shono
Advertisement

অভিনয়ে ফুল মার্কস পেল কৌশিকের ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, আলাদা করে নজর কাড়লেন সুদীপ্তা

অভিনয়ের গুণে ঋত্বিক ও প্রসেনজিৎ এখানেও উজ্জ্বল। The post অভিনয়ে ফুল মার্কস পেল কৌশিকের ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, আলাদা করে নজর কাড়লেন সুদীপ্তা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 05:10 PM Apr 27, 2019Updated: 05:21 PM Apr 27, 2019

চারুবাক: তিনজন অভিনেতা। প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়, ঋত্বিক চক্রবর্তী আর সুদীপ্তা চক্রবর্তী। এঁরা তিনজনই প্রয়াত ঋতুপর্ণ ঘোষের ‘অন্য নায়ক’ গল্পটির চিত্রনাট্যকে চার কাঁধ দিয়েছেন। একা সুদীপ্তার কাঁধেই ছিল দু’টো পায়া। মানসিক ভারসাম্যের রোগী হিসেবে প্রথম শট থেকেই সুদীপ্তা ‘তৈরি’। অসময়ে স্বামী হারানোর বেদনা ও কষ্টের কোনও আর্তনাদ নেই। অথচ কী গভীর অসহায়তায় ভাইয়ের বাড়িতে একপ্রকার বন্দিনী সে। তাঁর স্থির অস্থির দৃষ্টি, অতলান্ত সমস্ত মনোভাব ‘মেজদির’ মানসিক অবস্থায় ও পারিবারিক অবস্থানকে দর্শকের মনে বিঁধিয়ে দেয়।

Advertisement

ছবির প্রধান চরিত্র অবশ্য দু’ভাই ইন্দ্রজিৎ ও পার্থ। একজন মাঝারি মানের অভিনেতা হয়েও এক্স ফ্যাক্টরের কারণে সুপারস্টার। গ্রামের বাড়ি ছেড়ে টিনসেল জগতে। ছোটভাই পার্থ ভাল অভিনেতা হয়েও গ্রামে বসে নাট্যচর্চা আর সংসার যাপনে ব্যস্ত। যে সংসারে বৃদ্ধ আদর্শবাদী কমিউনিস্ট (সিপিএম নয়) বাবা ছিলেন। আর আছে দুই বোন, কাজের মানুষ মকাই আর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী। ব্যর্থ ও সফল দুই ভাইয়ের মধ্যে অভিমান, ক্ষোভ, সংঘাত যেমন রয়েছে, তেমনই ফল্গুধারার মতো ভালবাসাও রয়েছে। এঁরা দু’জন দীর্ঘ সময়ের ব্যবধানে গাঁয়ের বাড়িতে মুখোমুখি বাবার অকস্মাৎ মৃত্যু ঘটায়।

পরিচালক কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় এই দু’টি মানুষের কিংবা ভাইয়েরও বলতে পারি, ব্যক্তিত্বের সংঘাতকেই ফোকাস করেছেন চিত্রনাট্যে। বাবার শেষকৃত্যে সুপারস্টার দাদার পুলিশ-গাড়ির কনভয় নিয়ে হাজির হওয়াটা যত না অপছন্দের, তার চাইতেও অসহনীয় বিরক্তি ও অস্বস্তিকর লেগেছে গ্রাম ঝেঁটিয়ে আসা ফ্যানেদের সামনে নিজের তারকা ‘ইমেজ’-কে তুলে ধরার প্রয়াস। মৃত বাবার জন্য শোকপ্রকাশ কোথায়! সবটাই যেন মেকি দেখনদারি। যে জন্য একটা সময় পার্থ সত্যিকারের ‘উত্তেজিত’ হয়ে সব্বাইকে প্রায় তাড়িয়ে দেয়। আর একান্তে দু-দু’বার দাদাকে পেয়ে এতদিনের জমানো ক্ষোভ উগরে দিতে দ্বিধাও করে না। দাদাকে বুঝিয়ে দেয় মোটেই সে বাবার প্রকৃত ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ হয়ে উঠতে পারেনি। তাই পারলৌকিক কাজ ছোট ভাই-ই করবে ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’ হয়ে। নীরবে মাথা নিচু করে ইন্দ্রনাথ সেটা জেনে নিয়ে গাঁয়ের বাড়ি ছেড়ে গিয়েছে আগেই।

[ আরও পড়ুন: প্রেম-প্রতিহিংসার মিশেলে জমজমাট ‘কলঙ্ক’, আলিয়া-বরুণকে ছাপিয়ে গেলেন কুণাল ]

প্রসেনজিৎ সুপারস্টার। স্ব-ইমেজের জালে আবৃত। ভদ্রতার মুখোশ তাঁকে প্রায় সারাক্ষণই লাগিয়ে রাখতে হয়। বুক ফাটিয়ে শোক প্রকাশও যেমন করতে পারে না। তেমনি পারে না ভাইয়ের সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হতে। প্রসেনজিতের অভিনয় এই ছবিতে অনেকটাই নির্বাক, অভিব্যক্তি নির্ভর। এবং অবশ্যই সেই নির্বাক অভিব্যক্তিতেই প্রকাশ করেছেন তাঁর অসহায় অথচ অব্যক্ত যন্ত্রণাকে। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ছোটভাই হয়ে ঋত্বিকের ঝাঁজালো আক্রমণও প্রসেনজিৎকে ‘নীরব’ থাকতে সাহায্য করেছে এটাও মানতে হূবে।

সম্প্রতি একের পর এক ছবিতে ঋত্বিক দেখিয়ে যাচ্ছেন তাঁর অভিনয়ের ফ্লাইং কালার্স। ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’-ও জানিয়ে দিল বাস্তব নেগেটিভ চরিত্র পেলেও তিনি ক্যামেরার সামনে কত ব্যপ্ত হয়ে উঠতে পারেন। দাদার প্রতি রাগ-দুঃখ-অভিমান-ক্ষোভের তলায় যে মানবিক মনটি শুকনো হয়ে যায়নি, দাদাকে জড়িয়ে ধরার দৃশ্যে তা স্পষ্ট। পার্শ্ব চরিত্র হিসেবে পুরনো বান্ধবী গার্গী, উৎসাহী ফ্যান বেনি বা বৃদ্ধ কাজের মানুষ প্রদীপ দাশগুপ্তের অভিনয় অবশ্যই চোখে পড়ে। তবে গার্গী চরিত্রটির আরও একটু জায়গা পাওয়া উচিত ছিল। শীর্ষ রায়ের ক্যামেরা, প্রবুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়ের আবহ শুধু ভাল নয়, বেশ ভাল।

এর পরও একটা মৃদু অনুযোগ ইন্দ্রজিৎ যতবড়ই ‘সুপারস্টার’ হোন না কেন, গ্রামের বাড়িতে তাঁকে নিয়ে এমন অশোভন উদ্দীপনার সৃজন ভাল লাগেনি। বিশেষ করে সবাই যখন জানে বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে শোকার্ত এক পুত্র সেখানে এসেছে। ভক্তকূল এতটাই অশোভন অমানবিক আচরণ করে কি?

[ আরও পড়ুন: জমাটি থ্রিলার হিসেবে দর্শকদের মন কাড়ল সৃজিতের ‘ভিঞ্চিদা’? ]

The post অভিনয়ে ফুল মার্কস পেল কৌশিকের ‘জ্যেষ্ঠপুত্র’, আলাদা করে নজর কাড়লেন সুদীপ্তা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement