সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ঝালদা (Jhalda)পুরসভা নিয়ে ফের নতুন জট। সেখানকার তিন কংগ্রেস ও ২ নির্দল কাউন্সিলরকে কলকাতায় এনে জোর করে দলবদল করানোর অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের (TMC) বিরুদ্ধে। এঁদের মধ্যে শীলা চট্টোপাধ্যায় নির্দলের হয়ে ভোটে জেতেন। কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে পুরপ্রধানের দায়িত্ব নেন। শীলাদেবীকে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়েছে বলে খবর। তাঁর সঙ্গে রঞ্জন কর্মকার নামে কাউন্সিলরও কলকাতায়। এই খবর পেয়েই পরিস্থিতি সামলাতে আসরে নামেন কংগ্রেসের বর্ষীয়ান নেতা নেপাল মাহাতো। যুব নেতা কৌস্তভ বাগচিকে নিয়ে সল্টলেকের যে জায়গায় কাউন্সিলরদের রাখা হয়েছে, সেখানে তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান তিনি।
পুরুলিয়ার এই পুরসভায় বোর্ড গঠন নিয়ে গোড়া থেকেই জটিলতা। নির্দল প্রার্থীদের সমর্থন নিয়ে কংগ্রেস (Congress) বোর্ড গঠনের মতো সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও আইনি সমস্যা রয়েছে, এই অভিযোগে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয় তৃণমূল। দীর্ঘ মামলার পর কংগ্রেস পুরবোর্ড গঠন করে। দু’বার পুরপ্রধান বদলও হন। শীলা চট্টোপাধ্যায় নির্দলের হয়ে জিতে পরে কংগ্রেসে সমর্থন নিয়ে তিনিই পুরপ্রধান।
[আরও পড়ুন: ‘নির্যাতিতা’ মহিলাদের বিরুদ্ধেই মামলা! প্রতিবাদে টানা ২৪ ঘণ্টা মালদহে অবরোধ বিজেপির]
তবে রবিবার আচমকাই ঝালদা পুরসভার ৫ কাউন্সিলরকে কলকাতায় (Kolkata) নিয়ে আসা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। তাঁদের সল্টলেকের কোনও এক আবাসনে রাখা হয়েছে বলে সূত্র মারফত জানতে পারে কংগ্রেস নেতৃত্ব। আর তারপরই জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো ও যুব নেতা কৌস্তভ বাগচি তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে যান। কৌস্তভের অভিযোগ, কংগ্রেসের বোর্ড ভাঙতে চাইছে তৃণমূল। তাই কংগ্রেস ও নির্দলকে নিজেদের দলে টানার চেষ্টা করছে। তাঁদের উপর দলবদলের জন্য চাপ আসছে। বাঘমুন্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাতোর সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগে ছিল। তবে কংগ্রেস নেতা নেপাল মাহাতো তিন কংগ্রেস কাউন্সিলরের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শীলা চট্টোপাধ্যায় ও রঞ্জন কর্মকারের সঙ্গেও কথা বলা হয়েছে। তাঁরা সোমবার সকালেই ফিরে যাবেন বলে জানিয়েছেন।
পরে নেপাল মাহাতো বলেন, ”আমরা তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। এখানে তাঁরা ভাল আছেন, আমাদের সঙ্গেই আছেন। ওঁদের ভুল বোঝানো হচ্ছিল। আমরা এসে ওঁদের বোঝাতে পেরেছে, ওঁরাও বুঝেছেন। বিষয় হচ্ছে, ঝালদা পুরসভা বিরোধী পুরসভা। এই পুরসভা নিয়ে শাসকদল যা করছে, তা যদি অবিলম্বে বন্ধ না করে আমরা আদালতে যাব। এখানে কাউন্সিলরদের কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে। টাকা দেওয়া হচ্ছে না। এভাবে প্রমাণ করার চেষ্টা হচ্ছে যে বিরোধী পুরসভা কোনও কাজ করতে পারে না। শাসকদলে যোগ দিয়ে কাজ করুক। এসব বন্ধ না করলে আমরা বাধ্য হব আদালতে যেতে।” কলকাতায় আসা কাউন্সিলর রঞ্জন কর্মকার অবশ্য বলছেন, ”আমি ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় এসেছি। নেপালবাবু ভেবেছেন, আমি তৃণমূলে যোগ দেব। তাই বোঝাতে এসেছিলেন। তৃণমূলের কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। আমিও কারও সঙ্গে কথা বলিনি। তবে দলের মধ্যে একটু মনোমালিন্য হচ্ছিল। এখন ঠিক আছে।”
[আরও পড়ুন: ‘বাংলার হিংসা দিয়ে মণিপুরকে আড়াল করা যাবে না’, মমতার পাশে দাঁড়িয়ে বিজেপিকে তোপ চিদম্বরমের]
এদিকে, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তনু সেনের বক্তব্য, ”নির্দল প্রার্থীদের দলে টানতে তৃণমূল তাঁদের কলকাতায় নিয়ে এসেছে, এই অভিযোগ ভিত্তিহীন। কংগ্রেসই যদি তাঁদের পাশে থেকেও ভরসা না দিতে পারে, সেটা কি তৃণমূলের দোষ? ”