঠকে হাজির হন তিনি। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে যান। কান্নায় ভেঙে পড়েন সাগরিকা। জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কার্যালয়ের বাইরে এই ঘটনায় অবাক পথচারী-সহ উপস্থিত সকলেই।
[আরও পড়ুন: ‘সারাবছর লুঠপাট করে ভগবানকে ঘুষ দিলে হবে?’, মহাযজ্ঞ নিয়ে অনুব্রতকে খোঁচা দিলীপের]
দলীয় কার্যালয় ছেড়ে বেরনোর সময় নিজেকে সামলে জেলা সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন সাগরিকা সেন (Sagarika Sen)। অভিযোগ, তিনি দলের পুরনো সৈনিক হলেও তাঁকে কোনও বৈঠকে ডাকা হয় না। সে কারণে দুঃখ হয় তাঁর। তাই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন বলেও জানান সাগরিকা। এই ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে তৃণমূল শিবির। জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী বলেন, “জেলা কমিটির বৈঠক ছিল। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে বসে যাওয়া কর্মীদের তালিকা তৈরি করে প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে দলের কাজে পুনরায় তাঁদের যুক্ত করা হবে।”
মোহন বসু কেন অনুপস্থিত এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাঁকে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। তিনি অসুস্থ।” তবে এর বেশি কিছু তিনি জানেন না বলে এড়িয়ে যান বিষয়টি। সাগরিকা সেনের অভিযোগের প্রসঙ্গেও মুখ খোলেন জেলা সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী। তিনি বলেন, “উনি এখন রাজ্য কমিটিতে রয়েছেন। দল তাঁকে রাজ্য কমিটিতে রেখেছে। তিনি চাইলেই তাঁকে আমরা জেলা কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারি না। দলের নিয়মশৃঙ্খলা সবাইকে মানতে হবে।” দলের অন্দরের ক্ষোভ বিক্ষোভ মেটাতে দিনকয়েক আগেই উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। তাঁর সফরেও কী ক্ষোভ প্রশমিত হয়নি, এই ঘটনার পর প্রশ্নটা উঠছেই।